আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর এ সমর্থনকেই নির্বাচনী প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সবচেয়ে বড় শক্তি বলে মনে করছেন বলেও জানিয়েছেন তিনি।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ফারুক খান, সাবেক মন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক এবং এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি একে আজাদ ও বিজিএমইএ সভাপতি আতিকুল ইসলামকে নিয়ে রোববার বিকালে রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে আসেন আনিসুল হক।
মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার পর ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সাবেক এই সভাপতি বলেন, “মনোনয়নপত্র জমা দিতে এসে রাজনীতিক ও ব্যবসায়ীদের এক সম্মিলন হল। সামনে নতুন দায়িত্ব নেওয়ার সুযোগ তৈরি হচ্ছে।”
তিনি বলেন, “আমি সরকারি দলের প্রার্থী নই, দলীয় প্রার্থী নই। কিন্তু তারা আমাকে সমর্থন দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর সমর্থন রয়েছে-এটাই আমার শক্তি।”
সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সবার জন্য সমান সুযোগ তৈরির আহ্বান জানান আনিসুল হক।
“লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করবে ইসি। আমারও দাবি তা হোক,” বলেন তিনি।
আচরণবিধি মেনে চলার বিষয়ে সব সময় সজাগ রয়েছেন দাবি করে আনিসুল হক বলেন, “মনোনয়নপত্র জমা দিতে আসার সময় আমার সঙ্গে মাত্র পাঁচজন আছেন। আমি আচরণবিধি মানব। এর আগে মনোনয়নপত্র নিতে এসে আমার বাবাকে গাড়িতে বসিয়ে রেখেছিলাম।
এর আগে এফবিসিসিআইয়ের আরেক সাবেক সভাপতি ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুল আউয়াল মিন্টুর পক্ষে তার ছেলে তাফসির ও আজওয়ার আউয়াল মনোনয়নপত্র জমা দেন।
পরে তাফসির আউয়াল বলেন, “সবার জন্য সমান সুযোগ চাই। আমরা কমিশনের সঙ্গে কথা বলছি। কেউ মামলার জন্য আদালতে দৌড়াচ্ছে। কেউ আবার নির্বাচনী কার্যক্রমে রয়েছে। ভোটের পরিবেশ তৈরি করবে ইসি।”
তার বাবা শেষ পর্যন্ত ভোটে থাকবেন কি থাকবেন না তা নির্বাচনী পরিবেশের ওপর নির্ভর করবে বলে জানান তাফসির।
জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য বাহাউদ্দিন আহমেদ বাবুলও উত্তর সিটি করপোরেশনে মেয়র পদে মনোনয়নপত্র জমা দেন।
পরে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “বর্তমান পরিবেশে আমি সন্তুষ্ট। আশা করি আগামীতেও এ অবস্থা থাকবে। ভোটের সুষ্ঠু পরিবেশের জন্য সেনা মোতায়েনও চাই আমি।”
আওয়ামী লীগের সাবেক সাংসদ সারাহ্ বেগম কবরীও মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার পর নিজেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আশীর্বাদপুষ্ট বলে দাবি করেছেন।
“এটা স্থানীয় সরকার নির্বাচন। যে কেউ প্রার্থী হতে পারেন। প্রধানমন্ত্রী আমাকে আশীর্বাদ করেছেন। আমাকে দোয়া করেছেন তিনি,” বলেন তিনি।
মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও জমার শেষ দিনে ঢাকা উত্তরে মেয়র পদে মনোনয়নপত্র তুলে তা জমা দিয়েছেন মিন্টুর ছেলে তাবিথ আউয়াল।
এই সিটি করপোরেশনে মেয়র পদে মোট ৩০ জন মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করলেও বিকাল ৪টা পর্যন্ত ১০ জন মনোনয়নপত্র জমা দেন।
এদের মধ্যে আনিসুল হক, আবদুল আউয়াল মিন্টু, বাহাউদ্দিন, ববি হাজ্জাজ ও কবরী ছাড়াও এ ওয়াই এম কামরুল ইসলাম, আব্দুল্লাহ আল ক্কাফি রতন, সামছুল আলম চৌধুরী, চৌধুরী ইরাদ আহমদ সিদ্দিকী, মোয়াজ্জেম হোসেন খান মজলিশ, নাঈম হাসান প্রমুখ রয়েছেন।
একজনকে জরিমানা
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে মেয়র পদে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েই ২০ হাজার টাকা জরিমানা গুণতে হল নাইম হাসানকে।
পোস্টার-ব্যানার লাগিয়ে ঘোড়ার গাড়িতে চড়ে মনোনয়নপত্র জমা দিতে এসে আচরণবিধি লঙ্ঘন করেন তিনি।
ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী হাকিম সারওয়ার আলম বিকালে রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়েই তাকে এ জরিমানা করেন।
বিচারক বলেন, “মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের পর প্রচারণা শুরু করতে পারবেন প্রার্থীরা। এর আগে প্রচারণা করে আচরণবিধি লঙ্ঘন করেছেন নাঈম হাসান। এজন্য তাকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হল। অনাদায়ে ১ মাসের জেল।”
তাৎক্ষণিকভাবে জরিমানা পরিশোধ করে ছাড়া পান নাঈম।