মাজারের টাকা লুট: র‌্যাব অধিনায়কের বিরুদ্ধে মামলা চলবে

চট্টগ্রামের তালসরা দরবার শরিফ থেকে ২ কোটি লুটের ঘটনায় র‌্যাব-৭ এর সাবেক অধিনায়কের বিরুদ্ধে মামলা বাতিলের আবেদন খারিজ করে দিয়েছে হাই কোর্ট।

সুপ্রিম কোর্ট প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 11 March 2015, 01:33 PM
Updated : 11 March 2015, 01:33 PM

বুধবার বিচারপতি এম মোয়াজ্জাম হোসেন ও বিচারপতি মো. বদরুজ্জামানের বেঞ্চ এই রায় দেয়।

আদালতে মূল মামলার বাদীর পক্ষে ছিলেন আব্দুল্লাহ আল মামুন রানা। তাকে সহযোগিতা করেন ব্যারিস্টার মোহাম্মদ এনাম।

এই ঘটনার পর সেনাবাহিনী থেকে বরখাস্ত হওয়া র‌্যাব-৭ এর সাবেক সিও জুলফিকার আলী মজুমদারের পক্ষে ছিলেন বিএম ইলিয়াস কচি।

আব্দুল্লাহ আল মামুন রানা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “জুলফিকারের বিরুদ্ধে মামলাটি বাতিলে একটি রুল বিচারাধীন ছিল। আজ রুলটি খারিজ হল। এর ফলে মামলা চলতে আর বাধা নেই। খারিজের মাধ্যমে রুলের সঙ্গে থাকা স্থগিতাদেশও উঠল।”

তল্লাশির নামে দরবারে ঢুকে ওই টাকা ডাকাতির অভিযোগে ২০১২ সালের ১৩ মার্চ এই মামলা হয়। দরবারের পীরের গাড়ি চালক মো. ইদ্রিস আনোয়ারা থানায় এই মামলা করেন।

২০১১ সালের ৪ নভেম্বর তালসরা দরবার শরিফে র‌্যাব সদস্যরা গিয়ে তল্লাশির নামে ২ কোটি ৭ হাজার টাকা লুট করেছে এমন অভিযোগ আনা হয়েছে বলে জানান তিনি।

মামলার অভিযোগে বলা হয়, “জুলফিকার আলী মজুমদারের নেতৃত্বে র‌্যাবের একটি দল অভিযান চালিয়ে দরবার শরিফে রাখা আলমারি ভেঙে দুই কোটি সাত হাজার টাকা নিয়ে যায়।”

এছাড়া ওইদিন দরবার শরিফ থেকে মিয়ানমারের পাঁচ নাগরিককে র‌্যাব সদস্যরা আটক করে। তাদের থানায় হস্তান্তর করা হলেও টাকার বিষয়ে কোনো কিছুই উল্লেখ করেনি।

পরে দরবার শরিফের পক্ষ থেকে বিষয়টি থানায় লিখিতভাবে জানানো হলেও কেউ সে সময় মামলা করতে রাজি হয়নি- বলা হয় দায়ের করা মামলার অভিযোগে।

“এ ঘটনা পরে জানাজানি হলে র‌্যাব সদর দপ্তরের পক্ষ থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্তের প্রাথমিক পর্যায়ে টাকা লুটের ঘটনায় র‌্যাব সদস্যদের যুক্ত থাকার বিষয়টি ধরা পড়ে।”

অভিযুক্ত কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ডাকাতির অভিযোগ আসার পর তাদের স্ব স্ব বাহিনীতে ফিরিয়ে নেওয়া হয়, যাদের মধ্যে র‌্যাব অধিনায়ক জুলফিকারও ছিলেন। পরে তিনি গ্রেপ্তারও হন। তবে বর্তমানে জামিনে রয়েছেন।

আনোয়ানা থানার পরিদর্শক আব্দুস সামাদ ২০১২ সালেই এ মামলার অভিযোগপত্র দেন। আসামি সাতজনের মধ্যে চারজন র‌্যাব-৭ এর সাবেক কর্মকর্তা, বাকি তিনজন এই বাহিনীর সোর্স।

চাকরিচ্যুত লেফটেন্যান্ট কর্নেল জুলফিকার আলী মজুমদার ছাড়া অন্য ছয় আসামি হলেন র‌্যাব-৭ এর সাবেক কর্মকর্তা ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট শেখ মাহমুদুল হাসান, ডিএডি আবুল বাশার, এসআই তরুণ কুমার বসু, র‌্যাবের তিন সোর্স দিদারুল আলম ওরফে দিদার, আনোয়ার মিয়া ও মানব বড়ুয়া।

এই ঘটনায় গ্রেপ্তার ৫ আসামি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।