এর মধ্যে গাইবান্ধায় পুলিশ পাহারার মধ্যে যাত্রীবাহী বাসে হামলায় দুই শিশুসহ পাঁচজন নিহত হয়েছেন। আর বরিশালে প্রাণ হারিয়েছেন ট্রাকচালকসহ তিনজন।
শুক্রবার রাত ১১টা থেকে শনিবার ভোরের মধ্যে এই দুটি হামলার ঘটনা ঘটে।
গাইবান্ধা সদর থানার ওসি রাজিউর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, সদর উপজেলার তুলশীঘাট পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের সামনে শুক্রবার রাত ১১টার দিকে বোমা হামলায় পাঁচজন নিহত হন।
নিহতরা হলেন- গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ কালির খামার গ্রামের খয়বর হোসেনের ছেলে সৈয়দ আলী (৪২), একই উপজেলার কঞ্চিবাড়ী মধ্যপাড়া খামার গ্রামের বলরাম দাসের মেয়ে শিল্পী রাণী (১০), চণ্ডিপুর গ্রামের শাহজাহান আলীর ছেলে সুমন (২২), পশ্চিম সীচা গ্রামের সাঈদ মিয়ার স্ত্রী হালিমা বেগম (৪০) এবং চণ্ডিপুর গ্রামের তারা মিয়া মিয়ার ছেলে সুজন (১১)।
রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. মারুফুল ইসলাম জানান, সেখানে অগ্নিদগ্ধ ১৯ জনকে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় সুজনের মৃত্যু হয়।
গাইবান্ধা সদর হাসপাতালেরর আবাসিক মেডিকেল চিকিৎসক আবু হানিফ জানান, ঘটনাস্থলে মারা যান তিনজন এবং গাইবান্ধা সদর আধুনিক হাসপাতালে মারা যান একজন।
গাইবান্ধার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোশাররফ হোসেন জানান, রাত সাড়ে ৯ টার দিকে সুন্দরগঞ্জ উপজেলার সীচা থেকে ৪০/৫০ জন যাত্রী নিয়ে নাপু পরিবহনের বাসটি ঢাকায় যাচ্ছিল।
“গাইবান্ধা সদর কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে আসার পর সেখান থেকে পুলিশ পাহারায় আরও কিছু যানবাহনের সাথে একযোগে ঢাকার পথে রওনা দেয়। পথে অবরোধকারীরা পেট্রোল বোমা ছুড়ে মারে।”
সদর থানার ওসি রাজিউর বলেন, বাসটির দরজা বন্ধ ছিল। একারণে পেট্রোল বোমা ছুড়ে মারার পর যাত্রীরা বিকল্প পথ হিসাবে জানালা ভেঙে বের হওয়ার চেষ্টা করেন। এতে মাত্র ৬/৭ জন বের হতে পারলেও বাকিরা প্রায় সবাই আগুনে দগ্ধ হন।
এর কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে ভোরে বরিশালের গৌরনদীতে ট্রাকে একই ধরনের হামলায় তিনজন নিহত হন।
নিহতরা হলেন- ট্রাকচালক ইজাজুল ইসলাম (৩৫),সহকারি মন্নু মিয়া (৪৫) এবং ইজাজুলের আত্মীয় মোতালেব শেখ (৬৫)। তিনজনের বাড়িই ফরিদপুরে ।
বরিশালের পুলিশ সুপার এ কেম এম এহসান উল্লাহ জানান, পোল্ট্রি খাবারবাহী ট্রাকটি গাজীপুরের বাঘেরবাড়ি থেকে বরিশাল যাওয়ার পথে ভোর সাড়ে ৫টার দিকে গৌরনদীর মাহিলারা এলাকায় বাটাজোর বাজারের কাছে আক্রান্ত হয়।
পেট্রোল বোমায় ট্রাকে আগুন ধরে গেলে চালক ও তার সঙ্গে থাকা দুইজন নিহত হন বলে জানান তিনি।
“ট্রাকটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কের পাশে একটি গাছের সঙ্গে ধাক্কা লাগলে এর সামনের অংশ দুমড়েমুচড়ে যায়।”
পরে স্থানীয়দের সহায়তায় ফায়ার সার্ভিসকর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রনে আনে।
লাশ উদ্ধার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রাখা হয়েছে বলে জানান পুলিশ সুপার।
এক মাস ধরে চলা বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের অবরোধে যানবাহনে ছোড়া পেট্রোল বোমায় পুড়ে এ পর্যন্ত অর্ধশতাধিক মানুষ নিহত হয়েছেন।