সাঁতার শিক্ষায় লাইফ জ্যাকেট, শিক্ষকও থাকবেন

পানিতে ডুবে মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচাতে স্কুল-কলেজসহ দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের সাঁতার প্রশিক্ষণ ও অনুশীলনের ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছে সরকার।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 April 2015, 07:59 AM
Updated : 8 April 2015, 10:10 AM

শিক্ষা মন্ত্রণালয় বুধবার একটি পরিপত্র জারি করে শিক্ষার্থীদের সাঁতার অনুশীলনের জন্য জলাশয়গুলোকে স্বাস্থ্যসম্মত ও সাঁতার উপযোগী করতে বলেছে।

এর আগে গত মাসে একটি খসড়া পরিপত্র তৈরি করে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের মতামত নিতে তা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়। প্রাপ্ত মতামত পর্যালোচনার পর চূড়ান্ত পরিপত্র জারি করা হলো।

এতে বলা হয়েছে, কোনো স্কুল-কলেজে পুকুর না থাকলে পাশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পুকুর ব্যবহার করতে হবে। শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর এসব পুকুর সংস্কার করবে, কোনো সমস্যা দেখা দিলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তা সমাধান করবেন।

মহানগরীর যেসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পুকুর বা উপযুক্ত জলাশয় নেই তাদের মহানগরীর কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়, জাতীয় ক্রীড়া কমপ্লেক্স বা অন্য যে কোনো প্রতিষ্ঠানে গিয়ে শিক্ষার্থীদের সাঁতার প্রশিক্ষণ দিতে হবে।

সাঁতার প্রশিক্ষণ তদারকের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক, জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা, মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও ইউএনওদের।তারা তিন মাস পর পর মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) কাছে প্রতিবেদন দেবেন। মাউশি তিন মাস অন্তর এ বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন পাঠাবে।

আর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানকে প্রতি মাসে এ বিষয়ে মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (মহানগরীর ক্ষেত্রে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক) এবং জেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে প্রতিবেদন দিতে হবে।

প্রশিক্ষণ ও অনুশীলনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে আবশ্যিকভাবে লাইফ জ্যাকেটের ব্যবস্থা করতে হবে। পাশাপাশি দেশীয় প্রচলিত সরঞ্জাম ব্যবহার করেও শিক্ষার্থীদের সাঁতার শেখানো যাবে।

সাঁতার শেখানোর সময় শারীরিক শিক্ষার শিক্ষক অথবা প্রশিক্ষককে অবশ্যই উপস্থিত থাকতে হবে এবং ছেলে ও মেয়েদের জন্য আলাদা সময় নির্ধারণ করতে হবে।

ইউনিসেফের এক জরিপ তুলে ধরে পরিপত্রে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে পাঁচ থেকে ১৭ বছরের ছেলে-মেয়েদের মধ্যে প্রতি ২৪ ঘণ্টায় ৪৮ জন এবং বছরে ১৮ হাজারের বেশি শিশু সাঁতার না জানার কারণে ডুবে মারা যায়।

“তাই সরকার এখন থেকে দেশের সকল উচ্চ মাধ্যমিক, মাধ্যমিক ও নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়, সমমানের মাদ্রাসা, কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিয়মিত শিক্ষা কার্যক্রমের অংশ হিসেবে সাঁতার প্রশিক্ষণ ও অনুশীলনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।”

জাতীয় শিক্ষানীতি-২০১০ অনুযায়ী, ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত শারীরিক শিক্ষা এবং স্বাস্থ্য বিজ্ঞান ও খেলাধুলা পাঠ্য বিষয়ে বাধ্যতামূলক।