‘ক্ষয় নাই তার ক্ষয় নাই’

বেয়াল্লিশ বছরের সংক্ষিপ্ত জীবনে তার বিজ্ঞানমনস্ক যুক্তিবাদী কলম লড়াই করে গেছে কুসংস্কার আর ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে, ঘাতকের হামলায় মৃত্যুর পরও লেখক অভিজিৎ রায়ের মরদেহ কাজে লাগবে গবেষণায়, চিকিৎসা বিজ্ঞানের শিক্ষায়।

ফয়সাল আতিকআশিক হোসেন ও বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 March 2015, 08:27 AM
Updated : 1 March 2015, 08:27 AM

মুক্তমনা ব্লগের প্রতিষ্ঠাতা অভিজিতের মরদেহ তার ইচ্ছা অনুযায়ী রোববার ঢাকা মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করেছে তার পরিবার। 

একুশে বই মেলা থেকে ফেরার পথে গত ২৬ ফেব্রুয়ারি রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির কাছে জঙ্গি কায়দায় হামলা চালিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয় অভিজিৎকে। তার স্ত্রী রাফিদা আহমেদ বন্যাও হামলায় আহত হন।

রোববার অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী এই লেখকের প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানায় বন্ধু, স্বজন, শুভানুধ্যায়ী এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও বিভিন্ন সংগঠনের কর্মীরা।

শ্রদ্ধা নিবেদনের পর অভিজিতের মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় তার বাবা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিদ্যার অধ্যাপক অজয় রায়ের সিদ্ধেশ্বরীর বাসায়। এ সময় সেখানে আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়।

দুপুরে সেখান থেকে মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। কলেজের অ্যানাটমি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক শামীম আরার কাছে ছেলের মরদেহ তুলে দেন অধ্যাপক অজয় রায়।

এ সময় অভিজিতের কফিনে কান্নায় ভেঙে পড়েন তার ছেলেবেলার বন্ধু, ভাই-বোন, স্বজনরা।

অধ্যাপক অজয় রায় চিকিৎসকদের বলেন, “ছেলের ইচ্ছা অনুযায়ী লাশ আপনাদের কাছে দিয়ে গেলাম। আশা করি তা চিকিৎসাবিদ্যার কাজে ব্যবহৃত হবে।”

প্রকৌশলী অভিজিৎ যুক্তরাষ্ট্রের একটি সফটওয়্যার কোম্পানিতে কাজ করছিলেন। স্ত্রীকে নিয়ে গত ১৬ ফেব্রুয়ারি দেশে আসার পর প্রতিদিনই বইমেলায় যাচ্ছিলেন।

এ পর্যন্ত প্রকাশিত তার ডজনখানেক বইয়ের বেশিরভাগই বিজ্ঞান, দর্শন, বস্তুবাদ নিয়ে লেখা। পত্রিকায় নিয়মিত লেখার পাশাপাশি তিনি ব্লগেও লিখতেন। লেখালেখির কারণে ধর্মীয়উগ্রবাদীদের হুমকিও পেতে হয়েছিল অভিজিৎকে।

তার তার পিসতুতো ভাই (ফুফাতো) বিষ্ণু রায় জানান, এসএসসি ও এইচএসসি পাসের পর ১৯৯০ সালে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) ভর্তি হন অভিজিৎ। যন্ত্র প্রকৌশলে লেখাপড়ার পর কর্মজীবন শুরু করেন অটবিতে।

চাকরিরত অবস্থায় বৃত্তি নিয়ে পিএইচডি করতে সিঙ্গাপুরে যান অভিজিৎ। পরে পাড়ি জমান যুক্তরাষ্ট্রে। সেখানে তিনি জিপিএস প্রযুক্তির গবেষণায় যুক্ত ছিলেন।

</div>  </p>