পররাষ্ট্র সচিব মো. শহিদুল হক বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, যুদ্ধ শুরুর আগে ইয়েমেনে দেড় থেকে তিন হাজার বাংলাদেশি ছিলেন বলে সরকারের হাতে তথ্য রয়েছে।
এই বাংলাদেশিদের মধ্যে অধিকাংশই এডেন এলাকায় রয়েছে। এখনো ইয়েমেন সরকারের নিয়ন্ত্রণে থাকা ওই এলাকা ‘তুলনামূলকভাবে নিরাপদ এলাকা’ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।
“ইয়েমেনে আমাদের কোনো মিশন নেই। কুয়েত হাই কমিশন থেকেই ইয়েমেনের দায়িত্ব দেওয়া আছে। কিন্তু দুই দেশের মধ্যে দূরত্ব অনেক বেশি।
“আমরা ইয়েমেনে আমাদের কর্মকর্তাদের পাঠানোর চেষ্টা করেছি। কিন্তু এই পরিস্থিতিতে সেখানে যাওয়ার একমাত্র উপায় হলো সমুদ্রপথ। আমরা আশা করছি, আমরা লোক পাঠাতে পারব।”
সচিব জানান, বাংলাদেশিদের ফিরিয়ে আনার জন্য বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। এছাড়া নয়া দিল্লির সঙ্গেও আলোচনা হচ্ছে। ভারত সরকার জাহাজে করে ইয়েমেন থেকে তাদের নাগরিকদের ফিরিয়ে আনতে শুরু করেছে।
“ভারত নীতিগতভাবে রাজি হয়েছে। তারা বলেছে, নিজেদের সব নাগরিককে ফিরিয়ে আনার পর এবং আটকা পড়া বাংলাদেশিরা শনাক্ত হয়ে গেলে ভারত সহযোগিতা করতে পারে।”
আমাদের নয়া দিল্লি প্রতিনিধি জানান, ভারত সরকার ইতোমধ্যে বাংলাদেশের অনুরোধ পেয়েছে বলে সে দেশের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেছেন, ‘বন্ধুরাষ্ট্র’ বাংলাদেশের সহযোগিতায় তারা সম্ভব সব কিছুই করবেন।
মধ্যপ্রাচ্যে সৌদি আরবের প্রতিবেশী দেশ ইয়েমেনে গত কয়েক মাস ধরে অস্থিরতা চলছে। সম্প্রতি সেদেশের হুতি বিদ্রোহীরা রাজধানীর নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয়।
এ অবস্থায় বিমান চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সেখান থেকে ফিরতে পারছেন না বাংলাদেশিরা। ইয়েমেনে বাংলাদেশের দূতাবাস না থাকায় তারা কোনো সহায়তাও পাচ্ছেন না।
এরইমধ্যে ইয়েমেনের রাজধানী সানায় আটকা পড়া বাংলাদেশি প্রকৌশলী গোলাম মোস্তফা ও মো. সিরাজুল হক সহায়তার আশায় বাংলাদেশে গণমাধ্যমের সঙ্গে যোগাযোগ করেন।
গত ২৯ মার্চ মোস্তফা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এখানে বাংলাদেশের কোনো দূতাবাস নেই, তাই কোনো সাহায্যও পাচ্ছি না। পাকিস্তান দূতাবাসের সঙ্গে আমি যোগাযোগ করেছিলাম, কিন্তু তারা বলছে, এই মুহূর্তে বিদেশি কোনো নাগরিককে সেবা দেওয়ার সুযোগ তাদের নেই।”
এরপর ভারতীয় দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করেও সাড়া পাননি বলে জানান মোস্তফা।
তিনি বলেন, “সৌদি আরব, কুয়েত, কাতার অনেক আগেই দূতাবাস গুটিয়ে নিয়েছে। এখন বুঝতে পারছি না, কী করব? আপাতত সানায় হোটেল শাহরানে অবস্থান করছি।”