অভিজিতের খুনিদের দ্রুত গ্রেপ্তার দাবি

লেখক অভিজিৎ রায়ের খুনিদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন সাংস্কৃতিক কর্মীরা।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 Feb 2015, 04:40 PM
Updated : 28 Feb 2015, 04:40 PM

শনিবার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি প্রাঙ্গণে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট আয়োজিত সমাবেশে এ দাবি এসেছে।

এছাড়াও সমাবেশ থেকে বিচারের দাবিতে আগামী ৬ মার্চ সকাল ১১টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গণঅবস্থান ও অনশন কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দেওয়া হয়।

সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটে ব্যানারে ‘মুক্তচিন্তার লেখক অভিজিৎ রায়ের হত্যাকারীদের শাস্তি চাই’ এই প্রতিবাদ সমাবেশ আয়োজন করা হয়।

সমাবেশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য অধ্যাপক আরেফিন সিদ্দিক বলেন, “অভিজিৎ ও তার স্ত্রী বন্যার একটি অপরাধ ছিল, তারা ছিলেন স্বাধীন বাংলাদেশ, ভাষা আন্দোলন ও প্রগতির পক্ষে। যারা এসবের বিপক্ষে তারাই এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে।”

আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা ও হত্যাকাণ্ড পুনরাবৃত্তি রোধ করতে দোষীদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনারও দাবি জানান তিনি।

সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ বলেন, “ধর্মীয় মৌলবাদ, সাম্প্রদায়িক শক্তি এবং স্বাধীনতা বিরোধী শক্তিকে চূড়ান্তভাবে পরাজিত করতে স্বাধীনতার স্বপক্ষের সব শক্তিকে সর্বশক্তি নিয়ে রাজপথে নামতে হবে।”

অধ্যাপক হুমায়ুন আজাদ, ব্লগার রাজীব হায়দার, অধ্যাপক শফিউল, অভিজিৎ রায় সহ মৌলবাদীদের হামলায় নিহত সকল ব্যক্তিদের হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান তিনি।

জোটের সাবেক প্রধান নাসির উদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু বলেন, “প্রতিটি নাগরিকের নিরাপত্তা দেওয়ার দায়িত্ব সরকারের। সেজন্যই আমরা তাদেরকে নির্বাচিত করেছি। অথচ তাদের এ ব্যর্থতা সারা বাংলাদেশকে টালমাটাল করে দিয়েছে।”

সাধারণ সম্পাদক হাসান আরিফ বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রাঙ্গণে প্রগতিশীল ও মুক্তমনা মানুষ অভিজিৎকে হত্যা করা হয়েছে। এর পাশেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছিলেন। কিন্তু সেই নিরাপত্তা বেষ্টনীর মধ্যে মধ্যযুগীয় কায়দায় তাকে হত্যা করা হয়েছে। এটি কখনোই মেনে নেওয়া যায় না।”

সম্মিলিত সাংস্কুতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপক আনোয়ার হোসেন, পেশাজীবী সমন্বয় পরিষদের মহাসচিব ডা. কামরুল হাসান, গণসংগীত সমন্বয় পরিষদের সভাপতি ফকির আলমগীর, পথনাটক পরিষদের সভাপতি মান্নান হীরা, নাট্যশিল্পী আফরোজা বানু, গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক আখতারুজ্জামান, নাট্য ব্যাক্তিত্ব মামনুর রশীদ ও আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদের সভাপতি মন্ডলীর সদস্য রফিকুল ইসলাম প্রমুখ।

এদিকে অভিজিৎ রায়ের মরদেহ রোববার সকাল ১০টায় অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে সর্ব সাধারণের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য রাখা হবে বলে জানিয়েছেন তার মামাতো ভাই বিষ্ণু রায়।

ইতোমধ্যে এ হত্যাকাণ্ডকে ‘কাপুরুষোচিত’ অ্যাখ্যায়িত করে এর তীব্র নিন্দা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। দোষীদের চিহ্নিত করতে প্রয়োজনে তদন্তকাজে সহায়তার প্রস্তাবও দিয়েছে তারা।

বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত লেখক অভিজিৎ যুক্তরাষ্ট্রেরও নাগরিক। প্রযুক্তিবিদ্যা ও যন্ত্রকৌশলের এই বিশেষজ্ঞ যুক্তরাষ্ট্রের একটি আইটি কোম্পানিতে কাজ করতেন।