‘বাংলাদেশে গণহত্যার লক্ষ্য ছিল বাঙালি জাতিকে ধ্বংস করা’

একাত্তরে বাংলাদেশে চালানো গণহত্যার মূল উদ্দেশ্য ছিল বাঙালি জাতিকে ধ্বংস করা, যদিও তা শেষ পর্যন্ত সফল হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন ইন্টারন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন অব জেনোসাইড স্কলারস’র (আইএজিএস) প্রেসিডেন্ট ড. ড্যানিয়েল ফিয়েরস্টাইন।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 4 March 2015, 05:55 PM
Updated : 4 March 2015, 05:55 PM

“বাংলাদেশের গণহত্যা সফল হয়নি কারণ বাঙালি জাতি আজও টিকে আছে। তবে মূল লক্ষ্য সফল না হলেও সেই গণহত্যার মাধ্যমে ভীতির সঞ্চার করতে পেরেছিল হামলাকারীরা।”

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের মুজাফফর আহমেদ চৌধুরী মিলনায়তনে ‘জেনোসাইড অ্যাজ সোশাল প্র্যাকটিস’ শীর্ষক এক বক্তৃতায় একথা বলেন ফিয়েরস্টাইন।

বাংলাদেশে যে গণহত্যা চালানো হয়েছিল তার সঙ্গে আর্জেন্টিনা, কম্বোডিয়া, জার্মানিতে নাৎসিদের চালানো গণহত্যার মিল রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “গণহত্যার মূল উদ্দেশ্য হলো একটি জাতিকে ধ্বংস করে দেওয়া। এর পরও কোনো জাতির অস্তিত্ব টিকে গেলেও সমাজ বদলে যায়।

“জার্মানিতে ইহুদিদের ধ্বংস করে ফেলার উদ্দেশ্যে গণহত্যা চালানো হয়েছিল। এর মাধ্যমে ইহুদিরা ধ্বংস হয়ে যায়নি, এখনও পৃথিবীতে ইহুদিরা টিকে আছে। কিন্তু ঐতিহাসিকভাবে দুই হাজার বছর ধরে তারা যে নিষ্পেষণের ভেতরে ছিল তা তারা এখন অন্যদের ওপর ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে। এভাবে সমাজ বদলে যাচ্ছে।”

বাংলাদেশ যখন স্বাধীনতার দ্বারপ্রান্তে তখন বুদ্ধিজীবী গণহত্যার মাধ্যমে সমাজকে পঙ্গু করে দেওয়ার চেষ্টা করা হয় বলে মন্তব্য করেন আইএজিএস প্রেসিডেন্ট।

“কোনো সমাজকে নিষ্পেষণের মধ্যে রাখার জন্য, সেভাবে সমাজকে বদলে দেওয়ার জন্য, সেই সমাজকে নিঃস্ব করে দিতে হবে। সমাজকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হল ক্রিটিকাল ভাবনা। বাংলাদেশ যখন জয়ের খুব কাছাকাছি তখন এই ক্রিটিকাল ভাবনা বন্ধ করে দেয়ারই চেষ্টা করা হয়েছিল।”

বক্তৃতা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাধ বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক জিয়া হাসান ও মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি মফিদুল হক।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাধ বিজ্ঞান বিভাগের আয়োজিত এ বক্তৃতা অনুষ্ঠানে সহযোগিতায় ছিল মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর।