দুর্নীতির বড় কারণ দারিদ্র্য: মতিয়া

দুর্নীতির জন্য দারিদ্র্যকে প্রধানত দায়ী করেছেন কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী। তাই দুর্নীতি নির্মূলে দারিদ্র্য দূর করার ওপর জোর দিয়েছেন তিনি। এক্ষেত্রে তিনি রাষ্ট্রের ভূমিকাও বড় করে দেখছেন।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 March 2015, 09:31 AM
Updated : 28 March 2015, 10:10 AM

দুর্নীতি দমন কমিশনের উদ্যোগে চলমান দুর্নীতি প্রতিরোধ সপ্তাহে শনিবার রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে ‘সততা সংঘের’ সমাবেশ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে কৃষিমন্ত্রী একথা বলেন।

দুর্নীতির সঙ্গে দারিদ্র্যের সম্পর্কের ব্যাখ্যা দিতে মতিয়া বলেন, “কয়লার দোকানের পাশে সাদা কাপড় পড়ে থাকলে কাপড় ময়লা হবেই।

“রাষ্ট্র যদি দায়িত্ব না নেয় বা রাষ্ট্রের পরিবেশ যদি অসুস্থ থাকে, তাহলে দুর্নীতিমুক্ত হওয়া সম্ভব নয়। দুর্নীতি প্রতিরোধে জনগণের ন্যূনতম দারিদ্র্য মেটানোর দায়িত্ব রাষ্ট্রকেই নিতে হবে।”

রাষ্ট্রের প্রভাবে দুর্নীতির নজির তুলে ধরে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর এই সদস্য বলেন, “পঁচাত্তর পরবর্তী সময়ে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ‘মানি ইজ নো প্রবলেম’ উক্তির মাধ্যমে দেশে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় দুর্নীতি বিস্তারের বীজ রোপণ করেন।”

বিভিন্ন দাতা দেশ ও উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার দুর্নীতিবিরোধী ভূমিকা নিয়েও সমালোচনা করেন এই মন্ত্রী।

“বিদেশি দাতাদের শর্ত মোটেও সুনীতির নয়। দাতাদের নিজেদের আগে দুর্নীতি বিরোধী আচরণ চর্চা করতে হবে। এরপরই তারা আমাদের হিতোপদেশ দিতে আসতে পারেন।”

দুর্নীতি দমন কমিশনের কার্যক্রমের প্রশংসা করে তিনি বলেন, “আগে আমরা দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন জাতি ছিলাম, কিন্তু এখন পরিস্থিতির অনেক উন্নতি হয়েছে। তবে এতে আত্মতৃপ্তির সুযোগ নেই। দুর্নীতি প্রতিরোধে আমাদের আরও অনেক দূর যেতে হবে।”

সমাবেশে দুদক চেয়ারম্যান মো. বদিউজ্জামান সততা সংঘের কার্যক্রম তুলে ধরে এতে শিক্ষার্থীদের সম্পৃক্ত করার কারণ ব্যাখ্যা করেন।

“আমরা যদি স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের মনে দুর্নীতিবিরোধী মনোভাব গড়ে তুলতে পারি, তাহলে দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তোলা সম্ভব হবে। কোমলমতি ছেলে-মেয়েদের দুর্নীতিবিরোধী কাজে সম্পৃক্ত করার উদ্দেশ্য হল তারা যেন এ কাজ শুরু থেকেই শেখে।”

বিএনপি সরকারের সমালোচনা করে তিনি বলেন, “২০০৫ সালে জাতিসংঘের দুর্নীতিবিরোধী সনদ প্রণীত হওয়ার পর তৎকালীন বিএনপি সরকার এতে স্বাক্ষর করতে গড়িমসি করে নিজেদের দুর্নীতিগ্রস্ততার জন্য।”

দুদক কমিশনার সাহাবুদ্দিন আহমেদ বলেন, “ইতিহাস বিকৃতি দুর্নীতির সবচেয়ে বড় একটি মাত্রা। ‘ইনটেলেকচুয়াল করাপশন’ বা বুদ্ধিবৃত্তিক দুর্নীতি ভয়ংকর। যারা মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধুকে অস্বীকার করে তারাই সবচেয়ে বড় দুর্নীতিবাজ। এরা ভণ্ড, প্রতারক। এদের প্রতিরোধ করতে হবে।”

‘সবাই মিলে শপথ করি, দুর্নীতিবাজদের ঘৃণা করি’ এই স্লোগান নিয়ে এবছর দুর্নীতি প্রতিরোধ সপ্তাহের এই অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন দুদক সচিব মো. মাকসুদুল হাসান খান, মহাপরিচালক মো. শামসুল আরিফিন, রাজধানীর উইংস স্কুলের অধ্যক্ষ আলতাফ হোসেন ও স্কুলের দুজন শিক্ষার্থী।