ক্ষুদে বিজ্ঞানীদের ভাবনায় ‘বোমা থেকে বাঁচার উপায়’

রাজনৈতিক অস্থিরতা ও নাশকতা যে কিশোর মনেও বড় ধরনের প্রভাব ফেলছে, তার নজির মিলল ফিজিক্স অলিম্পিয়াডের পঞ্চম আসরে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 Jan 2015, 10:47 AM
Updated : 30 Jan 2015, 12:18 PM

পেট্রোল বোমা থেকে বাঁচার উপায়, রেলের নিরাপত্তাসহ নিত্যনতুন সব ধারণা নিয়ে শুক্রবার এই ক্ষুদে বিজ্ঞানীরা হাজির হয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হল চত্বরে।

‘পঞ্চম ডাচ-বাংলা ব্যাংক বাংলাদেশ ফিজিক্স অলিম্পিয়াড’ আয়োজক কর্তৃপক্ষ এই প্রদর্শনীর নাম দিয়েছে ‘টেকনোলোজি ফেয়ার’। আর বিকাল ৩টা থেকে শুরু হয় আড়াই ঘণ্টার লিখিত পরীক্ষা, যাতে অংশ নেন সারা দেশ থেকে আসা ৭২০ জন শিক্ষার্থী।

এই পরীক্ষা কমিটির সদস্য তমাল হোসেন জানান, সপ্তম-অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা গ্রুপ ‘এ’, নবম-দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা গ্রুপ ‘বি’ এবং একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীরা ‘সি’ গ্রুপে ফিজিক্স অলিম্পিয়াডে অংশ নিচ্ছে।

শনিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে এক অনুষ্ঠানে প্রতি গ্রুপের বিজয়ীদের হাতে তুলে দেওয়া হবে পুরস্কার।

বাংলাদেশ ইঞ্জিনিয়ারিং স্টুডেন্ট অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ অটোমিক এনার্জি সোসাইটি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়ো মেডিকেল ফিজিক্স অ্যান্ড টেকনোলজি বিভাগ এবং ঢাকার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা এবারের আয়োজনে তাদের উদ্ভাবন ও ধারণাগুলো প্রদর্শন করেন।

বাংলাদেশ ব্যাংক উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রাহিদ ইকরাম ও এবাদুল্লা রূপম নিয়ে এসেছেন পেট্রোল বোমা থেকে গাড়ি ও যাত্রীদের রক্ষার উপায়।

এই ধারণার ব্যাখ্যা করে রাহিদ বলেন, গাড়ির চারপাশে একটি টিউবের মধ্যে আগুন প্রতিরোধক গ্যাস ও ড্রাই পাউডার ব্যবহার করা হবে। পেট্রোল বোমায় গাড়িতে আগুন ধরলে ওই টিউব গলে যাবে এবং গ্যাস বের হয়ে আগুন নিভে যাবে।

একইভাবে যাত্রীদের নিরাপত্তায় আসনের পাশে একই ধরনের টিউব রাখার কথা বলছেন এই দুই শিক্ষার্থী। কীভাবে গাড়িতে ওই টিউব যুক্ত করতে হবে তা খেলনা গাড়ির মডেল বানিয়ে প্রদর্শনীতে হাজির করেছেন তারা।

গত ৫ জানুয়ারি থেকে বিএনপি জোটের লাগাতার অবরোধের মধ্যে পেট্রোল বোমা ছুড়ে যানবাহনে আগুন দেওয়ার পাশাপাশি ফিসপ্লেট তুলে ফেলে রেলেও নাশকতা ঘটানো হয়েছে।  

রেলওয়ের নিরাপত্তা নিয়ে প্রদর্শনীতে এসেছে দুটি ধারণা। শিক্ষার্থীরা বলছেন, প্রতিটি রেল স্টেশনে সোলার প্যানেল বসানো হবে, যা থেকে ২০ ভোল্ট বিদ্যুৎ সঞ্চালিত হবে রেল লাইনে।

এই বিদ্যুতে কেউ তড়িতাহত হবেন না, কিন্তু কোথাও পাত খুলে ফেলা হলে তা সহজেই বোঝা যাবে। ফলে দুর্ঘটনাও ঠেকানো যাবে।

বিদ্যুতায়িত লাইনে চাকার ঘর্ষণের ফলে যাতে ঝামেলা না হয় সেজন্য চাকায় আলাদা একটি ‘ডিভাইস’ যুক্ত করার ধারণা নিয়ে এসেছেন তারা।  

এছাড়া পানি বিশুদ্ধকরণ, অতিরিক্ত ঘাম প্রতিরোধ যন্ত্র, ৫০০ টাকায় ইসিজি যন্ত্র, কম খরচে গাড়ি চলাচল, তারবিহীন বিদ্যুৎ সংযোগসহ ৩০টি উদ্ধাবন ও ধারণা এসেছে এবারের টেকনোলজি ফেয়ারে।

অংশগ্রহণকারীরা ছাড়াও বিভিন্ন স্কুল কলেজের শিক্ষর্থীরা এই প্রদর্শনী ঘুরে দেখেন।