বন্যার যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশ্যে যাত্রা করার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তার শ্বশুর অধ্যাপক অজয় রায়। তবে ঠিক কোন ফ্লাইটে তিনি ঢাকা ছেড়েছেন সে বিষয়টি স্পষ্ট করতে পারেননি তিনি।
বন্যার চিকিৎসাসহ যাবতীয় বিষয় যুক্তরাষ্ট্রের ঢাকা দূতাবাস থেকে দেখভাল করা হচ্ছিল বলে জানান অজয় রায়।
সোমবার রাতে বন্যাকে স্কয়ার হাসপাতাল থেকে নিয়ে যাওয়া হয় বলে জানান তিনি।
হামলায় নিহত লেখক অভিজিতের বাবা অজয় রায় বলেন, “বন্যার সার্বক্ষণিক দেখভালের জন্য ব্যাংকক থেকে তারা একজন ডাক্তার এনে রেখেছিল বলে শুনেছি।
“সোমবার রাতে তাকে হাসপাতাল থেকে রিলিজের সময় সেখানে ছিলাম। রাতে বন্যার এক আত্মীয়ের বাসায় তাকে নিয়ে যাওয়ার কথা।
“ওই রাতে অথবা মঙ্গলবার সকালের কোনো একটি ফ্লাইটে তাকে চিকিৎসার উদ্দেশ্যে যুক্তরাষ্ট্রে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।”
স্কয়ার হাসপাতাল থেকে রাত ৯টার দিকে বন্যাকে রিলিজ দেওয়া হয় বলে হাসপাতালের তথ্য কেন্দ্র থেকে জানা গেছে।
এর আগে অভিজিৎ-বন্যার ঘনিষ্ঠ ‘শুদ্ধস্বর’ প্রকাশনীর মালিক আহমেদুর রশিদ টুটুল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বন্যা যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক হওয়ায় যুক্তরাষ্ট্র সরকারই তাকে নিয়ে যাচ্ছে। তাদের ওপর হামলার পর যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্ট থেকে বন্যার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছিল।”
গত ২৬ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে ৯টার দিকে বইমেলা থেকে ফেরার পথে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকায় সন্ত্রাসীর ধারালো অস্ত্রের আঘাতে আহত হন অভিজিৎ ও বন্যা। তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার কিছুক্ষণ পর মৃত্যু হয় অভিজিতের, যিনি সাম্প্রদায়িকতা ও ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে লিখতেন।
মুক্তমনা ব্লগের প্রতিষ্ঠাতা অভিজিৎকে জঙ্গিবাদীরা হুমকি দিয়ে আসছিল বলে তার পরিবার থেকে জানানো হয়েছে।
হামলাকারীর চাপাতির কোপে বন্যার একটি আঙুল বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে, মাথায়ও জখম হয়েছে তার।
হামলার পরদিন বন্যাকে ঢাকা মেডিকেল থেকে স্কয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়।
যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী প্রকৌশলী অভিজিতের দুটি বই প্রকাশিত হয় এবারের বইমেলায়। বইমেলার মধ্যে ১৬ ফেব্রুয়ারি দেশে এসেছিলেন অভিজিৎ ও বন্যা।
তাদের ওপর হামলার পর যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র জেন সাকি অভিজিতের হত্যাকাণ্ডকে ‘কাপুরুষতা ও বর্বরতায় ভয়ঙ্কর’ অ্যাখ্যায়িত করে এর তীব্র নিন্দা জানান।
এ হত্যাকাণ্ড তদন্তে সহায়তারও প্রস্তাব দিয়েছিলেন তিনি, যাতে সায় দিয়েছে বাংলাদেশ সরকার।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সে সময় এ ঘটনায় কনস্যুলার সুবিধা দেওয়ার কথাও বলেছিলেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞানের অধ্যাপক অজয় রায়ের ছেলে অভিজিৎ ব্লগে লেখালেখির পাশাপাশি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমে নিয়মিত লিখতেন।