‘বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ডে’ দায়ীদের বিচার চান মিজান

বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ডে দায়ীদের বিচার চেয়েছেন মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মিজানুর রহমান।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 March 2015, 06:51 PM
Updated : 5 March 2015, 06:51 PM

বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার সঙ্গে দেখা করে বেরিয়ে তিনি চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে কথিত বন্দুকযুদ্ধের কয়েকটি ঘটনা তুলে ধরে তার এই অবস্থান সাংবাদিকদের কাছে তুলে ধরেন।

মিজানুর রহমান বলেন, “কিছু কিছু ক্ষেত্রে আমরা জানতে পারি যে, বন্দুকযুদ্ধের কথা বলে কোনো একটা মৃতদেহ পাওয়া গেছে। পরবর্তীতে দেখা যাচ্ছে, সেই মৃতদেহের পাশে পেট্রোল বোমা বা ককটেল রাখা হয়েছে এবং বলা হচ্ছে, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার কারণে তার মৃত্যু হয়েছে এবং বন্দুকযুদ্ধ হয়েছে।

“আমরা কিন্তু এই ব্যাপারেও তার (প্রধান বিচারপতির) দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি। এই ধরনের মৃত্যু কখনও গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।”

এক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বক্তব্যের সন্দেহাতীত প্রমাণ পাওয়া না গেলে একে বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড হিসাবে ধরে নেবেন জানিয়ে মিজানুর রহমান বলেন, “তার জন্য যারা দায়ী তাদেরকে বিচারের আওতায় আনা উচিত।

“প্রধান বিচারপতি বলেছেন, এ রকম কোনো ঘটনা আপনার নজরে এলে আপনি যদি বিচারালয়ে আসেন, তাহলে আমরা যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করব।”

মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান বলেন, তাদের চোখে এই ধরনের ঘটনা পড়লে প্রতিটি ক্ষেত্রে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে একটি করে চিঠি লেখা হয়। তদন্ত শেষে একটি প্রতিবেদন কমিশনে পাঠাতে বলা হয়।

এক্ষেত্রে আইনিভাবে আর কিছু মানবাধিকার কমিশনেরও নেই স্বীকার করে তিনি বলেন, “আজ প্রধান বিচারপতির কাছে বলেছি, স্বাধীন প্রতিষ্ঠান হিসাবে কাজ করতে গেলে আইনগত কিছু পরিবর্তন প্রয়োজন হবে। উনি বলেছেন, সুপ্রিম কোর্টের তরফ থেকে যদি কোন কিছু করার থাকে, সে ব্যাপারে উনি অবশ্যই সহযোগিতা করবেন।”

আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যদি সাদা পোশাকে কোনো নাগরিককে আটক করে, সে ক্ষেত্রে কিছু পদ্ধতি অনুসরণের পরামর্শও দেন মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান।

“যদি কোনো নাগরিককে আটক করতেই হয়, তাহলে স্থানীয় এলাকাবাসীর মধ্য থেকে অন্তত দুজনকে যেন সাক্ষী রাখা হয় এবং কারা আটক করছে, কোথায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, ন্যূনতম এতটুকু তথ্য যেন পরিবার-স্বজনদের দেওয়া হয়।”

তিনি মনে করেন, এতটুকুও মেনে চলা হয়, তাহলেও আটক বাণিজ্য বা মানুষকে হয়রানির উপদ্রব কমে যাবে।

তিনি বলেন, এক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে তা দেখার আশ্বাস প্রধান বিচারপতিও দিয়েছেন।

“আইন শৃঙ্খলা রক্ষার নামে যেন কোনো ধরনের হয়রানি বা আটক বাণিজ্য যেন চলতে না পারে, সে ব্যাপারে আমরা যদি কোনো কর্মসূচি হাতে নেই, তাতেও তার সমর্থন রয়েছেন বলে উনি আমাদেরকে জানিয়েছেন।”

আটকের ক্ষেত্রে আইনের ব্যত্যয় চোখে পড়ছে মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যানের চোখেও।

“আমরা অভিযোগ পাচ্ছি, যেখানে বলা হচ্ছে, কোনো নাগরিককে ধরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, কিন্তু বলা হচ্ছে, ধরা হয়নি। হয়ত দুই দিন-তিন দিন পরে তাকে যখন আদালতে হাজির করা হচ্ছে, তখন শুধু জানা যাচ্ছে।”

“কাগজে-কলমে দেখানো হচ্ছে, ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই যেন সব কিছু হচ্ছে। এখানে কিন্তু আইনের প্রতি অশ্রদ্ধা আমরা স্পষ্টতই লক্ষ্য করি।”