বৃহস্পতিবার মধ্যরাতের এসব বিস্ফোরণের ঘটনাকে প্রথমে দোল উৎসবের পটকা বলে মনে করলেও পরে হাতবোমার বিস্ফোরণের কথা স্বীকার করেছে পুলিশ।
যশোর কোতোয়ালি থানার ওসি শিকদার আক্কাস জানান, রাত ১টার পর থেকে একে একে এসব বিস্ফোরণের খবর পান তারা।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সাবেক মন্ত্রী তরিকুল ইসলামসহ স্থানীয় বিএনপি নেতাদের বাড়ির কাছে এসব বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে বলে এলাকাবাসী জানায়।
জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি প্রয়াত চৌধুরী শহিদুল ইসলাম নয়নের বড় ছেলে রফিকুল ইসলাম চৌধুরী বিপ্লবের বাড়ি থেকে প্রথম বিস্ফোরণের শব্দ পাওয়া যায়। তার বাড়ি শহরের চৌরাস্তা এলাকায়।
রাতে ওই এলাকায় দায়িত্বরত প্রহরী জুলকদ হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “কোতোয়ালি থানার সামনে থেকে রাতে নয়টি মোটরসাইকেলে একদল লোক বিপ্লবের বাড়ির দিকে যায়। সেখান থেকে ১০টির বেশি বিস্ফোরণের শব্দ পাওয়া যায়। মোটরসাইকেলে থাকা সবার কাছে আগ্নেয়াস্ত্র ছিল।”
এর পরপরই বিস্ফোরণের শব্দ পাওয়া যায় শহরের ঘোপ সেন্ট্রাল রোড এলাকায়।
সেখানে দায়িত্বে থাকা এক নৈশ প্রহরী জানান, অন্তত দশটি মোটরসাইকেলে করে জনা ত্রিশেক লোক ‘রাজুর মোড়’ এলাকায় অবস্থান নিয়ে ছিলেন। তাদের কয়েকজন হেঁটে তরিকুল ইসলামের বাড়ির দিকে যান। সবার হাতে সাদা রঙের কৌটা ছিল। এর পরপরই সেখানে বিস্ফোরণের শব্দ পাওয়া যায়।
তরিকুলের স্ত্রী নার্গিস বেগম জানান, তার বাড়ি লক্ষ্য করে পাঁচটি হাতবোমা ফাটানো হয়।
“বিস্ফোরণে বাড়ির দ্বিতীয়তলার জানালার কাচ ভেঙে গেছে। হাতবোমার স্প্লিন্টার ছড়িয়ে পড়েছে।”
তরিকুলের বাড়িতে হাতবোমা ফাটার কিছুক্ষণ পরই বিস্ফোরণের শব্দ পাওয়া যায় উপশহরের দিক থেকে।
সেখানে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সাবেরুল হক সাবুর প্রতিবেশী সংবাদ কর্মী মিরাজুল কবির বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, বিস্ফোরণের শব্দ পেয়ে তিনি বাড়ির ছাদে ওঠেন। ১০টির বেশি মোটরসাইকেলে করে আসা বেশ কয়েকজনকে সাবুর বাড়িতে হাতবোমা ছুড়ে চলে যেতে দেখেন তিনি।
বাড়িতে দুটি হাতবোমার বিস্ফোরণ ঘটানো হয় বলে জানান তিনি।
জেলা বিএনপির সহসভাপতি গোলাম রেজা দুলু, সাংগঠনিক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন খোকন, নগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মুনীর আহম্মেদ সিদ্দিকী বাচ্চু ও বিএনপি নেতা যশোর চেম্বার অব কমার্সের সাবেক সভাপতি মিজানুর রহমান খানের বাড়ি লক্ষ্য করেও রাতে বোমাবাজি হয়।
একের পর এক বোমাবাজিতে রাতে শহরবাসীর মধ্যে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়।
সকালে কোতোয়ালি থানার এসআই মিন্টু মিয়া ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বিস্ফোরিত ককটেলের আলামত সংগ্রহ করে নিয়ে যান। তবে এ সময় সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেননি তিনি।