স্থানীয় নির্বাচনও দলীয়ভাবে চান শেখ হাসিনা

স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোর সব স্তরের নির্বাচন দলীয়ভাবে করার পক্ষে মত জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 April 2015, 01:56 PM
Updated : 1 April 2015, 02:00 PM

ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ এবং চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ডামাডোলের মধ্যে বুধবার সংসদে এক প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে এই মত প্রকাশ করেন তিনি।

বর্তমানে বাংলাদেশে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের সিটি করপোরেশন, উপজেলা, পৌরসভা, ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দলীয়ভাবে অংশ নেওয়ার সুযোগ নেই।

বিদ্যমান নির্বাচনী বিধিমালায় এসব নির্বাচনে দলীয়ভাবে প্রচার-প্রচারণা চালানো, প্রতীক কিংবা দলের নেতার নাম-ছবি ব্যবহারেও নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।

তবে এসব নির্বাচনে প্রধানত বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারাই প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আসেন এবং প্রায় সময়ই দলীয়ভাবে সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রার্থী ঠিক করা হয়ে থাকে।  

২০১৪ সালে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম ভবিষ্যতে স্থানীয় নির্বাচনও দলীয়ভাবে করার পক্ষে অবস্থান জানিয়ে আইন সংশোধনের উদ্যোগ নেওয়ার কথা বলেছিলেন।

এরপর আর কোনো উদ্যোগ দেখা না গেলেও এক বছর পর সংসদে আবার এই মত প্রকাশ করলেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা।       

তিনি বলেন, “স্থানীয় সরকার নির্বাচন নির্দলীয়ভাবে অনুষ্ঠিত হলেও হিসাব-নিকাশ হয় দলীয়ভাবে। কোন দল থেকে কতজন জিতল বা হারল, সেই হিসাব করা হয়।

“কিন্তু, দলীয়ভাবে নির্বাচন না হওয়ার কারণে তাদের কোনো দায়বদ্ধতা থাকে না। তারা কোনো অন্যায় করলে ব্যবস্থা (সাংগঠনিকভাবে) নেওয়া যায় না। কাজেই স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার জন্য জাতীয় নির্বাচনের মতো এই নির্বাচনও দলীয়ভাবে হওয়া উচিত।”

যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্রে স্থানীয় নির্বাচনও দলীয়ভাবে হওয়ার তথ্য তুলে ধরে বাংলাদেশেও সেভাবে করতে আইন সংশোধনের কথা বলেন সংসদ নেতা। 

“আমাদের আইন সংশোধন করে স্থানীয় সরকার সম্পূর্ণ দলীয় ব্যানারে যাতে হয়, সকল দল যাতে মনোনয়ন দিতে পারে, সেটা করা প্রয়োজন। আমি মনে করি, স্থানীয় সরকারের সকল স্তরে দলীয় ভিত্তিতে নির্বাচন হওয়া প্রয়োজন।”

ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ এবং চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সরকারের পক্ষ থেকে কোনো ধরনের হস্তক্ষেপের সম্ভাবনা উড়িয়ে দেন প্রধানমন্ত্রী।

“সরকার এতে কোনো হস্তক্ষেপ করবে না। কমিশন যেভাবে চাইবে নির্বাচন সেইভাবেই হবে। সরকারের কাছে তারা যে সহযোগিতা চাইবে, তা দেওয়া হবে।”

নির্দলীয় সরকারের অধীনে মধ্যবর্তী নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলনরত বিএনপির নেতাদের আসন্ন সিটি নির্বাচনে মনোনয়নপত্র দাখিল করলেও শেষ পর্যন্ত তাদের থাকা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করছেন সরকারের মন্ত্রীরা। 

সব প্রার্থীর জন্য সমান সুযোগের পরিবেশ তৈরির কথা বলে আসছেন বিএনপির নেতারা। 

এ বিষয়ে এক প্রশ্নে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বলেন, “লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড বলতে বিএনপি আসলে কী চাচ্ছে, সেটা বোধগম্য নয়। তারা নির্বাচনে আসবে কি আসবে না, সেটা নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে ভুগছে।”

তবে সিটি নির্বাচনে অংশ নিতে বিএনপির এগিয়ে আসাকে ‘ইতিবাচক সিদ্ধান্ত’ বলে মন্তব্য করেন তিনি।

“তাদের শুভ বুদ্ধির উদয় হয়েছে। তারা এই সরকারের অধীনে নির্বাচন করবে না, এটা সেটা বলে এখন সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রার্থী দিয়েছে। নির্বাচনে আসার পর এখন আবার পিছু হটার ছুতোয় লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডের সুর তুলছে।”