একুশে গ্রন্থমেলার পর্দা উঠছে রোববার

বিএনপি জোটের চলমান অবরোধের মধ্যে মাসব্যাপী অমর একুশে গ্রন্থমেলা শুরু হচ্ছে রোববার।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 31 Jan 2015, 07:01 PM
Updated : 1 Feb 2015, 02:24 AM

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বইমেলা উদ্বোধন করবেন।

একই সঙ্গে এবার প্রথমবারের মতো বাংলা একাডেমি আয়োজন করেছে আন্তর্জাতিক সাহিত্য সম্মেলন।

অমর একুশে গ্রন্থমেলা আয়োজনের শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি নিচ্ছে বাংলা একাডেমি।

রোববার এ বিষয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মোট ৩৫১টি প্রতিষ্ঠানকে ৫৬৫টি স্টল বরাদ্দ করা হয়েছে। এর মধ্যে একাডেমি প্রাঙ্গণে ৯২টি প্রতিষ্ঠানকে ১২৮টি এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ২৫৯টি প্রতিষ্ঠানকে ৪৩৭টি স্টল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। বাংলা একাডেমিসহ মোট ১১টি প্রতিষ্ঠানকে ৪০০ বর্গফুটের প্যাভিলিয়ন দেওয়া হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান বলেন,  “দেশে যে অস্বাস্থ্যকর পরিস্থিতি চলছে তারপরও আমার ধারণা বইমেলায় কোন বিঘ্ন ঘটবে না। কারণ আমাদের সবারই বইয়ের প্রতি ভালোবাসা রয়েছে। নিরপত্তা সংস্থাগুলো জানিয়েছে এবার বইমেলায় চারস্তরের নিরাপত্তা থাকবে।”

বাংলা একাডেমির আব্দুল করিম সাহিত্য বিশারদ মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন, বইমেলার সহ-পৃষ্ঠপোষক টেলিটকের মহাব্যবস্থাপক (বিক্রয় ও বিপণন) মো. শাহ আলম, সংস্কৃতি সচিব রণজিত কুমার বিশ্বাস।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, মেলার সার্বিক নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবে, পুলিশ, র্যা ব, আনসার, বিজিবি ও গোয়েন্দাসংস্থাগুলো, মেলা প্রাঙ্গণে ৭৫টি ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা থাকবে।

সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের স্বাধীনতা স্তম্ভ ও এর পাশের লেককে মেলার সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে।

আন্তর্জাতিক সাহিত্য সম্মেলন প্রসঙ্গে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, এবারই প্রথম বাংলা একাডেমি এ ধরনের আয়োজন করছে। একাডেমির ৬০ বছর পূর্তি উপলক্ষে এ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে। আগামীতে প্রতি দুই বছর অন্তর এ আয়োজন করার জন্য সরকারের কাছে আবেদন করবে একাডেমি।

সাহিত্য সম্মেলনে ১২টি দেশের ৪৮ জন সাহিত্যিক অংশ নেবেন।

মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জার্মান সাহিত্যিক হান্স হার্ডার, ফরাসি লেখক ফ্রাঁস ভট্টাচার্য, বেলজিয়ামের ফাদা দায়িতেন এবং ভারতের রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য পবিত্র সরকার বক্তব্য রাখবেন।

এছাড়া মেলায় প্রয়াত ১৩ জন বিশিষ্ট ব্যক্তির স্মরণে স্মৃতি-স্মারক স্থাপন করা হবে বলেও জানানো হয়।

তারা হলেন- কবি আবুল হোসেন, দার্শনিক সরদার ফজলুল করিম, বিচারপতি মুহাম্মদ হাবিরুর রহমান, ইতিহাসবিদ সালাহউদ্দীন আহমদ, চিত্রশিল্পী কাইয়ুম চৌধুরী, শিক্ষাবিদ জিল্লুর রহমান সিদ্দিকী, সংগীত শিল্পী ফিরোজা বেগম, ভাষা সংগ্রামী আবদুল মতিন, জাতীয় স্মৃতি সৌধের স্থপতি সৈয়দ মইনুল হোসেন, সাংবাদিক এ বি এম মূসা, শিশু সাহিত্যিক এখলাসউদ্দিন আহমদ, মুক্তিযুদ্ধে প্রেরণাদায়ী গানের রচয়িতা গোবিন্দ হালদার, জিনবিজ্ঞানী মাকসুদুল আলম।

বাংলা একাডেমির সচিব আলতাফ হোসেন সংবাদ সম্মেলনে জানান, এবারের মেলায় একাডেমি ১ কোটি ২০ লাখ টাকা অর্থ বরাদ্দ করেছে। এর বাইরে পৃষ্ঠপোষক টেলিটক ৬০-৭০ লাখ টাকা খরচ করবে।

সাহিত্য সম্মেলনে ২৫-৩৫ লাখ টাকা খরচ হবে বলেও জানান তিনি।

বই মেলা প্রতিদিনি বিকাল ৩টা থেকে রাত ৯টা, ছুটির দিন ১১টা থেকে রাত ৯টা এবং ২১ ফেব্রুয়ারি সকাল ৮টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত চলবে।

এছাড়া চারদির শিশুপ্রহর ঘোষণা করা হবে। নজরুল মঞ্চ ঘিরে নির্মিত শিশুকর্নারে থাককে শিশু-কিশোর বিষয়ক প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানের স্টল।

এবারের বই মেলায় বাংলা একাডেমি থেকে প্রকাশিত ১০০টির বেশি নতুন বই পাওয়া যাবে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।