পেট্রোল বোমায় দগ্ধ হয়ে বৃহস্পতিবার রাতে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় রঞ্জিত নাথ।
আগের দিন রাতে হাটাহাজারী থানার চারিয়া এলাকায় বড় বোনের বাড়ি থেকে উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নের এনায়েতপুরের কালী বাড়ি এলাকায় নিজের ঘরে ফেরার পথে চারিয়া মাদ্রাসা এলাকায় পেট্রোল বোমার হামলার শিকার হয় রঞ্জিতদের অটোরিকশা।
এতে গুরুতর আহত হন যাত্রী রঞ্জিত ও চালক সাবের আহমেদ। শরীরের ৮২ শতাংশ দগ্ধ হয়ে একদিন আইসিইউতে চিকিৎসা নেওয়ার পর বৃহস্পতিবার গভীর রাতে মারা যান তিনি।
শুক্রবার নিহত রঞ্জিতের বোনোর স্বামী বোনের স্বামী পবন নাথ জানান, কারো বাড়িতে বা জমিতে কাজ পেলে কাজ করত রঞ্জিত। তার আয়েই সংসার চলত।
“এক গণ্ডা জমিতে ভাঙ্গাচোরা একটা ঘর আছে। রঞ্জিতের স্ত্রী ছবি রানি নাথও কোনো লেখাপড়া জানে না। সেও বাসা-বাড়িতে কাজ করে। কি করে তাদের দিন চলবে, আপনারাই বলেন?”
পবন নাথ বলেন, অনেক কষ্টে রঞ্জিত তার মেয়ে শান্ত নাথ (৯) ও ছেলে প্রান্ত নাথকে (৬) লেখাপড়া করাচ্ছিল। শান্ত তৃতীয় শ্রেণিতে আর প্রান্ত প্রথম শ্রেণিতে পড়ে।
“এখন পরিবারের দিন চালানোরও কোনো উপায় থাকল না লেখাপড়া আর কিভাবে হবে?”
পরিবারটি আর্থিক অনটনের চিত্র তুল ধরে একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলের সাংবাদিক জামশেদুল করিম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বৃহস্পতিবারও রঞ্জিতের পরিবারের সাথে কথা হয়েছিল। চিকিৎসা খরচ চালানোর সামর্থ্য তাদের নেই বলে জানান। শুক্রবার দুপুরে গিয়ে দেখি টাকা জোগাড় না হওয়ায় লাশ বাড়িতে নিতে পারছেন না।
“পরিবারটি খুবই হতদরিদ্র। কি করবে বুঝতে না পেরে তারা কান্না করছিল। বিষয়টি জেলা প্রশাসককে জানিয়েছি।”
জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাহমিলুর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, বিষয়টি জানতে পেরে জেলা প্রশাসক মেজবাহ উদ্দিন এক লাখ টাকা অনুদানের ব্যবস্থা করেন। দুপুরে নিহতের স্ত্রীকে ওই টাকা হস্তান্তর করা হয়।
পবন নাথ সন্ধ্যায় বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, টাকা পাওয়ার পর গাড়ি ভাড়া করে বিকালে লাশ বাড়িতে আনা হয়েছে। সন্ধ্যায় শেষকৃত্য করা হয়েছে।