হাসান আলীর বিরুদ্ধে যুক্তি উপস্থাপন শুরু ১৫ এপ্রিল

একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সৈয়দ মো. হাসান আলী ওরফে হাছেন আলীর বিরুদ্ধে প্রসিকিউশনের যুক্তি উপস্থাপন শুরু হচ্ছে আগামী ১৫ এপ্রিল।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 31 March 2015, 03:24 PM
Updated : 31 March 2015, 03:24 PM

পলাতক হাসেন আলীর পক্ষে কোনো সাফাই সাক্ষী না থাকায় প্রসিকিউশনের যুক্তি উপস্থাপন শুরুর দিন ধার্য করে মঙ্গলবার আদেশ দেয় বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১।

এর আগে প্রসিকিউশনের শেষ সাক্ষী ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা হরি দেবনাথকে জেরা করা শেষ করেন হাসেন আলীর পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী আব্দুস শুকুর খান। এসময় উপস্থিত ছিলেন প্রসিকিউটর আবুল কালাম আযাদ।

গতবছরের ১১ অক্টোবর একাত্তরে কিশোরগঞ্জে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় হাসান আলীর বিরুদ্ধে হত্যা, গণহত্যা, অগ্নিসংযোগ, লুট, আটক ও নির্যাতনসহ ৬টি ঘটনায় অভিযোগ গঠন করে ট্রাইব্যুনাল।

৭ ডিসেম্বর আসামির অনুপস্থিতিতেই এ মামলায় সূচনা বক্তব্য উপস্থাপন ও সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়।

এর আগে ২১ আগস্ট ট্রাইব্যুনালে পলাতক হাসান আলীর বিরুদ্ধে অভিযোগ (ফরমাল চার্জ) দাখিল করেন প্রসিকিউটর আবুল কালাম আজাদ। ২৪ আগস্ট অভিযোগ (ফরমাল চার্জ) আমলে নেয় ট্রাইব্যুনাল।

একই দিনে তাকে ট্রাইব্যুনালে হাজির হওয়ার নির্দেশ দিয়ে দুটি জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের আদেশ দেওয়া হয়। পরে তাকে ট্রাইব্যুনালে হাজির হতে বলে পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেয় প্রসিকিউশন।

১৫ সেপ্টেম্বর হাসান আলীর অনুপস্থিতিতে মামলার বিচারিক কার্যক্রম শুরুর নির্দেশ দেয় ট্রাইব্যুনাল। একইসঙ্গে রাষ্ট্রীয় খরচে তার পক্ষে আইনজীবী হিসেবে আব্দুস শুকুর খানকে নিয়োগ দেওয়া হয়।

এর আগে গত ৩ এপ্রিল তার বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনাল গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করার পর এখন পর্যন্ত তাকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি আইন শৃঙ্খলা বাহিনী।

হাসান আলীর বিরুদ্ধে হত্যা, গণহত্যা, অগ্নিসংযোগ, লুট, আটক ও নির্যাতনসহ ৬টি অভিযোগ আনা হয়েছে। ঘটনার মধ্যে ২৪ জনকে হত্যা, ১২ জনকে অপহরণ ও আটক এবং ১২৫টি ঘরে লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগ রয়েছে।

গত বছরের ৬ জুন থেকে তার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেন তদন্ত সংস্থা। গত ১৯ জুন পর্যন্ত তদন্ত কার্যক্রম শেষে তদন্ত প্রতিবেদন চূড়ান্ত করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা হরি দেবনাথ।

আনুষ্ঠানিক অভিযোগে বলা হয়, একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় কিশোরগঞ্জের তাড়াইল থানার রাজাকার কমান্ডার ছিলেন হাসান আলী। সে সময় তিনি তাড়াইল থানা এলাকায় ‘রাজাকারের দারোগা’ ও ‘রাজাকার ওসি’ নামে পরিচিত ছিলেন।

সৈয়দ হাসান আলীর বাবা সৈয়দ মুসলেহ উদ্দিন তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান ডেমোক্রেটিক পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান এবং কিশোরগঞ্জ মহকুমা শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন।

১৯৭১ সালের ২৩ এপ্রিল পাকিস্তানী বাহিনী কিশোরগঞ্জের তাড়াইল থানা সদর দখল করে তাদের ক্যাম্প স্থাপন করে। তাদের সহযোগিতা করতে থাকে হাসেন আলী। পরবর্তীতে কিশোরগঞ্জ মহকুমার তাড়াইল থানায় রাজাকার কমান্ডার হিসেবে নিয়োজিত হন তিনি।