এ হত্যাকাণ্ড তদন্তে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তার প্রস্তাবে বাংলাদেশ সরকার সায় দেওয়ার পর এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে ঢাকায় মার্কিন দূতাবাসের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক অভিজিৎ বইমেলা চলার মাঝামাঝিতে দেশে এসে ১০ দিনের মাথায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সন্ত্রাসী হামলায় নিহত হন।
বিষয়টি নিয়ে ঢাকা দূতাবাসে নিয়োজিত এফবিআই প্রতিনিধি ‘অভিজিতের পরিবার ও পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে’ বলে দূতাবাসের মুখপাত্র মনিকা শি জানিয়েছেন।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “হত্যাকাণ্ড তদন্তে বাংলাদেশি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সহায়তার জন্য শিগগিরই এফবিআইয়ের একটি ছোট দল বাংলাদেশে আসছে।”
তিনি বলেন, ‘অন্য দেশে বসবাসরত যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের সুরক্ষা ও সহায়তা দেওয়া’ বিশ্বব্যাপী মার্কিন দূতাবাসগুলোর ‘সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব’।
“এটাকে বিবেচনায় রেখে আমরা সহায়তা দিয়ে থাকি।”
এফবিআইয়ের প্রতিনিধি দল তদন্তে কারিগরি সহায়তা দিতে পারবে বলে মনে করেন যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের মুখপাত্র।
“আইনশৃঙ্খলা নিয়ে আমাদের দুই দেশের শক্তিশালী ও দীর্ঘদিনের সহযোগিতামূলক সম্পর্কের ধারাবাহিকতায় এই তদন্তে আমাদের সহযোগিতা,” বলেন তিনি।
এফবিআই তদন্ত দল চলতি সপ্তাহেই ঢাকা আসতে পারে বলে ঢাকা মহানগর পুলিশের মুখপাত্র মনিরুল ইসলাম জানিয়েছেন।
গত ২৬ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে ৯টার দিকে বইমেলা থেকে ফেরার পথে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকায় সন্ত্রাসীর ধারালো অস্ত্রের আঘাতে আহত হন অভিজিৎ ও তার স্ত্রী রাফিদা আহমেদ বন্যা। তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার কিছুক্ষণ পর মৃত্যু হয় অভিজিতের, যিনি সাম্প্রদায়িকতা ও ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে লিখতেন।
মুক্তমনা ব্লগের প্রতিষ্ঠাতা অভিজিৎকে জঙ্গিবাদীরা হুমকি দিয়ে আসছিল বলে তার পরিবার থেকে জানানো হয়েছে। জঙ্গিবাদীরাই এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন অভিজিতের বাবা।
এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে উগ্রপন্থী ব্লগার ফারাবী শফিউর রহমানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, যার বিরুদ্ধে অভিজিৎকে হত্যার হুমকির অভিযোগ রয়েছে।
হামলায় অভিজিতের স্ত্রী বন্যাও আহত হয়েছেন। হামলাকারীর চাপাতির কোপে তার এক হাতের একটি আঙুল বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে, মাথায়ও জখম হয়েছে তার।
চিকিৎসার জন্য মঙ্গলবারই বন্যা যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশ্যে যাত্রা করতে পারেন বলে এই দম্পতির ঘনিষ্ঠ আহমেদুর রশিদ টুটুল জানিয়েছেন।
তবে বন্যার ‘ব্যক্তিগত গোপনীয়তার’ দিক বিবেচনায় নিয়ে এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছু বলেননি যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের মুখপাত্র।
“তিনি যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক হওয়ায় আমরা তাকে সম্ভাব্য সব ধরনের কনস্যুলার সহায়তা দিচ্ছি,” বলেন তিনি।