‘সবার সাথেই কথা’ চায় মান্নার দল

চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে সেনাবাহিনীর জেনারেলদের সঙ্গে কথা বলার আগ্রহ প্রকাশ করে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়া মাহমুদুর রহমান মান্নার দল নাগরিক ঐক্য বলেছে, ‘রাজনীতির প্রয়োজনে সবার সাথে’ কথা বলতে চায় তারা।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 Feb 2015, 06:21 AM
Updated : 24 Feb 2015, 07:19 AM

মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে একথা বলেন নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ইফতেখার আহমেদ বাবু।

তিনি বলেন, “সেনাবাহিনীর কোন কোন কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলার প্রস্তাব নিয়েও পরিস্থিতি ঘোলা করা হচ্ছে। রাজনীতির প্রয়োজনে সবার সাথে কথা বলা দরকার। এর সঙ্গে এক এগারোর বা অন্য কোনো ষড়যন্ত্রের অবিষ্কার দুরভিসন্ধিমূলক।

“চলমান রাজনৈতিক সংকট উত্তরণের জন্য আমরা জাতীয় সংলাপের মাধ্যমে শান্তির প্রস্তাব দিয়েছি। এ দাবিতে বিভিন্ন ধরনের কর্মসূচি পালন করছি। এর মধ্যে দুটি কথোপকথন নিয়ে নতুন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়।”

ফাঁস হওয়া টেলিফোন কথোপকথনে মান্নাকে বিএনপি জোটের আন্দোলন জোরদার করতে বিশ্ববিদ্যালয়ে লাশ ফেলার কথা বলতে শোনা গেলেও তার দলের এই নেতা বলেছেন, তারা কখনো সন্ত্রাস-সহিংসতা চান না।  

“গণতন্ত্রের দাবিতে আন্দোলনে আমরা সব সময়ই তৎপর আছি। কখনো সন্ত্রাস-সহিংসতাকে সমর্থন করি না। এ থেকে বেরিয়ে আসার জন্য ব্যাপক জনগণকে সংযুক্ত করার চেষ্টাও করছি আমরা।”

বিশ্ববিদ্যালয় ‘দুই-তিনটা লাশ ফেলার’ যে কথা মান্নার টেলিফোন আলাপে শোনা গেছে সে বিষয়ে তার অনুসারী ইফতেখার বলেন, “আমাদের দেশে ছাত্ররা সব সময়ই আন্দোলন সংগ্রামে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে। তাই বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ছাত্র আন্দোলন প্রতিষ্ঠিত ও বিস্তৃত করা খুবই জরুরি। দেশের বর্তমান অবস্থায় এটা কীভাবে সম্ভব, তা নিয়েই মান্না কথা বলেছিলেন।

“কিন্তু সেই বক্তব্যকে বিকৃতভাবে ব্যাখ্যা করে তার বিরুদ্ধে লাশ চাওয়ার অভিযোগ তোলা হয়েছে।”

মান্নার অবর্তমানে সংলাপের জন্য কাজ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।

ইফতেখার বলেন, “মান্নাকে গ্রেপ্তার ও অস্বীকার করার মধ্যে কোনো গভীর ষড়যন্ত্র কাজ করছে কি না, ভেবে দেখার বিষয়। আমরা অবিলম্বে মান্নার বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রচারণা বন্ধ ও তার আটকের কারণ জানতে চাই। বৃহত্তর স্বার্থে তার মুক্তিও কামনা করছি।”

চলমান রাজনৈতিক সংকট নিরসনে জাতীয় সংলাপের অন্যতম উদ্যোক্তা মান্নার টেলিফোন আলাপের দুটি অডিও ক্লিপ নিয়ে সোমবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমে সংবাদ প্রকাশ হয়।

অডিওতে মান্নাকে চলমান পরিস্থিতিতে সেনা হস্তক্ষেপের উদ্যোগে আগ্রহ প্রকাশ করতে শোনা যায়। পাশাপাশি বিএনপি জোটের আন্দোলন জোরদারে বিশ্ববিদ্যালয়ে লাশ ফেলার কথাও বলতে শোনা যায় তাকে।

এ নিয়ে খবর প্রকাশের পর সোমবার আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন মহল থেকে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। তাকে গ্রেপ্তারের দাবি তোলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

মঙ্গলবার ভোররাতে বনানীর একটি বাসা থেকে সাদা পোশাকের কয়েকজন লোক মান্নাকে ধরে নিয়ে গেছে বলে তার পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে।

তবে তাকে আটক বা গ্রেপ্তার কোনোটাই করা হয়নি বলে ঢাকা মহানগর পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে।