বিএনপি নেতার পায়ে পুলিশের গুলির অভিযোগ

যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক খোরশেদ আলমের (৬৮) পায়ে গুলি করার অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে।

যশোর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 Feb 2015, 04:06 PM
Updated : 1 Feb 2015, 05:31 PM

খোরশেদ আলমের স্ত্রী ও বোনেরা জানান, শনিবার রাতে পুলিশ ও স্থানীয় কিছু যুবক খোরশেদের চালকলে আগুন দেয় এবং রোববার সকালে তাকে তুলে নিয়ে পায়ে গুলি করে জখম করে।

তবে, চালকলে আগুন দেওয়া ও গুলি করার কথা পুলিশ অস্বীকার করেছে।

পুলিশের দাবি, শনিবার রাতে চাল বোঝাই ট্রাক ও প্রাইভেটকারে আগুন দেওয়ার ঘটনায় স্থানীয়রা খোরশেদকে মারধর করে এবং পুলিশ গিয়ে তাকে উদ্ধার করে।

রোববার বিকাল ৪টা ৪৮ মিনিটে হাঁটুতে জখম অবস্থায় তাকে হাসপাতালে আনে পুলিশ। সেখানে তিনি পুলিশ পুলিশের হেফাজতে রয়েছেন।

খোরশেদ আলমের স্ত্রী তাহমিনা বেগম ও বোন জাহানারা বেগম জানান, শনিবার রাত ১২টার দিকে খরশেদের রাইস মিল ও ধানের চাতালে আগুন দেয় পুলিশ ও স্থানীয় কিছু যুবক।

এরপর সকালে আগুনের খবর পেয়ে রাইস মিলে গেলে সেখান থেকে খোরশেদকে পুলিশ তুলে নিয়ে যায়।

তাহমিনা বেগম বলেন, তিনি ও তার স্বামীর দুই বোন বেলা ১১টার দিকে কোতোয়ালি থানায় গিয়ে খোরশেদ আলমের সঙ্গে দেখা করেছেন। ওই সময় তাকে পুলিশ হেলমেট ও জ্যাকেট পরিয়ে গাড়িতে তুলছিল।

কোথায় নেওয়া হচ্ছে জানতে চাইলে আদালতে নেওয়া হচ্ছে বলে পুলিশ তাদের জানায়।

কিন্তু বিকালে তারা খবর পান পুলিশ পায়ে গুলি করে তাকে হাসপাতালে নিয়ে এসেছে।

এর আগে বিকালে খোরশেদ তাহমিনা ও খোরশেদের দুই বোন প্রেসক্লাব যশোরে এক সংবাদ সম্মেলনে খোরশেদ পুলিশ হেফাজতে ছিলেন বলে দাবি করেন।

এদিকে যশোর কোতোয়ালি থানার ওসি ইনামুল হক জানান, শনিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে ওই মিল এলাকার অদূরে যশোর সদরে  নতুন হাট কলেজের সামনে চাল বোঝাই একটি ট্রাক ও একটি প্রাইভেটকারে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা।

ওই আগুন দেওয়ার মামলায় খোরশেদ আলম ১ নম্বর আসামি। তার নেতৃত্বে প্রাইভেটকার ও ট্রাকে আগুন দেওয়া হয়। ওই মামলায় তিনি এখন গ্রেপ্তার আছেন।

ওসি বলেন, এতে স্থানীয় জনতা ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে ধরে নতুনহাট এলাকার একটি বিলের মধ্যে মারপিট করেছে।

খবর পেয়ে রোববার বিকাল ৩টার দিকে এসআই বিধান তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসেন বলে জানান ওসি।

এদিকে খোরশেদ আলমকে হাসপাতালে নেওয়ার পর জরুরি বিভাগের চিকিৎসক আক্তারুজ্জামান মীর্জা জানান, জখম দেখে মনে হচ্ছে গুলিতে জখম।

চিকিৎসক এ মন্তব্য করেছেন জেনে যশোর কোতোয়ালি থানার ওসি ইনামুল হক হাসপাতালের জরুরি বিভাগে গিয়ে চিকিৎসককে গালাগাল করেন এবং চাকরির ভয় দেখান।  

চিকিৎসক আক্তারুজ্জামান মীর্জা বলেন, ওসি তাকে জিজ্ঞেস করেন কেন তিনি খাতায় ‘পাবলিক এসল্ট’ লিখে আবার গুলি বলে ধারণার কথা বলছেন।

এ বিষয়ে ওসি ইনামুল হক বলেন, চিকিৎসক তার খাতায় যেটা লিখবেন সেটাই বলবেন। ধারণার কথা বলবেন কেন?

ওই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে তিনি উপমহাপরিদর্শকের (ডিআইজি) কাছে অভিযোগ করেছেন বলে জানান।

শনিবার রাতে খোরশেদ আলমের চালকল ও চাতালে আগুন ধরে অন্তত চার হাজার বস্তা চাল ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সকালে এ খবর শুনে চালকলে যাওয়ার পর পুলিশ তুলে নিয়ে যায় বলে খোরশেদের পরিবার জানায়।

বিকালে পায়ের নীচে জখম নিয়ে তাকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করায় পুলিশ।