হরতালেই এইচএসসিতে বসছে ১১ লাখ শিক্ষার্থী

হরতাল-অবরোধের মধ্যেই বুধবার থেকে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় বসছে ১০ লাখ ৭৩ হাজার ৮৮৪ জন শিক্ষার্থী।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 March 2015, 09:10 AM
Updated : 30 March 2015, 12:17 PM

সূচি অনুযায়ী, আগামী ১ এপ্রিল থেকে ১১ জুন পর্যন্ত এইচএসসি ও সমমানের তত্ত্বীয় বিষয়ের পরীক্ষা হবে। ব্যবহারিক পরীক্ষা হবে ১৩ জুন থেকে ২২ জুন।

গত বছর এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় ১১ লাখ ৪১ হাজার ৩৭৪ জন শিক্ষার্থী অংশ নিয়েছিলেন। এই হিসাবে এবার পরীক্ষার্থী কমেছে ৬৭ হাজার ৪৯০ জন।

সোমবার সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ এবারের পরীক্ষার বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, “আমরা অস্বাভাবিক পরিস্থিতির মধ্যে পরীক্ষা নিচ্ছি। আতঙ্কের মধ্যে শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা দিচ্ছে। এটা কাটিয়ে উঠতে তাদের ৩০-৪০ বছর লাগবে, আমাদের এর খেসারত দিতে হবে।”

হরতাল-অবরোধের মধ্যেই এইচএসসি পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে জানিয়ে নাহিদ বলেন, “কোনো হরতাল-অবরোধ আসলে হচ্ছে না। পরীক্ষা না নিলে ছেলেমেয়েদের এক বছর নষ্ট হয়ে যেতে পারে।”

পাবলিক পরীক্ষার মধ্যে হরতাল-অবরোধের কর্মসূচি না রাখতে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আবারও আহ্বান জানান শিক্ষামন্ত্রী।

বিএনপি জোটের অবরোধ-হরতালে চলতি এসএসসি ও সমমানের সবগুলো অর্থাৎ, ১৬ দিনের ৩৬৮টি পরীক্ষা পেছাতে বাধ্য হয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। পরীক্ষাগুলো নেওয়া হয় ছুটির দিনে, শুক্র ও শনিবার।

তবে এ ধরনের রাজনৈতিক কর্মসূচির কারণে যে এইচএসসি পরীক্ষা পেছানো হবে না- শিক্ষামন্ত্রী তা আগেই জানিয়েছিলেন।

গত ৫ জানুয়ারি থেকে সারা দেশে টানা অবরোধ চালিয়ে আসা বিএনপি জোট ফেব্রুয়ারি ও মার্চের বেশিরভাগ সময় ছুটি ছাড়া প্রতিদিনই হরতাল করে এসেছে।

শিক্ষামন্ত্রী জানান, এবার দুই হাজার ৪১৯টি কেন্দ্রে আট হাজার ৩০৫টি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা দেবে। গতবারের চেয়ে এবার ২০১টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও ৬৭টি পরীক্ষা কেন্দ্র বেড়েছে।

এবার এইচএসসিতে আটটি সাধারণ বোর্ডের অধীনে আট লাখ ৮৬ হাজার ৯৩৩ জন, মাদ্রাসা বোর্ডের অধীনে আলিমে ৮৪ হাজার ৩৬০ জন, কারিগরি বোর্ডের অধীনে এইচএসসি বিএম/ভোকেশনালে ৯৮ হাজার ২৪৭ জন এবং ডিআইবিএসে চার হাজার ৩৪৪ জন পরীক্ষা দেবে বলে জানান নাহিদ।

পরীক্ষার্থীদের মধ্যে এবার পাঁচ লাখ ৭০ হাজার ৯৯৩ জন ছাত্র এবং পাঁচ লাখ দুই হাজার ৮৯১ জন ছাত্রী।

মন্ত্রী জানান, এবার বিদেশে সাতটি কেন্দ্রে ২৪১ জন শিক্ষার্থী এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেবে, এর মধ্যে ১১০ জন ছাত্র এবং ১৩১ জন ছাত্রী।

এবার বাংলা প্রথম পত্র, রসায়ন, পৌরনীতি, ব্যবসায় নীতি ও প্রয়োগ, জীববিজ্ঞান, পদার্থ বিজ্ঞান, ইতিহাস, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি, হিসাব বিজ্ঞান, ব্যবসায় উদ্যোগ ও ব্যবহারিক ব্যবস্থাপনা, সমাজ বিজ্ঞান এবং কম্পিউটার শিক্ষা প্রথম ও দ্বিতীয় পত্রসহ মোট ২৫টি বিষয়ে পরীক্ষা হবে সৃজনশীল প্রশ্নে।

এইচএসসিতে ২০১২ সালে বাংলা প্রথম পত্রের পরীক্ষা সৃজনশীল প্রশ্নে হয়।

আর ২০১৩ সালে বাংলা প্রথম পত্র, রসায়ন প্রথম ও দ্বিতীয় পত্র, পৌরনীতি প্রথম ও দ্বিতীয় পত্র, ব্যবসায় নীতি ও প্রয়োগ প্রথম ও দ্বিতীয় পত্রের পরীক্ষা সৃজনশীল পদ্ধতিতে হয়েছিল।

গত বছরও ২৫টি বিষয়ে সৃজনশীল প্রশ্নে পরীক্ষা হয়েছিল।

এবারও দৃষ্টি প্রতিবন্ধী, সেরিব্রাল পালসিজনিত প্রতিবন্ধী এবং হাত নেই এমন প্রতিবন্ধী পরীক্ষার্থীরা শ্রুতিলেখক নিয়ে পরীক্ষা দিতে পারবেন। এক্ষেত্রে দশম শ্রেণিতে অধ্যয়নরতদের শ্রুতিলেখক হিসাবে নেওয়া যাবে বলে জানান মন্ত্রী।

তিনি বলেন, শ্রুতিলেখক নিয়ে পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী এবং বুদ্ধি ও শ্রবণপ্রতিবন্ধীরা অন্য সময়ের মত এবারও বাড়তি ২০ মিনিট সময় পাবেন।