হার অ্যাটর্নি জেনারেলের কারণে, দাবি আ. লীগ সমর্থিত প্রার্থীর

সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাম্প্রতিক নির্বাচনে নিজের পরাজয়ের জন্য অ্যাটর্নি জেনারেলকে দায়ী করেছেন সম্পাদক পদে পরাজিত সরকার সমর্থক প্রার্থী মোমতাজ উদ্দিন আহমদ মেহেদী।

সুপ্রিম কোর্ট প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 April 2015, 10:44 AM
Updated : 1 April 2015, 12:25 PM

বুধবার সুপ্রিম কোর্টে ল রিপোর্টার্স ফোরামের কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নির্বাহী কমিটির সদস্য এই দাবি করেন।

তবে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মেহেদী স্বীকার করেন, অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমের সঙ্গে তার  ব্যক্তিগত ‘সমস্যা’ রয়েছে, ভোটের সময় তা ‘রাজনৈতিক সমস্যায়’ রূপ নিয়েছিল।

এর প্রতিক্রিয়ায় মাহবুবে আলম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এগুলো হচ্ছে হতাশা থেকে দেওয়া ভিত্তিহীন বক্তব্য।

“তার জন্য আমরা সবাই মিলে এত কাজ করলাম, অথচ এখন তার মুখে এই কথা! আমার ধারণা, অন্য কেউ তাকে দিয়ে এ সব করাচ্ছে।”

গত ১৫ ও ১৬ মার্চ অনুষ্ঠিত সুপ্রিম কোর্ট বারের সর্বশেষ নির্বাচনে দ্বিধাবিভক্ত সরকার সমর্থক আইনজীবীরা একটি প্যানেল দিলেও আবারও হারে বিএনপি সমর্থক আইনজীবীদের কাছে।

সরকার সমর্থক প্যানেল সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন সাবেক সম্পাদক মেহেদী। তিনি প্রায় ৪০০ ভোটে হারেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মাহবুবউদ্দিন খোকনের কাছে।

মেহেদী বলেন,  “অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ও বিএনপির প্রার্থী মাহবুবউদ্দিন খোকনের মিলিত ষড়যন্ত্রের কারণে  আমি ও আমার প্যানেলের অধিকাংশ প্রার্থী পরাজিত হয়।”

অ্যাটর্নি জেনারেলকে দায়ী করার কারণ ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, “সমন্বয় পরিষদের নেতৃবৃন্দ ও নির্বাচন পরিচালনা কমিটির মাধ্যমে নির্বাচন পরিচালিত হয়েছে অ্যাটর্নি জেনারেলের অফিস থেকে।

মোমতাজ উদ্দিন মেহেদী

“অন্যদিকে অ্যাটর্নি জেনারেলের সাথে প্রতিনিয়ত রাতের বেলা গোপনে শলা পরামর্শ ও গোপন বৈঠক করে আমাকে হারানো হয়েছে। অ্যাটর্নি জেনারেল সবাইকে বলেছেন, সভাপতি প্রার্থীকে ভোট দিতে, আমার বিষয়ে জানতে চাইলে বলেছেন- ‘মেহেদী তো একবার সেক্রেটারি হয়েছে’। নির্বাচনের পর তিনি বিভিন্ন জনের কাছে বলেছেন, ‘মেহেদীকে সাইজ করবে না তো কাকে সাইজ করবে’।”

আওয়ামী লীগ সমর্থিত আইনজীবী নেতাদেরকে দুই ভাগে বিভক্ত করে রাখার ক্ষেত্রেও সুপ্রিম কোর্ট বারের সাবেক সভাপতি মাহবুবে আলমের ভূমিকা রয়েছে বলে দাবি করেন দলের কেন্দ্রীয় এই নেতা।  

“অ্যাটর্নি জেনারেলের ইঙ্গিতে আওয়ামী লীগ সমর্থিত ৩০০ জন ভোটার ও আইনজীবী আমাকে ভোট না দিয়ে মাহবুবউদ্দিন খোকনকে ভোট দিয়েছে।”

বার সম্পাদক খোকনকে নিয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল অনেক যোগ্য আইনজীবীকে হাই কোর্টে কাজ করার সেোযগ দিতে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করছেন বলেও অভিযোগ মেহেদীর।

“অ্যাটর্নি জেনারেল ও মাহবুবউদ্দিন খোকনের যৌথ ষড়যন্ত্রে বার কাউন্সিল ধ্বংস হচ্ছে। অ্যাটর্নি জেনারেল আওয়ামী লীগকে ধ্বংস করেছেন। তার নীল নকশা একটাই, সুপ্রিম কোর্টে ও বার কাউন্সিলে আওয়ামী লীগকে নেতৃত্বশূন্য করা।”

মাহবুবে আলম অ্যাটর্নি জেনারেল পদে থাকলে সুপ্রিম কোর্ট বারে আওয়ামী লীগ সমর্থকরা কখনও জয়ী হতে পারবে না বলেও ভবিষ্যদ্বাণী করেন মেহেদী।

২০১২-১৩ সালে যখন মেহেদী সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছিলেন, তখন অ্যাটর্নি জেনালের দায়িত্বে মাহবুবে আলমই ছিলেন। তবে সেবারও সভাপতিসহ বেশিরভাগ পদে জয়ী হয়েছিল বিএনপি সমর্থকরা।