প্রার্থী আসামি হলে ছাড় দেবে না পুলিশ

আসন্ন সিটি নির্বাচনের সময় বিভিন্ন মামলায় গ্রেপ্তার-হয়রানি বন্ধ রাখতে বিএনপি নেতারা আহ্বান জানিয়ে এলেও এক্ষেত্রে কোনো ছাড় না দেওয়ার ইঙ্গিত মিলেছে পুলিশের বক্তব্যে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 March 2015, 12:41 PM
Updated : 26 March 2015, 12:42 PM

গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার মনিরুল ইসলাম বৃহস্পতিবার বলেছেন, “ফৌজদারি অপরাধে অপরাধী কোনো ব্যক্তি আদালতের অনুমতি বা জামিন ছাড়া নির্বাচনে অংশ নিতে চাইলে তার বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আইন অমান্য করে কেউ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না।”

নির্দলীয় সরকারের অধীনে মধ্যবর্তী নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলনের মধ্যে খালেদা জিয়াসহ বিএনপির শীর্ষ পর্যায়ের অধিকাংশ নেতাই হরতাল-অবরোধে নাশকতার বহু মামলার আসামি।

২০ দলের আন্দোলনের মধ্যে ঢাকা ও চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হলে বিএনপির অনেক নেতাই প্রার্থী হতে মনোনয়নপত্র কিনেছেন; যদিও কেন্দ্রীয় পর্যায় থেকে এই ভোটে অংশ নেওয়ার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসেনি।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনে মেয়র পদে মনোনয়নপত্র কিনেছেন বিএনপির অর্থবিষয়ক সম্পাদক আব্দুস সালাম, সাবেক সংসদ সদস্য নাসিরউদ্দিন আহমেদ পিন্টু ও বিএনপিপন্থি শিক্ষক নেতা সেলিম ভূইয়া।

ঢাকা উত্তরে মেয়র পদে মনোনয়নপত্র কিনেছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুল আউয়াল মিন্টু। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনে কিনেছেন আরেক উপদেষ্টা এম মনজুর আলম।

এদের মধ্যে মিন্টু ও সালাম তাদের বিরুদ্ধে করা বিভিন্ন মামলায় জামিনে রয়েছেন। সেলিম ভূইয়া নাশকতার মামলায় কারাবন্দি। পিন্টু পিলখানায় হত্যাকাণ্ডের মামলায় দণ্ড নিয়ে কারাভোগ করছেন।

এছাড়া ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ এবং চট্টগ্রামে কাউন্সিলর পদে প্রার্থী হতে ইচ্ছুক অনেকের নামেই রয়েছে মামলা।

‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ তৈরি করতে সিটি নির্বাচনের সময় বিরোধী জোটের প্রার্থীদের অবাধে প্রচার চালানোর সুযোগ দেওয়ার আহ্বান বৃহস্পতিবারই জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মাহবুবুর রহমান।    

তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “দলের অনেক নেতা-কর্মী মিথ্যা মামলায় কারাগারে। সরকারের নিপীড়ন-নির্যাতনের অনেকে আত্মগোপনে আছেন। তাদের ফ্রি করে দিতে হবে।”

একদিন আগে অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমদের নেতৃত্বে বিএনপি সমর্থক পেশাজীবীদের ফোরাম ‘শত নাগরিক কমিটি’র একটি প্রতিনিধি দল প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে দেখা করেই একই আহ্বান জানিয়েছিলেন।

গ্রেপ্তার ও হয়রানিতে থাকা সম্ভাব্য প্রার্থীদের নির্বাচনী কাজ বাধাহীন করা, কারাবন্দিদের প্রচার কাজে অংশগ্রহণের সুযোগ নিশ্চিত করা, বিরোধী দল সমর্থিতদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক পদক্ষেপ ঠেকাতে ইসির পদক্ষেপ চেয়েছিলেন তারা।  

এর মধ্যেই বৃহস্পতিবার গোয়েন্দা পুলিশের মুখপাত্র মনিরুল প্রার্থী হলেও আসামিদের কোনো ছাড় না দেওয়ার কথা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন।

২৮ এপ্রিল অনুষ্ঠেয় তিন সিটি করপোরেশনে নির্বাচনের প্রস্তুতির বিষয়ে তিনি বলেন, সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ৪২ লাখ জনগণ যেন নিরাপত্তার মধ্যে নিশ্চিন্তে ভোট দিতে পারে সেজন্য পুলিশ দায়িত্ব পালন করবে।

“গোয়েন্দা পুলিশ নির্বাচনে প্রার্থিতা ঘোষণার পর থেকে এলাকাভিত্তিক নজরদারি বাড়াবে। কোনো এলাকায় কোনো বিশৃঙ্খলার তথ্য পেলে তাৎক্ষণিক সেখানে ব্যবস্থা নেওয়ার পরিকল্পনার কথাও ভাবা হচ্ছে।”

তিন সিটি করপোরেশন নির্বাচনের তফসিল অনুযায়ী, ২৯ মার্চ পর্যন্ত মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া যাবে। এরপর যাচাই-বাছাই শেষে ৯ এপ্রিল প্রার্থিতা প্রত্যাহারের পর চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা ঘোষণা হবে।  

নির্বাচনে অবৈধ অস্ত্রের ব্যবহার ঠেকাতে গোয়েন্দা পুলিশ তথ্য সংগ্রহ করছে বলেও জানান মনিরুল।