বলা হচ্ছে, এক দিনে চার লাখ নতুন বাংলা শব্দ যোগ করা গেলে এটি হবে একটি রেকর্ড। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সহযোগিতায় গুগল ডেভেলপারস গ্রুপ- বাংলা এ আয়োজনের উদ্যোক্তা।
বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টায় আগারগাঁওয়ের বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলে শুরু হয় মূল আয়োজন। একই সময়ে অন্যান্য স্থানেও কম্পিউটারে লগ ইন করেন তরুণ স্বেচ্ছাসেবীরা। মাঝে তিন ঘণ্টা বিরতি দিয়ে শুক্রবার সকাল ৬টা পর্যন্ত তাদের এই কর্মযজ্ঞ চলবে।
বিকালে কম্পিউটার কাউন্সিলে এসে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, বিশ্বে প্রায় ৩০ কোটি মানুষ বাংলায় কথা বলেন। বিশ্বে বাংলা ভাষার স্থান সপ্তম। তারপরও গুগল অনুবাদে বাংলা শব্দ ভাণ্ডারের অবস্থা খুব একটা ভালো নয়।
“যে গতিতে আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, আশা করা যায়, ভোর পর্যন্ত আমাদের লক্ষ্যমাত্রার দ্বিগুণ অর্জিত হবে।”
তিনি জানান, সকাল ১১টায় একসঙ্গে প্রায় ১০ হাজার ব্যবহারকারী গুগল সার্ভারে ‘লগ ইন’ করায় দুইবার গুগল অনুবাদের সার্ভার ক্র্যাশ করে।
এর আগে ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে ৬৫ হাজার বাংলা শব্দ যোগ করা হয়েছিল। শব্দ সংখ্যার হিসাবে বিশ্বে বাংলার অবস্থান সেদিন ছিল দ্বিতীয়। প্রথম স্থানে থাকা স্প্যানিশ ভাষার ৬৮ হাজার শব্দ সেদিন যোগ হয়েছিল গুগল ট্রান্সলেটে।
২৬ মার্চের চেষ্টায় মোট কত বাংলা শব্দ যোগ করা গেল তা জানা যাবে শুক্রবার সকাল ১০টার পর। তবে এ কার্যক্রম চালিয়ে নেওয়া হবে আগামী পহেলা বৈশাখ পর্যন্ত।
এমনিতে http://translate.google.com/community এই ঠিকানায় লগ ইন করে যে কেউ যে কোনো সময় নতুন শব্দ বা বাক্য যোগ করতে পারেন।
পলক জানান, ১৪ এপ্রিলের মধ্যে যিনি সবচেয়ে বেশি বাংলা শব্দ যোগ করতে পারবেন, গুগল তাকে তিন দিনের শিক্ষাসফরে নিয়ে যাবে সিঙ্গাপুর অফিসে। একইসঙ্গে গুগল ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে দেওয়া হবে ইলেকট্রনিক সার্টিফিকেট।
এদেরই একজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত রসায়ন বিভাগের শিক্ষার্থী ইব্রাহিম মুসতারিন।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “এখানে যারা কাজ করছেন তারা মূলত বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের শিক্ষার্থী। গুগল অনুবাদ যারা ব্যাবহার করেন এ উদ্যোগের ফলে তারা উপকৃত হবেন।”
আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের (এআইইউবি) শিক্ষার্থী দিবাকর সাহিল বলেন, “আমরা বাংলাকে ভালোবাসি, আমরা চাই অন্য যে কোনো ভাষার মতো গুগল অনুবাদে বাংলা সম্বৃদ্ধ হোক।”
ইডেন কলেজের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী তনু্শ্রী দাস, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের শিক্ষার্থী গোলাম মশিউরও একই কথা বললেন।
বিকাল ৫টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত বিরতি নিয়ে আবারও শুরু হবে শব্দ সংযোজনের কাজ, চলবে সারা রাত।
স্বেচ্ছাসেবীদের উদ্বুদ্ধ করতে প্রতিমন্ত্রী পলকের সঙ্গে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের নির্বাহী পরিচালক এস এম আশরাফুল ইসলাম, বাংলাদেশ ওপেন সোর্স নেটওয়ার্ক (বিডিওএসএন) এর সাধারণ সম্পাদক মুনির হাসান ও জিডিজি বাংলার কমিউনিটি ম্যানেজার জাবেদ সুলতান পিয়াস।