আদালতের নির্দেশে বৃহস্পতিবার ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে লাশ তোলা হয়। পরে অ্যাম্বুলেন্সে লাশ লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার পশ্চিম লতিফপুর গ্রামের বাড়ি নিয়ে যাওয়া হয়।
জিসান পশ্চিম লতিফপুর গ্রামের মৃত আবু বক্করের ছেলে। তিনি লক্ষ্মীপুর জেলা ছাত্রদলের সাবেক পাঠাগার সম্পাদক ছিলেন।
দুপুর আড়াইটায় পশ্চিম লতিফপুর গ্রামে নিজর বাড়ির মসজিদের পাশে কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
গত বৃহস্পতিবার (২২ জানুয়ারি) গভীর রাতে কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার পুটিয়ায় র্যাবের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন লক্ষ্মীপুরের জিসান বাহিনীর প্রধান সোলাইমান উদ্দিন জিসান।
পরে র্যাব তার লাশ দাউদকান্দি থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে এবং পরদিন পুলিশ ময়নাতদন্ত শেষে বেওয়ারিশ হিসেবে লাশটি দাফনের জন্য কুমিল্লাস্থ আঞ্জুমানে মফিদুল ইসলামে হস্তান্তর করে।
কুমিল্লা জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. শামীম হোসেন জানান, জিসানের মা ফাতেমা বেগম তার ছেলের লাশ বেওয়ারিশ নয় উল্লেখ করে টিক্কারচর কবরস্থান থেকে লাশটি উত্তোলন করে তার নিজ বাড়ি লক্ষ্মীপুরের পারিবারিক কবরস্থানে দাফনের অনুমতি চেয়ে গত মঙ্গলবার (২৭ জানুয়ারি) কুমিল্লার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম নাসরিন জাহানের আদালতে আবেদন করেন।
আবেদনের শুনানি শেষে আদালত আঞ্জুমানে মফিদুল ইসলামের মাধ্যমে লাশ উত্তোলন করে তার মায়ের কাচে হস্তান্তর করতে জেলা প্রশাসনকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেয়।
বৃহস্পতিবার তার (নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. শামীম হোসেন) উপস্থিতিতে টিক্কারচর কবরস্থান থেকে জিসানের লাশ তুলে তার মায়ের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
এ সময় জিসানের একমাত্র মেয়ে ফারিয়া আক্তার মেহেরীন (৯), জেঠাত ভাই নজরুল ইসলামসহ স্বজনরা উপস্থিত ছিলেন।
আঞ্জুমানে মুফিদুল ইসলাম কুমিল্লার সভাপতি খোরশেদ আলম জানান, প্রশাসনের পক্ষ থেকে অনুমতি পেয়ে তারা জিসানের লাশ দাফন করেছিলেন। আবার প্রশাসনের অনুমতি পেয়ে ফেরত দেন।
দাউদকান্দি থানার এসআই এনামুল হক জানান, জিসান নিহত হওয়ার পর কোনো অভিভাবক না পাওয়ায় লাশ ময়নাতদন্ত শেষে বেওয়ারিশ হিসেবে দাফন করা হয়।
এ বিষয়ে ম্যাজিস্ট্রেট শামীম হোসেন জানান, কোনো নিহত ব্যক্তির পরিচয় একদিনের মধ্যে পাওয়া না গেলে লাশ বেওয়ারিশ হিসেবে দাফন করা হয়। জিসানের পরিবারের ইচ্ছাতে আবার লাশ তার মাকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।
নিহত জিসানের মা ফাতেমা বেগমের অভিযোগ, জিসান ছাত্রদলের রাজনীতি করতেন। রাজনৈতিক কারণে তার বিরুদ্ধে ৪৪টি মামলা করা হয়।
র্যাব তাকে ধরে নিয়ে গুলি করে মেরে ফেলে বলে দাবি তার।
ফাতেমা বেগম আরও বলেন, জিসানের নিহতের ঘটনা শুনে পারিবারিকভাবে এবং জিসানের পূর্ব ইচ্ছানুযায়ী মসজিদের পাশে তার লাশ দাফনের জন্য একটি কবর খোঁড়া হয়। পরদিন খবর আসে আসে জিসানের লাশ কুমিল্লার টিক্কারচর কবরস্থানে বেওয়ারিশ হিসেবে দাফন করা হয়েছে।