পাশপাশি বিরোধীদের শান্তিপূর্ণ কর্মকাণ্ডের পরিবেশ তৈরিতে সরকারের দায়িত্ব রয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
বৃহস্পতিবার ওয়াশিংটন ডিসিতে মধ্য ও দক্ষিণ এশিয়া নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের হালনাগাদ নীতির বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব আহ্বান জানান তিনি।
বাংলাদেশের রাজনৈতিক সহিংসতা অবসানে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্যোগের বিষয়ে এক সাংবাদিক জানতে চাইলে নিশা দেশাই বলেন, “রাজনৈতিক সহিংসতার বিষয়ে আমাদের গভীর উদ্বেগ রয়েছে। প্রতিটি রাজনৈতিক দলেরই দায়িত্ব হচ্ছে- সব ধরনের সহিংসতা বর্জন করা।
“সরকারের পক্ষে বিরোধী দলের কার্যক্রম শান্তিপূর্ণভাবে চালানোর পরিবেশ তৈরি করাটাও সমান গুরুত্বপূর্ণ। এভাবেই সকলকে রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় অন্তর্ভুক্তির পন্থা অবলম্বন করার দায়িত্ব সরকারকে নিতে হবে।
গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশে কার্যকর একটি বিরোধী রাজনৈতিক দল থাকাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে মন্তব্য করেন এই যুক্তরাষ্ট্রের এই কর্মকর্তা।
সংবাদ সম্মেলনে দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে আদালতের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি ও নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্নাকে সেনা বাহিনীকে উসকানির মামলায় গ্রেপ্তারের বিষয়টি তুলে ধরেন দুই সাংবাদিক।
উত্তরে প্রায় একই ধরনের বক্তব্য তুলে ধরেন যুক্তরাষ্ট্রের সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
নিশা দেশাই বলেন, “এই বিষয়ে সুনির্দিষ্টভাবে কোনো কিছু বলার সুযোগ নেই, ধারণাপ্রসূতভাবে কিছু বলতে চাই না। তবে আমরা আশা করছি, অভিযোগ গঠন যাতে আইনগত সব প্রক্রিয়া যথাযথভাবে অনুসরণ করেই করা হয়।”
মান্নার প্রেপ্তারের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “আমি ব্যক্তি বিশেষের মামলার ব্যাপারে কিছু বলতে চাই না। কী কারণে কিংবা কোনো পরিস্থিতিতে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে তা নিয়ে বিস্তারিত জানা নেই।
“তবে আমি যুক্তরাষ্ট্রের আগের অবস্থানই ব্যক্ত করতে চাই যে, বাংলাদেশের মতো গণতান্ত্রিক একটি রাষ্ট্রে গণমাধ্যমের মৌলিক স্বাধীনতার প্রয়োজন রয়েছে এবং গণতান্ত্রিক পরিবেশে সুশীল সমাজের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ থাকতে হবে।”
বাংলাদেশের সামগ্রিক পরিস্থিতিতে এসবই যুক্তরাষ্ট্রের প্রত্যাশা বলে উল্লেখ করেন নিশা।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরির বক্তব্যের ধারাবাহিকতায় নিশাও বাংলাদেশের পরিস্থিতিকে ‘অভ্যন্তরীণ’ উল্লেখ করে বলেন, “এটি এমন একটি বিষয় যা অভ্যন্তরীণভাবেই নিষ্পত্তি করা দরকার।
“ইতিপূর্বে পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি বলেছেন, উদ্ভূত পরিস্থিতির শান্তিপূর্ণ সমাধানে প্রয়োজনে যে কোনো সহায়তা দিতে যুক্তরাষ্ট্র প্রস্তুত রয়েছে।
“আমরা নিয়মিতভাবে বাংলাদেশ সরকার, বিরোধী পক্ষ ও সুশীল সমাজের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলেছি। তবে এটি একটি মৌলিক বিষয়, যার নিষ্পত্তি অভ্যন্তরীণভাবেই হওয়া উচিত।”
সংবাদ সম্মেলনে এর আগে ভারত, শ্রীলংকা, মালদ্বীপ, জাপান, কাজাকিস্তান ও পাকিস্তানের বিষয় তুলেন ধরেন নিশা দেশাই।
এছাড়া সম্প্রতি প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার ভারত সফরের পর দিল্লী-ওয়াশিংটন সম্পর্কে অভূতপূর্ব উন্নয়ন হয়েছে বলে উল্লেখ করেন নিশা।