অভিজিৎ হত্যা তদন্তে সহায়তার প্রস্তাব যুক্তরাষ্ট্রের

লেখক অভিজিৎ রায়ের হত্যাকাণ্ডকে ‘কাপুরুষোচিত’ অ্যাখ্যায়িত করে এর তীব্র নিন্দা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 Feb 2015, 03:29 AM
Updated : 28 Feb 2015, 07:00 AM

বাংলাদেশ চাইলে এ হত্যাকাণ্ড তদন্তে যুক্তরাষ্ট্র সহায়তা দিতে প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকায় বৃহস্পতিবার রাতে দুর্বৃত্তের ধারাল অস্ত্রের আঘাতে নিহত হন প্রকৌশলী অভিজিৎ, যিনি যুক্তরাষ্ট্রে কর্মরত ছিলেন।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র জেন সাকি শুক্রবার নিয়মিত ব্রিফিংয়ে অভিজিতের হত্যাকাণ্ডকে ‘কাপুরুষতা ও বর্বরতায় ভয়ঙ্কর’ বলে বর্ণনা করেন।

এ হত্যাকাণ্ডের নিন্দা জানিয়েই শুরু হয় এদিনের ব্রিফিং।

মুখপাত্র বলেন, “এটা শুধু একজন ব্যক্তির ওপর হামলা নয়, মুক্তবুদ্ধি চর্চা ও ধর্ম নিরপেক্ষতার সার্বজনীন নীতি, যা বাংলাদেশের সংবিধানে সুরক্ষিত ও দেশটির ঐতিহ্য তার ওপর কাপুরুষোচিত হামলা।

“অভিজিৎ ছিলেন একজন সাংবাদিক, একজন মানবতাবাদী, একজন স্বামী ও একজন বন্ধু এবং আমরা তার পরিবার ও বন্ধুদের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি।

“মর্মান্তিক সহিংস কর্মকাণ্ডে তাকে আমাদের কাছ থেকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।”

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “এ বিষয়ে আমাদের কাছে খুব বেশি তথ্য নেই। আমরা অবশ্যই বিধি মোতাবেক কনস্যুলার সহায়তা দেব।

“যদি চাওয়া হয় তাহলে তদন্তে সহায়তার জন্যও আমরা প্রস্তুত।”

“স্পষ্টত, আমরা তার অতীত সম্পর্কে জানি, যে কারণে আমি এটা বলেছি। তবে এ হত্যাকাণ্ডের উদ্দেশ্য সম্পর্কে বলার মতো আমাদের কাছে কিছু নেই।”

যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী অভিজিৎ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞানের অধ্যাপক অজয় রায়ের ছেলে।

জনপ্রিয় ব্লগ মুক্তমনার প্রতিষ্ঠাতা অভিজিৎ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমে নিয়মিত লিখতেন। এবারের বইমেলায় একটি বইও বেরিয়েছে তার।

সাম্প্রদায়িকতা ও ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে লেখালেখির কারণে ধর্মীয় উগ্রবাদীদের হুমকি পেয়েছিলেন তিনি।

বইমেলা চলার মধ্যে গত ১৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকা আসেন অভিজিৎ। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে স্ত্রী রাফিদা আহমেদ বন্যাকে নিয়ে বইমেলা থেকে ফেরার পথে টিএসসি এলাকায় মিলনচত্বরের উল্টোদিকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান সংলগ্ন ফুটপাতে হামলার শিকার হন তিনি।

গুরুতর আহত অবস্থায় ঢাকা মেডিকেলে নেওয়া হলে কিছুক্ষণ পর চিকিৎসকরা অভিজিৎকে মৃত ঘোষণা করেন। হামলায় তার স্ত্রী বন্যাও আহত হয়েছেন। চাপাতির আঘাতে তার হাতের একটি আঙুল পড়ে গেছে, মাথায়ও জখম হয়েছেন তিনি।

এ ঘটনায় শাহবাগ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন অভিজিতের বাবা অজয় রায়।

মামলায় কারো নাম উল্লেখ করা না হলেও ধর্মীয় উগ্রবাদীরাই এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে বলে মনে করছেন তিনি।

“আমার ছেলেকে হত্যার জন্য উগ্র জঙ্গিবাদীরাই দায়ী। এদের মদদ দিয়েছে জামায়াত,” বলেন তিনি।