ছয় মাসে ২১ অগাস্ট মামলা নিষ্পত্তির আশা আইনমন্ত্রীর

আগামী ছয় মাস বা তার চেয়েও কম সময়ের মধ্যে আলোচিত ২১ অগাস্ট গ্রেনেড মামলার নিষ্পত্তি হতে পারে বলে সংসদীয় কমিটিকে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 Jan 2015, 02:21 PM
Updated : 28 Jan 2015, 05:32 PM

বুধবার জাতীয় সংসদ ভবনে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে মন্ত্রী এ তথ্য দেন।

বৈঠক শেষে কমিটির সভাপতি সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “মামলার যথেষ্ট অগ্রগতি হয়েছে। নিয়মিত কোর্ট বসছে। মন্ত্রী কমিটিকে জানিয়েছেন আগামী ৬ মাস বা তার চেয়ে কম সময়ে এই মামলার নিষ্পত্তি হতে পারে।”

আলোচিত এ মামলার অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে কমিটির বৈঠকে আলোচনা হয় বলে জানান সুরঞ্জিত।

২০০৪ সালে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার সমাবেশে গ্রেনেড হামলার ঘটনায় ২৪ জন নিহত হন। সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত নিজেও ওইদিন আহত হয়েছিলেন।

বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার আমলে এই ঘটনার তদন্ত ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা হয় বলে পরে তদন্তে বেরিয়ে আসে।

অধিকতর তদন্ত শেষে বিএনপি জ্যেষ্ঠ ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান, লুৎফুজ্জামান বাবর ও আলী আহসান মো. মুজাহিদসহ আরো ৩০ জনকে আসামি করে সম্পূরক অভিযোগপত্র দেন সিআইডির সুপার আব্দুল কাহহার আকন্দ।

২০১১ সালে তিনি অভিযোগপত্র দেওয়ার পর নতুন আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরু হয়।

এ মামলায় ‘পুনঃতদন্তের নামে’ সম্পূরক অভিযোগপত্রে  তারেক রহমানের নাম যুক্ত করতে মুফতি হান্নানের কাছ থেকে ‘জোর করে জবানবন্দি’ আদায় করা হয় বলে অভিযোগ রয়েছে বিএনপির।

সংসদীয় কমিটি এর আগেও এ মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির তাগিদ দিয়েছিল।

মামলা তদন্তের ক্ষমতা চায় মানবাধিকার কমিশন

সংসদীয় কমিটির বৈঠকে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সার্বিক কার্যক্রম নিয়েও আলোচনা হয়। কমিশনের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমানও বৈঠকে অংশ নেন।

বিভিন্ন মামলায় পুলিশের পাশাপশি কমিশনও তদন্তের ক্ষমতা চেয়েছে বলে সুরঞ্জিত জানান।

তিনি বলেন, “শুধুমাত্র রিপোর্ট দেওয়া নয়, বিভিন্ন মামলা তদন্তের ক্ষমতা চায় তারা। কমিটি তাতে রাজি হয়নি। আমরা বলেছি, আইন অনুযায়ী পুলিশ তদন্ত করবে। যদি কোনো মামলায় মানবাধিকার বিচ্যুতির ঘটনা ঘটে তবে সে বিষয়ে কমিশন তাদের রিপোর্ট দেবে।”

কমিশন তাদের ‘অর্থনৈতিক স্বাধীনতার’ দাবিও কমিটির কাছে তুলে ধরেছে বলে সুরঞ্জিত জানান।

“কমিটি নির্বাচন কমিশনসহ অন্যান্য সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের মতো মানবাধিকার কমিশনকেও আর্থিক স্বাধীনতা দেওয়ার সুপারিশ করেছে। এক্ষেত্রে থোক বরাদ্দ বা আলাদা বাজেটও করা যায়।”

সেই সঙ্গে কমিশনের জনবল ২০ জন থেকে বাড়িয়ে ৪০ জন করার সুপারিশ করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

“একইসঙ্গে অন্যান্য কমিশনসহ মানবাধিকার কমিশনের জন্য স্থায়ী ঠিকানার সুপারিশ করেছি। একটি বহুতল ভবন করে সেটাকে ‘কমিশন বিল্ডিং’ করার সুপারিশ করা হয়েছে।”

প্রত্যেক জেলায় মানবাধিকার কমিশনের কার্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবিও সংসদীয় কমিটির বৈঠকে তুলে ধরা হয়। কমিটি আপাতত বিভাগীয় পর্যায়ে প্রয়োজনীয় লোকবলসহ মানবাধিকার কমিশনের কার্যালয় প্রতিষ্ঠার সুপারিশ করেছে বলে সুরঞ্জিত জানান।

কমিটির সদস্য সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকু, জাতীয় পার্টির জিয়াউল হক মৃধা ও সফুরা বেগম সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।