পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, অপহৃত বাংলাদেশি হেলাল উদ্দিনের বাড়ি জামালপুরে। তার পাসপোর্ট নম্বর বি০১৫৬৫৫৩।
গত শুক্রবার সিরাত শহরের দক্ষিণে আল গানি তেলক্ষেত্রে হামলা চালিয়ে আইএস এর বন্দুকধারী সদস্যরা ওই নয়জনকে অপহরণ করে বলে সোমবার মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়।
ত্রিপোলির বাংলাদেশ দূতাবাস সরকারকে অপহরণের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে এবং এ বিষয়ে খোঁজ খবর নিচ্ছে। দূতাবাসের কর্মকর্তারা ওই তেল খনির দায়িত্বে থাকা কোম্পানি ভিএওএস এবং লিবিয়ার ন্যাশনাল অয়েল কোম্পানির সঙ্গেও যোগাযোগ রাখছেন।
যুদ্ধবিধ্বস্ত লিবিয়ায় দুটি বিবাদমান পক্ষ বেশ কিছুদিন ধরে আল গানি তেলক্ষেত্র এলাকা দখলে নেওয়ার জন্য লড়াই চালিয়ে আসছে। এর সুযোগ নিয়ে শুক্রবার আইএস জঙ্গিরা ওই তেলক্ষেত্রে হামলা চালায় এবং ব্যাপক ক্ষতি করে বলে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়।
লিবিয়ার নিরাপত্তা বাহিনীর বরাত দিয়ে গাল্ফ বিজনেসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসলামী জঙ্গিরা ওই তেলক্ষেত্রে হামলা চালিয়ে ১১জন নিরাপত্তারক্ষীকে হত্যা করে, যাদের মধ্যে কয়েকজনের ধর থেকে মাথা আলাদা করে ফেলা হয়।
নিরাপত্তা বাহিনী ওই তেলক্ষেত্রের নিয়ন্ত্রণ ফিরে পাওয়ার পর নয় থেকে দশজন কর্মীর অপহৃত হওয়ার বিষয়টি জানা যায়।
চেক প্রজাতন্ত্রের পরারাষ্ট্রমন্ত্রী লুবোমির জরালেককে উদ্ধৃত করে গাল্ফ বিজনেস জানায়, অপহৃতদের মধ্যে চেক প্রজাতন্ত্র, অস্ট্রিয়া, বাংলাদেশ ও ফিলিপাইনের কর্মী রয়েছেন।
গত বছর ইরাক ও সিরিয়াসহ মধ্যপ্রাচ্যের বড় একটি এলাকা নিজেদের দখলে নিয়ে খিলাফত কায়েমের ঘোষণা দেয় আইএস, যার মধ্য দিয়ে নতুন করে বিশ্বজুড়ে জঙ্গিবাদের উত্থানের শঙ্কা তৈরি হয়।
সিরিয়া ও ইরাকে এই জঙ্গি দলটির হাতে নিহত হয়েছে কয়েক হাজার মানুষ। গত এক বছরে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জাপান, মিশর, জর্ডান ও তুরস্কের অর্ধশতাধিক নাগরিককে জিম্মি করার পর তাদের শিরোশ্ছেদ করে ইন্টারনেটে ভিডিও প্রকাশ করেছে এই সন্ত্রাসীরা।
জর্ডানের এক পাইলটকে জীবন্ত পুড়িয়ে মারার পরও তারা একই কাজ করেছে।
এসব ঘটনায় জিম্মিদের মুক্তির বিনিময়ে সাধারণত নিজেদের বন্দি সদস্যদের মুক্তির দাবি জানিয়েছে আইএস। তবে জাপানি জিম্মিদের ক্ষেত্রে চাওয়া হয় মোটা অংকের অর্থ।
এই জঙ্গিগোষ্ঠীর হাতে কোনো বাংলাদেশি জিম্মি হওয়ার ঘটনা এই প্রথম।
বাংলাদেশ সব ধরনের জঙ্গি ও সন্ত্রাসবাদে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি অনুসরণ করে এলেও গতবছর ইরাকে যুক্তরাষ্ট্রের আইএসবিরোধী অভিযানে যোগ দিতে অপারগতা জানায়।
সে সময় সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়, যুদ্ধক্ষেত্রে মানবিক সহায়তার জন্য জাতিসংঘের উদ্যোগে মিশন শুরু হলে বাংলাদেশ তাতে যোগ দিতে রাজি আছে।