শিক্ষার্থীদের ক্লাসে হাজিরার তথ্য যাবে ওয়েবসাইটে

স্কুল-কলেজে শিক্ষার্থীদের শ্রেণিকক্ষে উপস্থিতির তথ্য ক্লাস শুরুর এক ঘণ্টার মধ্যেই ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইটে আপলোড করতে হবে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 March 2015, 06:04 PM
Updated : 30 March 2015, 06:04 PM

এজন্য সব মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় ওয়েবসাইট তৈরি বা হালনাগাদ করে আগামী ৩০ জুনের মধ্যে শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে অবহিত করতে বলা হয়েছে।

সোমবার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইট তৈরি সংক্রান্ত একটি খসড়া পরিপত্র জারি করে শিক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, সংশ্লিষ্টদের মতামত নিয়ে শিগরিগই তা চূড়ান্ত করা হবে।

পরিপত্রে বলা হয়েছে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শেখা-শেখানো অধিকতর ফলপ্রসূ করতে ওয়েবসাইট প্রয়োজন। এছাড়া স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে ওয়েবসাইট থাকা আবশ্যক।

“যেসব প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব ওয়েবসাইট নেই তাদের ওয়েবসাইট তৈরি করে এর ঠিকানা আগামী ৩০ জুনের মধ্যে শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে অবহিত করতে হবে।”

পরিপত্রে বলা হয়েছে, “প্রতিদিন ক্লাস শুরুর একঘণ্টার মধ্যে শ্রেণি অনুসারে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি ও অনুপস্থিতির সংখ্যা এবং শিক্ষকদের উপস্থিতি ও অনুপস্থিতির সংখ্যা ওয়েবসাইটে আপলোড করতে হবে।”

পরিপত্র অনুযায়ী, কোনো স্কুল-কলেজে বিদ্যুৎ সংযোগ না থাকলে স্থানীয় জেলা পরিষদ/উপজেলা পরিষদ ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, শিক্ষানুরাগী ব্যক্তিদের সহযোগিতায় সৌর বিদ্যুতের ব্যবস্থা করতে হবে।

“সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইট তৈরি এবং ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত ব্যয় সরকারের বিধিমোতাবেক নিজস্ব তহবিল থেকে নির্বাহ করতে পারবে। এজন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আলাদা অনুমোদন নেওয়ার প্রয়োজন হবে না। বেসরকারি প্রতিষ্ঠান নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় ওয়েবসাইট তৈরি করবে।”

ওয়েবসাইটে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিচিতি-ইতিহাস, শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের তথ্য, ভূমির তফসিল ও মালিকানা তথ্য, ভবন, শ্রেণিকক্ষ, বিভিন্ন শ্রেণীতে ছাত্র-ছাত্রীর আসন সংখ্যার তথ্য আপলোড করতে হবে।

মাল্টিমিডিয়া শ্রেণিক্ষ-কম্পিউটার ল্যাব, কম্পিউটার ব্যবহার, পরিচ্ছন্নতা, শরীর চর্চা ও স্যানিটেশন, পঠিত বিষয়াবলী, বিভিন্ন অনুষ্ঠান, স্মরনিকা, অনুমোদিত ও পূরণকৃত পদের তথ্যও আপলোড করতে বলা হয়েছে ওয়েবসাইটে।

এছাড়া বিগত তিন বছরের পাবলিক পরীক্ষার ফলাফল সংক্রান্ত তথ্য, পরিচালনা পর্যদ, প্রতিষ্ঠান সংক্রান্ত আইন; বিধি, নীতিমালা ও সার্কুলার; খেলার মাঠ, খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক কার্যক্রম ছাড়াও প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন ‘সফলতার’ তথ্য এবং ছবির গ্যালারি ওয়েবসাইটে অন্তর্ভুক্ত করতে বলা হয়েছে।

পরিপত্র অনুযায়ী, ছাত্রীদের তথ্য শুধুমাত্র শিক্ষক ও সংশ্লিষ্ট অভিভাবকর ছাড়া অন্য কেউ দেখতে পারবেন না। বিষয়টি নিশ্চিত করতে পাসওয়ার্ড ব্যবহার করতে বলা হয়েছে।

ক্লাস রুটিন, একাডেমিক ক্যালেন্ডার, বাৎসরিক ছুটির তালিকা, অভ্যন্তরীণ পরীক্ষার ফলাফল, জরুরি নোটিশ, ছাড়পত্র (টিসি), প্রসংশাপত্র, শিক্ষার্থী সম্পর্কিত সকল প্রকার প্রতিবেদন, ই-বুকসহ বিভিন্ন সেবাও ওয়েবসাইটে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।

ওয়েবসাইট হালনাগাদকরণ বা এতে সমস্যা দেখা দিলে এ সংক্রান্ত জনবল না থাকলে আউট সোর্সিংয়ের মাধ্যমে কাজ চালাতে হবে বলছে সরকার।

সম্ভব হলে প্রতিষ্ঠানের একজন কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে প্রশিক্ষণ দিয়ে নিয়মিতভাবে ওয়েবসাইট হালনাগাদের কাজ করাতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

খসড়ায় বলা হয়েছে, উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইট হালনাগাদ আছে কি না এবং এতে যথাযথ তথ্য সন্নিবেশিত রয়েছি কি না তা নিয়মিত তদারকি করে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে প্রতিবেদন দেবেন।

আর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এ বিষয়ে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে প্রতিবেদন দেবেন। জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ওয়েবসাইট তৈরি ও হালনাগাদের অগ্রগতি প্রতিবেদন তিন মাস পর পর মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরে পাঠাবেন।

পরিপত্র অনুযায়ী, জেলা ও উপজেলা শিক্ষা কমিটি বিষয়টি পর্যালোচনা করবে। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি/সার্বিক) বিষয়টি তদারকি করবেন।