জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাসকে ‘না’ বলুন: প্রধানমন্ত্রী

জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডকে  ‘না’ বলতে স্বাধীনতা দিবসে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 March 2015, 06:23 AM
Updated : 26 March 2015, 08:04 AM

বৃহস্পতিবার সকালে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে জাতীয় শিশু-কিশোর সমাবেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আসুন হানাহানি, অগ্নিসংযোগ, জঙ্গি ও সন্ত্রাসকে না বলি।”

চলতি বছরের শুরু থেকেই সারাদেশে লাগাতার অবরোধ চালিয়ে আসছে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দল। এরইমধ্যে মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরুর দিন থেকে দুই মাস ধরে হরতাল ডেকে আসছিল তারা।

হরতালের জন্য শুধু সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোতেই এসএসসির পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে। এছাড়া অবরোধে যানবাহনে অগ্নিসংযোগ, পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ ও হাতবোমার বিস্ফোরণে ১৩০ জনের বেশি সাধারণ মানুষের মৃত্যু হয়েছে।

বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোটের এই সহিংস কর্মসূচিতে শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হওয়ার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমরা পহেলা জানুয়ারি সকলের হাতে বই পৌঁছে দিয়েছি। কিন্তু শিশুরা স্কুলে যেতে পারছে না, ঠিকমতো পরীক্ষা দিতে পারছে না।”

সহিংসতার জন্য পরীক্ষার সূচি পরিবর্তনের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “যারা এই জঘন্য কর্মকাণ্ড করছে তাদের ক্ষমা নেই।”

তবে সন্ত্রাস-সহিংসতা দিয়ে বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা আটকানো যাবে না- মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমরা উন্নত দেশ চাই, শান্তিপূর্ণ সমাজ চাই। আমাদের অগ্রযাত্রা কেউ থামিয়ে রাখতে পারবে না। বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। এগিয়ে যাবে।”

উপস্থিত শিশু-কিশোরদের নিয়মানুবর্তিতার প্রতি গুরুত্ব দিতে পরামর্শ  দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, “তোমরা দেশ-বিদেশে সুনাম অর্জন করবে- সেটাই আমাদের লক্ষ্য।

“তোমরা বাবা-মা, শিক্ষকদের কথা শুনবে। আমিও তোমাদের মতো একদিন শিশু ছিলাম। তোমাদের মধ্য থেকেই একদিন কেউ প্রধানমন্ত্রী হবে।”

স্বাধীনতাকে অর্থবহ করতে সরকার কাজ করে যাচ্ছে-মন্তব্য করে তিনি বলেন, “বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ায় একটি জাতিরাষ্ট্র। আমাদের লক্ষ্য দেশের উন্নয়ন করা।”

বিশ্বের যে কোনো দেশে প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশের শিশু-কিশোরদের সাফল্য কামনা করে শেখ হাসিনা বলেন, দেশের প্রত্যেক উপজেলায় একটি করে ‘মিনি স্টেডিয়াম’ গড়ে তোলা হবে।

এর আগে প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে পৌঁছালে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক এবং ঢাকার জেলা প্রশাসক তোফাজ্জল হোসেন মিয়া তাকে স্বাগত জানান।

শুরুতেই জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন প্রধানমন্ত্রী।  এসময় জাতীয় সংগীত বাজানো হয়।

অনুষ্ঠান মঞ্চে গিয়ে দাঁড়ানোর পর প্যারেড কমান্ডার সালাম জানালে প্রধানমন্ত্রী পায়রা ছেড়ে ও বেলুন উড়িয়ে শিশু-কিশোর সমাবেশের উদ্বোধন করেন।

এরপর প্রধানমন্ত্রী প্যারেড পরিদর্শন করেন।

প্যারেড পরিদর্শনের পর স্টেডিয়ামের বিশাল পর্দায় বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ প্রচার করা হয়।

প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের পর বিএনসিসি, ঢাকা জেলা নৌ স্কাউট, ভারতেশ্বরী হোমস, শহীদ আব্দুর জব্বার আনসার ও ভিডিপি স্কুল ও কলেজ, ভিকারুন্নিসা স্কুল ও কলেজ, বাংলাদেশ ফিমেল অ্যাকাডেমি, তেজগাঁও শিশু পরিবারসহ ৪৬টি প্রতিষ্ঠান প্যারেডে অংশ নেয়। প্রধানমন্ত্রী সালাম গ্রহণ করেন।

এরপর ভারতেশ্বরী হোমস ও পিলখানার বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ স্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থীরা আকর্ষণীয় ডিসপ্লে প্রদর্শন করে।

এরআগে সকালে সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে শহীদদের শ্রদ্ধা জানানোর পর ধানমন্ডি ৩২ নম্বর সড়কে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে ফুল দেন প্রধানমন্ত্রী।

গণভবনে ফিরে স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে বিশেষ ডাকটিকিট ও খাম অবমুক্ত করেন তিনি।

স্বাধীনতা দিবসে মুক্তিযোদ্ধাদের শুভেচ্ছা জানান শেখ হাসিনা।

সকালে মোহাম্মদপুরের গজনবী সড়কে যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের বিশ্রামাগারে ফুল, ফল ও মিষ্টি পাঠিয়েছেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রীর উপ-প্রেস সচিব আশরাফুল আলম খোকন, ব্যক্তিগত সহকারী জাহাঙ্গীর আলম ও সাইফুজ্জামান শিখর সেগুলো যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে পৌঁছে দেন।