যুদ্ধাপরাধ: ননী-তাহেরের বিচার শুরু

একাত্তরে যুদ্ধাপরাধের ছয় অভিযোগে নেত্রকোনার মো. ওবায়দুল হক ওরফে আবু তাহের ও আতাউর রহমান ননীর বিচার শুরুর আদেশ দিয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 March 2015, 08:47 AM
Updated : 1 Feb 2016, 05:02 AM
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় নিরস্ত্র সাধারণ মানুষকে অপহরণ, আটকে রেখে নির্যাতন, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ এবং হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে।

বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ সোমবার দুই আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে আগামী ৫ এপ্রিল সাক্ষ্য শুরুর দিন রেখেছে।

তাহের ও ননীর বিরুদ্ধে অভিযোগের মধ্যে ১৫ জন নিরীহ মানুষকে অপহরণের পর নির্যাতন করে হত্যা এবং চারশ থেকে সাড়ে চারশ বাড়ির মালামাল লুটপাট করে আগুন দেওয়ার ঘটনাও রয়েছে।

সোমবার সকালে ননী ও আবু তাহেরকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হলে তাদের সামনেই অভিযোগ পড়ে শোনান বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম।

আতাউর রহমান ননীর পক্ষে এ সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন অ্যাডভোকেট গাজী এম এইচ তামিম; ওবায়দুল হকের তাহেরের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট মো.শাহাবুদ্দীন। প্রসিকিউশনের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন সাবিনা ইয়াসমিন খান মুন্নী।

তদন্ত সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় এই দুই আসামি ‘পাকিস্তানের অখণ্ডতা’ রক্ষায় বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে অবস্থান নেন এবং পাকিস্তানি দখলদার বাহিনীকে সহযোগিতা করতে গঠিত রাজাকার বাহিনীতে যোগ দেন।

মুক্তিযুদ্ধের সময় নেত্রকোনা জেলা সদর ও বারহাট্টা থানাসহ বিভিন্ন এলাকায় মানবতাবিরোধী কর্মকাণ্ডের জন্য তারা ‘কুখ্যাত রাজাকার’ হিসেবে এলাকায় পরিচিতি পান বলে অভিযোগে বলা হয়।

এদের মধ্যে ওবায়দুল হক ওরফে আবু তাহের স্থানীয় রাজাকার বাহিনীর কমান্ডার হিসেবে আতাউর রহমান ননীসহ অন্য রাজাকার সদস্যদের নিয়ে নেত্রকোনা শহরের ভোক্তার পাড়ায় বলয় বিহারী বিশ্বাসের বাড়ি দখল করেন। সেখানে রাজাকার ক্যাম্প বসানো হয় বলে প্রসিকিউশনের তথ্য।

২০১৩ সালের ৬ জুন এ দুই আসামির বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করে প্রসিকিউশনের তদন্ত সংস্থা। এক বছর চার মাস ২৮ দিন তদন্তের পরে গতবছর ৫ নভেম্বর দেওয়া হয় তদন্ত প্রতিবেদন।

এর আগে যুদ্ধাপরাধ আদালত পরোয়ানা জারি করলে গতবছর ১২ অগাস্ট দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করে নেত্রকোনার পুলিশ।পরদিন তাদের ট্রাইব্যুনালে হাজির করে পাঠানো হয় কারাগারে।

প্রসিকিউশন এ মামলার আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিলের পর গতবছর ১১ ডিসেম্বর দুই আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ আমলে নেয় ট্রাইব্যুনাল।