সংসদে এমপিদের তোপের মুখে অর্থমন্ত্রী

প্রকল্পের অর্থ ছাড় নিয়ে সংসদ সদস্যদের তোপের মুখে পড়তে হয়েছে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতকে।

সংসদ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 31 March 2015, 01:44 PM
Updated : 31 March 2015, 01:44 PM

অর্থছাড় হয়েছে বলে তিনি বারবার দাবি করলেও সংসদ সদস্যরা তার প্রতিবাদ জানালে মঙ্গলবার কিছু সময়ের জন্য সরগরম হয়ে ওঠে সংসদ অধিবেশন।

নির্বাচনী এলাকার রাস্তা নির্মান ও সংস্কারের প্রকল্পের টাকা ছাড় নিয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের পক্ষে অর্থমন্ত্রী বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার সময় এই পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়।

প্রশ্নোত্তর পর্বে নারায়ণগঞ্জের এ কে এম শামীম ওসমানের বক্তব্যকে কেন্দ্র করে এই আলোচনার সূত্রপাত হয়। তিনি তার এলাকার রাস্তাঘাট সংস্কারের ২৫ কোটি টাকা বরাদ্দ না পাওয়ার অভিযোগ জানান।   

“এলাকার রাস্তা-ঘাটের জন্য ২৫ কোটি টাকার একটি প্রকল্প রয়েছে। বলা হয়েছিল, আমরা প্রকল্পের বিষয়ে প্রস্তাব দিলে টাকা ছাড় দেওয়া হবে। কিন্তু সেই টাকা আমরা পাইনি।”

এর জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, ওই প্রকল্পের টাকা ছাড় দেওয়া হয়েছে।

এ সময় প্রায় সব সংসদ সদস্য প্রতিবাদ করলে তিনি বলেন, “নো নো নো, নট অ্যাট অল। ওই টাকা ছাড় দেওয়া হয়েছে।

“আমার এলাকায় কাজ হচ্ছে। অন্যান্য এলাকাতেও কাজ হচ্ছে। অনেকে যে প্রস্তাব দিয়েছেন, তাতে ২৫ কোটি টাকায় হয় না বলেই টাকা ছাড় হয়নি। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় ওই টাকা ছাড় দিয়েছে।”

প্রশ্নোত্তর পর্ব শেষে সাবেক মন্ত্রী শেখ ফজলুল করিম সেলিম বলেন, “অর্থমন্ত্রী টাকা ছাড় দেওয়ার কথা বললেও বাস্তবে সেটা দেওয়া হয়নি। কেউ এ টাকা পায়নি। আমার পাশে মাননীয় মন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ রয়েছেন, তিনিও পাননি। অন্তত সামনে যারা বসেছেন তারা পাননি।

“গত টার্মে পেয়েছি। উনি (অর্থমন্ত্রী) যদি ওটার কথা মনে করেন, তাহলে ভুল হবে।”

আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ এই নেতা বলেন, “আমলাতান্ত্রিক কোনো জটিলতার কারণে হয়ত টাকা ছাড় হয়নি, যেটা অর্থমন্ত্রী জানেন না। তিনি অর্থমন্ত্রী, তিনি হয়ত পেতে পারেন।”

অর্থমন্ত্রী এরপর দাঁড়িয়ে বলেন, “আমি আগে যা বলেছি, এখনও তাই বলছি। বাজেটে, ২০১৪-১৫ অর্থ বছরে বাজেটে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের পক্ষে পুরো টাকা দেওয়া হয়েছে। প্রকল্প গ্রহণ করছে, পুরোটা খরচ হবে।”

সংসদে অর্থমন্ত্রী (ফাইল ছবি)

এসময় পাশ থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কিছু বললে অর্থমন্ত্রী বলেন, “না না মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, স্থানীয় সরকার চিঠি দিয়েছে। কিভাবে প্রকল্প করতে হবে... আপনারা (সংসদ সদস্য) এলাকায় খোঁজ নেন। টাকা না দেওয়ার আমার কোনো অধিকার নেই।”

এরপর মাগরিবের নামাজের জন্য সংসদ মুলতবি হয়ে যায়। অধিবেশন শুরুর পর আবার বিষয়টি আলোচনায় ওঠে।  

বিরতির পর অধিবেশন শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেন, “অর্থমন্ত্রীকে আমি শ্রদ্ধা করি, আমাদের প্রিয় নেতা। যে কোনো কারণেই হোক, উনি ভুল বুঝেছেন। আমি সুনির্দিষ্ট জায়গায় কথা বলেছি, আসলে আমরা কেউই পাইনি।

“উনি (অর্থমন্ত্রী) নিজেও পাননি। তিনি যদি পেয়েছেন বলে থাকেন, তবে সেটা সঠিক নয়। উনি হয়ত আগের ১৫ কোটি টাকা পেয়েছেন।”

এরপর মুহিত দাঁড়িয়ে বলেন, “আমি বাজেট এলোকেশন করেছি। আমার আর কিছুই করার নেই।”