আনিসুল, পিন্টুর পক্ষে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে লড়তে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রার্থী ব্যবসায়ী নেতা আনিসুল হক।

এদিকে বিএনপি ভোটে আসার আনুষ্ঠানিক কোনো ঘোষণা না দিলেও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন থেকে মেয়র পদে লড়তে আইনজীবীর মাধ্যমে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন পিলখানা হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত বিএনপি নেতা নাসির উদ্দিন আহমেদ পিন্টু।

ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই এর সভাপতি কাজী আকরাম উদ্দিন আহমদকে সঙ্গে নিয়ে সোমবার বিকালে উত্তরের রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে আসেন সংগঠনের সাবেক সভাপতি আনিসুল হক। ঢাকার সংসদ সদস্য এ কে এম রহমতুল্লাহও এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন।

রিটার্নিং কর্মকর্তা শাহ আলমের কাছ থেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করার পর আনিসুল সাংবাদিকদের বলেন, “ঢাকাবাসীকে সেবা দেওয়ার জন্য স্বপ্নের মতো আমার হাতে একটি সুযোগ এসেছে। আমরা চাই একটি সুন্দর সুংগঠিত ঢাকা। নাগরিক সেবামূলক, সুশাসনের ঢাকা।”

সমর্থন দেওয়ায় আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, “আমাকে সমর্থন দেওয়ার বিষয়ে হয়তো একটি বিষয় কাজ করেছে, আমি যে প্রতিষ্ঠানে গেছি সেখানেই কাজ করেছি।

“যে কাজগুলো আমরা আগে করে এসেছি, সে কাজগুলোকেই যদি আরেকটু বড় করে ছড়িয়ে দিতে পারি, আমি মনে করি এতে ঢাকার নাগরিকদের জন্য কিছুটা বাড়তি সুবিধা আমরা এনে দিতে পারব।”

ভোটারদের ‘বিশ্বাস রাখার’ আহ্বান জানিয়ে দায়িত্ব পালনের সুযোগ চান মোহাম্মদী গ্রুপের চেয়ারম্যান আনিসুল হক।

তিনি বলেন, “আমার মুখ্য উদ্দেশ্য হবে ঢাকার উন্নয়ন। সহজ বাংলায় পাঁচ বছর কাজ করার জন্য এসেছি। সাধারণ মানুষ যদি মনে করে আমি সৎ, কর্মঠ; তারা  যদি বিশ্বাস করে, তবেই আমি তাদের ভোট চাই।” 

নিয়ম অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র নেওয়ার সময় পাঁচজনের বেশি সঙ্গী নিয়ে আসা যায় না। তবে আনিসুল হক রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে পৌঁছালে সেখানে সরকার সমর্থক নেতাকর্মীদের ভিড় করতে দেখা যায়।

এ সময় তারা প্রধানমন্ত্রী ও আনিসুল হকের নামে মিছিল করে স্লোগান দিতে থাকেন। এদের অনেকেই আবার দোতলায় রিটার্নিং কর্মকর্তার কক্ষের বাইরে অবস্থান নেন।

এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে আনিসুল হক বলেন, “আমি উনাদের রিকোয়েস্ট করেছিলাম। মানুষের স্বতঃস্ফূর্ততা থাকেই; এটা আমাদের দেশের কালচার। আমি মনে করি এটা এড়ানো গেলে ভালো হতো।

মহানগর নাট্যমঞ্চে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে কারাবন্দি পিন্টুর পক্ষে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন তার আইনজীবী রফিকুল ইসলাম খান।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “উনি যেহেতু কারাগারে আছেন, তাই আমি তার পক্ষে মনোনয়পত্র সংগ্রহ করতে এসেছি।”

সাবেক সাংসদ পিন্টুকে গতবছর পিলখানা হত্যা মামলার রায়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয় আদালত। তিনি ওই রায়ের বিরুদ্ধে হাই কোর্টে আপিল করেছেন। 

চকবাজার থানা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক শফিকুল ইসলাম রাসেল দক্ষিণের রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে এসেছিলেন ২৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদের মনোনয়নপত্র নিতে।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডকমকে তিনি বলেন, “আমি এলাকাবাসীর সেবা করার জন্য, পাশে দাঁড়ানোর জন্য ব্যক্তিগতভাবে এই মনোনয়নপত্র নিলাম। আমাদের প্রত্যাশা দল নির্বাচনের পক্ষে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নেবে।”

রিটার্নিং কর্মকর্তারা জানান, মনোনয়নপত্র নেওয়ার পর নিয়ম মেনে তা জমা দিলে তবেই প্রার্থীরা তালিকাভুক্ত হবেন। বাছাই ও মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন পার হওয়ার পর সব ঠিক থাকলে তাদের প্রার্থিতা চূড়ান্ত হবে।

ঢাকার দুই ভাগে মেয়র পদের জন্য এ পর্যন্ত এক ডজনেরও বেশি মনোনয়নপত্র নিয়েছেন আগ্রহীরা। তবে এখনো কেউ জমা দেননি।

তফসিল অনুযায়ী, আগামী ২৮ এপ্রিল ঢাকা ও চট্টগ্রামের তিন সিটিতে ভোট হবে। এর আগে ২৯ মার্চ পর্য ন্ত মনোনয়ন দাখিলের সুযোগ রয়েছে। এসব মনোনয়নপত্র ১ ও ২ এপ্রিল বাছাই শেষে প্রত্যাহারের শেষ সময় রয়েছে ৯ এপ্রিল।