ফেইসবুক অ্যাকাউন্ট ফিরে পেলেন তসলিমা

নির্বাসিত বাংলাদেশি লেখক তসলিমা নাসরিনের অ্যাকাউন্ট দুই দিন বন্ধ রাখার পর আবার খুলে দিয়েছে ফেইসবুক কর্তৃপক্ষ।

নয়া দিল্লি প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 April 2015, 08:01 AM
Updated : 16 April 2015, 09:37 AM

‘ইসলামী মৌলবাদীদের চাপে’ ফেইসবুক কর্তৃপক্ষ ওই পদক্ষেপ নিয়েছিল বলে তসলিমার অভিযোগ, যিনি মৌলবাদীদের হুমকিতে ১৯৯৪ সালে দেশত্যাগে বাধ্য হন।

বর্তমানে ভারতে অবস্থানরত তসলিমা গত ১৩ এপ্রিল রাতে এক টুইটে ফেইসবুক কর্তৃপক্ষের ওই পদক্ষেপের বিষয়টি জানান। এরপর বুধবার রাতে আরেক টুইটে তিনি অ্যাকাউন্ট ফিরে পাওয়ার খবর দেন।

মঙ্গলবারের টুইটে তিনি লেখেন, “যখনই স্টুপিড ইসলামী মৌলবাদীরা আমার কোনো পোস্ট নিয়ে অভিযোগ তোলে তখনই স্টুপিড ফেইসবুক কর্তৃপক্ষ আমার অ্যাকাউন্ট ডিসঅ্যাবল করে দেয়।”

তসলিমার নামে খোলা বেশ কয়েকটি ভুয়া অ্যাকাউন্ট সচল থাকেলেও বুধবার পর্যন্ত তার নিজের অ্যাকাউন্টটি বন্ধই রাখে ফেইসবুক কর্তৃপক্ষ। 

আইবিএন লাইভকে এই লেখক বলেন, “বার বার অনুরোধ জানানোর পরও তারা আমার অ্যাকাউন্ট খুলে দেয়নি। তারা এটা করছে ইসলামী মৌলবাদীদের শান্ত করার জন্য, যারা চায় না যে আমি আমার মতামত সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে তুলে ধরি।”

এক টুইটে তসলিমা দাবি করেন,  ফেইসবুকে তার বন্ধুর সংখ্যা ৫ হাজার, আর ফলোয়ার ৭৪ হাজারের বেশি।

এ ঘটনাকে ‘সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য’ হিসাবে উল্লেখ করে এই লেখক ভারতীয় গণমাধ্যমকে বলেন, ফেইসবুক অ্যাকাউন্ট বন্ধ হলে তার অনেক লেখা হারিয়ে যাবে। পাঠকদের সঙ্গে যোগাযোগের আর কোনো পথও তার থাকবে না।

“বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গে ঢোকায় আমার ওপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। পাঠকরা আমার লেখা পড়তে পারেন না, কারণ সেগুলোও নিষিদ্ধ।

“তাই পাঠকদের সঙ্গে যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে আমি ফেইসুবক ব্যবহার করতাম। কিন্তু এখন সে সুযোগও থাকছে না।”

ভারতীয় গণমাধ্যমে এ খবর প্রকাশিত হলে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে অনেকেই তসলিমার পাশে দাঁড়ান।

ভারতের ললিত কলা অ্যাকাডেমির সাবেক চেয়ারম্যান অশোক বাজপেয়ি, হিন্দি ভাষার লেখক মৃদুলা গার্গসহ কয়েকজন লেখক ও সংস্কৃতিকর্মী ফেইসবুকের এ ধরনের আচরণের সমালোচনা করেন বলে জি নিউজের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়।  

এরপর বুধবার রাতে আরেক টুইটে তসলিমা জানান, ফেইসবুক কর্তৃপক্ষ তার অ্যাকাউন্ট আবার খুলে দিয়েছে।

তিনি লেখেন, “সংবাদ মাধ্যম, ফেইসবুক বন্ধু আর আমার ফলোয়ারদের ধন্যবাদ; যারা আমাকে সমর্থন দিয়েছেন। হে ফেইসবুক, ফ্যানাটিকদের কথায় কান দিও না।” 

চিকিৎসক তসলিমা গত শতকের ’৯০ এর দশকে লেখালেখি শুরুর পর আলোচনায় উঠে আসেন। বাংলাদেশে হিন্দু নিপীড়ন নিয়ে উপন্যাস ‘লজ্জা’ প্রকাশের পর মৌলবাদীদের হুমকি ও ব্যাপক হৈ চৈয়ের মধ্যে ১৯৯৪ সালে দেশত্যাগে বাধ্য হন তিনি। এরপর বিভিন্ন দেশে আশ্রয় নেন এই লেখিকা।

২০০৪ সালে ভারত রেসিডেন্ট পারমিট ভিসা দেয় তসলিমাকে। পরে তা বাতিল হলেও ২০১৪ সালের শেষ দিকে এসে ফের থাকার অনুমতি দেয় ভারত।