বাংলাদেশে সংকট নিরসনে আশাবাদী বিসওয়াল

বাংলাদেশের রাজনীতিকরাই চলমান সংকটের শান্তিপূর্ণ সমাধানে পৌঁছাতে পারবেন বলে আশা প্রকাশ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিশা দেশাই বিসওয়াল।

নিউ ইয়র্ক প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 March 2015, 07:58 AM
Updated : 25 March 2015, 03:19 PM

মঙ্গলবার ওয়াশিংটনে পররাষ্ট্র বিষয়ক কমিটিতে দক্ষিণ এশিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের উন্নয়ন সহায়তা পরিকল্পনার ওপর শুনানিতে এই আশার কথা জানান ভারতীয় বংশোদ্ভূত এই মার্কিন কূটনীতিক।

শুনানিতে উপস্থিত ডেমক্রেট নেতা বাংলাদেশি ব্যবসায়ী আকতার হোসেন বাদল সাংবাদিকদের বলেন, “বিসওয়াল বলেছেন, বাংলাদেশের পরিস্থিতির ব্যাপারে আমরা সজাগ রয়েছি। আশা করছি পারস্পারিক আলোচনার মাধ্যমে শিগগিরই রাজনীতিকরা শান্তিপূর্ণ সমাধানে উপনীত হবেন।”

বাংলাদেশে গণতন্ত্র এগিয়ে নেওয়ার মধ্য দিয়ে প্রত্যাশিত উন্নয়নের গতি অব্যাহত রাখতে রাজনৈতিক স্থিতির বিকল্প নেই বলেও মন্তব্য করেন বিসওয়াল।

‘সাব কমিটি অন এশিয়া অ্যান্ড দ্য প্যাসিফিক’ আয়োজিত শুনানিতে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন নিশা দেশাই বিসওয়াল এবং ইউএস এইডের এশিয়া বিষয়ক ব্যুরোর সহকারী প্রশাসক জোনাথন স্টিভার্স। সভাপতিত্ব করেন সাব-কমিটির চেয়ারম্যান কংগ্রেসম্যান ম্যাট সালমন।

ওয়াশিংটনে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিনও শুনানির সময় উপস্থিত ছিলেন।

২১৭২ র‌্যাবার্ন হাউজ অফিস ভবনে অনুষ্ঠিত শুনানিতে অংশ নেন সাব কমিটির সদস্য গ্রেস মেং, ক্যালিফোর্নিয়ার কংগ্রেসম্যান ব্র্যাড শারমেন, এমি বেরা, ওহাইয়োর স্টিভ শ্যাবট ও জেফ ডানকান।

বিসওয়াল তার বক্তব্যে লেখক-ব্লগার অভিজিৎ রায় হত্যাকাণ্ড প্রসঙ্গে বলেন, “বাংলাদেশের সংবিধানে যেসব মৌলিক অধিকার রয়েছে তার চর্চা করছিলেন মার্কিন নাগরিক অভিজিৎ, কিন্তু তা সহ্য হয়নি ধর্মীয় উগ্রপন্থীদের।

“অভিজিত হত্যায় জড়িতদের তদন্তে সহায়তা করছে এফবিআই। ঘাতকদের বিচারে সোপর্দ করতে আমরা বদ্ধপরিকর।”

গত ২৬ ফেব্রুয়ারি রাতে বইমেলা থেকে ফেরার পথে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকায় সন্ত্রাসী হামলায় নিহত হন লেখক অভিজিৎ রায়। এ সময় চাপাতির আঘাতে তার স্ত্রী রাফিদা আহমেদ বন্যাও আহত হন।

চাপাতির কোপে একটি আঙুল হারানো বন্য যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে গেছেন। মাথায়ও জখম রয়েছে তার।

অভিজিৎ ও বন্যা দুজনই যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক। এই ঘটনার তদন্তে সহায়তা দিতে এফবিআইয়ের একটি দল ঢাকায় এসে হামলার স্থান পরিদর্শন ও আলামত সংগ্রহ করেছে।

শুনানিতে বাংলাদেশের রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং শ্রমিকদের সমস্যা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।

গণতন্ত্রের কাঠামো এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নে যুক্তরাষ্ট্র কিভাবে আরো অবদান রাখতে পারে তা নিয়ে কথা বলেন কংগ্রেস সদস্যরা।

২০১৬ অর্থবছরে ইউএসএইড দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর সহায়তার জন্য যে প্রস্তাব করেছে সে ব্যাপারে অনুসন্ধান চালাবে ‘সাব কমিটি অন এশিয়া অ্যান্ড দ্য প্যাসিফিক’।

পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা কিভাবে জীবনমানের উন্নয়ন ঘটাতে কাজ করছে এবং এ উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় মার্কিন স্বার্থ সংরক্ষিত হচ্ছে কি না তা খতিয়ে দেখবে এই কমিটি।

একই সঙ্গে ভারত, বাংলাদেশ, পাকিস্তানে প্রত্যাশা অনুযায়ী মানবাধিকার উন্নয়ন হচ্ছে  কি না তাও পর্যালোচনা করা হবে।