সঙ্কটের সমাধান ঐকমত্যের সরকারে: এমাজউদ্দীন

বাংলাদেশের চলমান অবস্থাকে ‘রাজনৈতিক মহাসঙ্কট’ দাবি করে এথেকে উত্তরণে ‘জাতীয় ঐকমত্যের’ সরকার গঠনের প্রস্তাব রেখেছেন রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমদ।   

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 Jan 2015, 11:04 AM
Updated : 28 Jan 2015, 11:06 AM

নির্দলীয় সরকারের অধীনে মধ্যবর্তী নির্বাচনের দাবিতে বিএনপি জোটের টানা অবরোধের মধ্যে বুধবার ‘চলমান জাতীয় সঙ্কট : উত্তরণের পথ’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে প্রস্তাব তুলে ধরেন তিনি।

অবরোধে নাশকতার ঘটনাগুলো তুলে ধরে একে আন্দোলনের পরিবর্তে সন্ত্রাস বলে মনে করছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতারা।

বিএনপির আন্দোলনের যৌক্তিকতা নেই দাবি করে ‘সন্ত্রাস’ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী দিয়ে দমনের কথাও বলে আসছেন সরকারের মন্ত্রীরা।

দুই পক্ষের বিপরীত অবস্থানে চলমান পরিস্থিতিতে অর্থনীতিতে বিরূপ প্রভাবের কথা তুলে ধরে ব্যবসায়ীদের উদ্বেগের মধ্যে ‘ঐকমত্যের সরকারের’ প্রস্তাব দিলেন বিএনপি জোটের শীর্ষ পরামর্শকদের অন্যতম এমাজউদ্দীন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক এই উপাচার্য তার প্রস্তাবে বলেছেন, “জাতীয় ঐকমত্যের সরকারের প্রধান দায়িত্ব হবে নির্বাচন কমিশন, প্রশাসন এবং বিচার বিভাগসহ সকল সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের অর্থবহ সংস্কারের মাধ্যমে একটি অবাধ, নিরপেক্ষ এবং গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি করা।

“ঐকমত্যের সরকারের কাজ হবে প্রজাতন্ত্রের সব কর্মকাণ্ড যথাযথভাবে পরিচালনার লক্ষ্যে সবার অংশগ্রহণমূলক একটি নির্বাচন অনুষ্ঠান করা। সবার অংশগ্রহণমূলক একটি বিশ্বাসযোগ্য, স্বচ্ছ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনই জাতিকে বর্তমান মহাসঙ্কট থেকে উত্তরণে সহায়তা করতে পারে।”

অধ্যাপক এমাজউদ্দীন (ফাইল ছবি)

এই প্রস্তাবে সাড়া দিয়ে অধ্যাপক এমাজউদ্দীন দেশের সব শ্রেণির নাগরিক, সব পেশার মানুষ, শিক্ষার্থী ও অভিভাবক এবং রাজনৈতিক দল এবং সামাজিক শক্তিকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন।

বিএনপি সমর্থক পেশাজীবীদের নেতা অধ্যাপক এম এ মাজেদ, মোহাম্মদ আসাফ উদ্দৌলা, ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, অধ্যাপক আ ফ ম ইউসুফ হায়দার, শওকত মাহমুদ এই প্রস্তাবে সম্মত হয়েছেন বলে আয়োজকরা জানান।

সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি মিলনায়তনে ‘সুশীল সমাজ’ আয়োজিত অনুষ্ঠানে বিচারপতি আব্দুর রউফ, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি খন্দকার মাহবুব হোসেন, কলামনিস্ট ফরহাদ মজহার, সাংবাদিক নেতা রুহুল আমীন গাজী ও আব্দুল হাই সিকদার, অধ্যাপক সুকোমল বড়ুয়া উপস্থিত ছিলেন।

বিএনপির আহ্বানের প্রতিক্রিয়ায় আওয়ামী লীগ শুরু থেকে বলে আসছে, নির্দলীয় সরকারের অসাংবিধানিক দাবি তারা মেনে নেবে না। নিয়ম অনুযায়ী সরকারের মেয়াদ শেষে নির্বাচন হবে এবং তা নির্বাচিত সরকারের অধীনে।

আওয়ামী লীগ সরকারের গত আমলে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনে তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি বিলুপ্ত হওয়ার পর থেকে বিএনপি নির্দলীয় সরকার পুনঃপ্রতিষ্ঠায় আন্দোলনে রয়েছে।

নির্বাচিত অর্থাৎ আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের অধীনে হওয়ায় তারা দশম সংসদ নির্বাচন বয়কট করে। ওই নির্বাচনের এক বছর পর তারা দাবি আদায়ে লাগাতার অবরোধ ডেকেছে।