শাবিতে ‘নিপীড়ক’ শিক্ষককে সুবিধাসহ ছুটিতে ক্ষোভ

সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রীকে যৌন হয়রানির জন্য এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী ব্যবস্থা না হওয়ায় ক্ষোভ জানিয়েছে 'যৌন হয়রানি ও নিপীড়ন নিরোধ কেন্দ্র’র আহ্বায়ক।

শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 Jan 2015, 08:45 AM
Updated : 30 Jan 2015, 08:48 AM

বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক নাছির উদ্দিনের বিরুদ্ধে বিভাগের এক ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ তদন্ত করে সাত মাস আগে প্রতিবেদন দেয় কমিটি, যাতে শাস্তির সুপারিশ করা হয়।

এতোদিনেও ওই সুপারিশ বাস্তবায়ন হয়নি; মঙ্গলবার ওই শিক্ষককে সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা দিয়ে দুই বছরের শিক্ষাছুটি দিয়েছে প্রশাসন।

এতে ক্ষুব্ধ হয়ে 'যৌন হয়রানি ও নিপীড়ন নিরোধ কেন্দ্র’র আহ্বায়ক অধ্যাপক ইয়াসমিন হক বলেন, “তদন্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে ব্যবস্থা না নেয়ার কারণ অনুসন্ধান করা হলে অভিযুক্ত শিক্ষক আইনি প্রক্রিয়ায় সেটি স্থগিত করে রেখেছেন বলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়।

“আইনি প্রক্রিয়ার অজুহাতে তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ এবং বাস্তবায়ন বন্ধ করে রাখা হলেও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সম্প্রতি এই অভিযুক্ত শিক্ষকের শিক্ষা ছুটির আবেদন বিবেচনা করে তাকে সবেতনে দুই বছরের শিক্ষা ছুটি মঞ্জুর করেছে।”

বৃহস্পতিবার রাতে গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ইয়াসমিন হক বলেন, শিক্ষা ছুটি একজন শিক্ষকের অধিকার নয়, সেটি তার একটি সুবিধা।

“কাজেই যৌন হয়রানি ও নিপীড়ন নিরোধ কেন্দ্রের আহ্বায়ক হিসেবে একজন অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে যথাযথ ব্যবস্থা না নেওয়া পর্যন্ত শিক্ষা ছুটির আবেদন প্রক্রিয়াকরণ না করার অনুরোধ করেছিলাম।

“বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অনুরোধটি রক্ষা না করে এবং যৌন হয়রানির দায়ে অভিযুক্ত একজন শিক্ষককে বিচারের সম্মুখীন না করেই দেশত্যাগের সুযোগ করে দিয়েছে।”

এ কারণে ঘটনাটির দিকে সবার দৃষ্টি ফেরাতে বিষয়টি সংবাদ মাধ্যমের নজরে আনতে ‘বাধ্য’ হয়েছেন বলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করেন অধ্যাপক ইয়াসমিন হক।

তিনি বলেন, “বাংলাদেশের সব বিশ্ববিদ্যালয় এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অসংখ্য ছাত্রী নানা ধরনের যৌন নিপীড়নের শিকার হয়।”

মেয়েদের যৌন হয়রানি ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে সব মানবাধিকার ও নারী অধিকার সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের সহায়তাও প্রত্যাশা করেন অধ্যাপক ইয়াসমিন।

সহকারী অধ্যাপক নাছিরের বিরুদ্ধে বিভাগের ছাত্রীকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ ওঠে গত বছর। এ নিয়ে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে বিভাগীয় দুটি তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে অভিযোগ প্রমাণিত হলেও তাকে প্রথমে বিভাগের সব ধরনের অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম থেকে এক বছরের জন্য অব্যাহতির সিদ্ধান্ত হয়।

এ সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়ে শিক্ষার্থীরা আবারও আন্দোলন করলে বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন হয়রানি ও নিপীড়ন নিরোধ কেন্দ্রের আহ্বায়ক অধ্যাপক ইয়াসমিন হককে প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটি করে প্রশাসন।

তদন্ত কাজ শেষ করে গত বছরের ২৪ জুন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন দেয় নিরোধ কেন্দ্র।