অভিজিৎ হত্যার প্রতিবাদ চট্টগ্রামে

লেখক অভিজিৎ রায়ের হত্যার প্রতিবাদে চট্টগ্রামে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মশাল মিছিল করেছে বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠন।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 Feb 2015, 04:33 PM
Updated : 27 Feb 2015, 04:33 PM

শুক্রবার বিকাল ৪টায় চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সামনে ‘সর্বস্তরের সাংস্কৃতিক কর্মী ও সচেতন নাগরিক সমাজ’ ব্যানারে এ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।

সমাবেশে কবি-সাংবাদিক আবুল মোমেন বলেন, বিশ্বব্যাপী সাম্প্রদায়িক জঙ্গিবাদের উত্থান হয়েছে। বাংলাদেশেও সাম্প্রদায়িক মৌলবাদ থাবা বিস্তার করছে।

“এ অবস্থার মোকাবেলা করতে হলে রাজনৈতিক ও সামাজিকভাবে মোকাবেলা করতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে জঙ্গিবাদ উৎখাতে একযোগে কাজ করতে হবে।”

কবি কামরুল হাসান বাদল বলেন, অভিজিৎ রায়ের হত্যার প্রেক্ষাপট একদিনে রচিত হয়নি।

“যদি জিয়া হায়দারকে দেশ ছেড়ে যেতে না হতো। যদি তসলিমা নাসরিনকে দেশ ছাড়তে না হতো। যদি হুমায়ূন আজাদ ও রাজীব হায়দারের হত্যার বিচার হতো, তাহলে অভিজিৎকে মরতে হত না।”

কামরুল হাসান বলেন, বাংলাদেশে কোনো সাম্প্রদায়িক সহিংসতার বিচার হয়নি। সাম্প্রদায়িক শক্তি জঙ্গিবাদীরা তাই শক্তিশালী হয়েছে। এর বিরুদ্ধে সব শুভ বুদ্ধির মানুষকে একযোগে লড়তে হবে।

সমাবেশে প্রকৌশলী দেলোয়ার মজুমদার বলেন, যুক্তির বিপক্ষে হত্যা আর অস্ত্রের ঝনঝনানি শুরু হয়েছে। কিন্তু জঙ্গিরা জানে না অস্ত্র দিয়ে যুক্তিকে ঠেকানো যাবে না।

“রাতের অন্ধকারে পেছন থেকে হামলা চালিয়ে মানুষ হত্যা করে জঙ্গিরা ত্রাসের সৃষ্টি করতে চায়। বাঙালি জাতি সুসজ্জিত সেনাবাহিনীকে পরাজিত করে দেশ স্বাধীন করেছে। এতো সহজে তারা পিছু হটবে না।”

সমাবেশে বক্তব্য রাখেন উদীচীর কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি চন্দন দাশ, উদীচী চট্টগ্রাম জেলার সাধারণ সম্পাদক শীলা দাশ, শিল্পী রাশেদ হাসান এবং ছাত্র ইউনিয়নসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা।

এরপর অভিজিৎ রায়ের হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবি জানিয়ে একটি মশাল মিছিল বের হয়। মিছিলটি নগরীর বিভিন্ন সড়ক ঘুরে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গিয়ে শেষ হয়।

বৃহস্পতিবার রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকায় সন্ত্রাসীদের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে নিহত হন যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী প্রকৌশলী অভিজিৎ।

লেখালেখি নিয়ে মুক্তমনা ব্লগের প্রতিষ্ঠাতা অভিজিৎকে হত্যার হুমকি দিয়ে আসছিল জঙ্গিবাদীরা।

হামলায় তার স্ত্রী ব্লগার রাফিদা আহমেদ বন্যাও গুরুতর আহত হয়েছেন। বর্তমানে তিনি রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

অভিজিৎ ও বন্যার ওপর কারা হামলা চালিয়েছে, সে বিষয়ে এখনো কিছু বের করতে পারেনি পুলিশ। এ ঘটনায় এখনো কাউকে গ্রেপ্তারও করা হয়নি।

২০০৪ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি বইমেলা থেকে বের হওয়ার পথে একইভাবে চাপাতি দিয়ে লেখক হুমায়ুন আজাদের ওপর হামলা হয়েছিল। ওই হামলায় জঙ্গিরা জড়িত ছিল বলে পরে তদন্তে বেরিয়ে আসে।

২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ব্লগার আহমেদ রাজীব হায়দারকেও রাজধানীর মিরপুরে তার বাড়ির সামনে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছিল। ওই হত্যাকাণ্ডেও জঙ্গিবাদীদের সম্পৃক্ততার প্রমাণ মিলেছে।