এ হত্যাকাণ্ডে জঙ্গিবাদীরা জড়িত থাকতে পারে বলে সন্দেহের কথা বলেছেন পুলিশ কর্মকর্তারা। কিন্তু এক দিন পেরিয়ে গেলেও তদন্তের কোনো অগ্রগতি হয়নি।
বৃহস্পতিবার রাত একুশে বইমেলা থেকে ফেরার পথে শাহবাগ থানা থেকে দুইশ গজ দূরে ফুটপাতে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয় মুক্তমনা ব্লগের প্রতিষ্ঠাতা অভিজিতকে। হামলায় তার স্ত্রী রাফিদা আহমেদ বন্যাও আহত হন।
শুক্রবার রাত ১০টায় শাহবাগ থানার ওসি সিরাজুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, মামলাটি গোয়েন্দা পুলিশ তদন্ত করলেও থানার পক্ষ থেকে তাতে সহায়তা করা হচ্ছে।
“আমার জানা মতে এখন পর্যন্ত তদন্তে কোনো অগ্রগতি নেই। কেউ গ্রেপ্তারও হয়নি।”
একই কথা জানিয়েছেন গোয়েন্দা পুলিশের উপ কমিশনার কৃষ্ণপদ রায়। বাড়তি কোনো তথ্য তিনি দিতে পারেননি।
র্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক জিয়াউল আহসান জানান, পুলিশের মতো তারাও বিষয়টি খতিয়ে দেখছেন।
“আমরাও বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো এলাকায় যেখানে আমরা কাউকে গ্রেপ্তার করতে গেলেও হাজার দিক চিন্তা করতে হয়, সেখানে তারা এতো মানুষের মধ্যে হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে গেল।”
এ ঘটনায় শুক্রবার সকালে শাহবাগ থানায় অজ্ঞাত পরিচয় আসামিদের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন অভিজিতের বাবা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক অজয় রায়। তার ধারণা, ‘উগ্র জঙ্গিবাদীরা’ এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত।
একই কথা বলেছেন, ঢাকার পুলিশ কামিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া। তার ভাষায়, জঙ্গিরা কতোটা ‘ডেসপারেট’ হতে পারে তার প্রমাণ তারা দিয়ে গেছে চারপাশে পুলিশের উপস্থিতির মধ্যে এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে।
লেখক হুমায়ুন আজাদের ওপর হামলা, ব্লগার রাজিব ও অভিজিত হত্যার ঘটনা ‘একই সূত্রে গাঁথা’ বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
ওই টুইটে বলা হয়, “আল্লাহু আকবর.. বাংলাদেশে আজ একটি বিশাল সাফল্য এসেছে। টার্গেট ইজ ডাউন..”
তাদের আরেক টুইটে অভিজিৎ ও তার স্ত্রীর একটি ছবি শেয়ার করে বলা হয়েছে, “ইসলামের বিরুদ্ধে ‘অপরাধের’ জন্য ইসলামবিরোধী ব্লগার আমেরিকান বাঙালি অভিজিৎ রায়কে রাজধানী ঢাকায় হত্যা করা হয়েছে।”
এ হত্যাকাণ্ডের পর ফারাবী শফিউর রহমানের নামও সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে আলোচনায় এসেছে, যিনি অনলাইনে বাংলা বই বিক্রির ওয়েবসাইট ‘রকমারি ডটকম’ এর বিক্রির তালিকা থেকে অভিজিৎ রায়ের বই সরিয়ে নিতে হামলার হুমকি দিয়েছিলেন।
শাহবাগের ওসি সিরাজুল ইসলাম বলেন, “প্রাথমিকভাবে সন্দেহ জঙ্গিদের দিকেই যাচ্ছে। আমরা সব দিক খতিয়ে দেখছি।”