নির্ধারিত সময়েই এসএসসি পরীক্ষা: মন্ত্রী

বিএনপি জোটের লাগাতার অবরোধের কারণে শিক্ষার্থী-অভিভাবকদের উৎকণ্ঠার মধ্যেই শিক্ষামন্ত্রী জানালেন, এসএসসি পরীক্ষা নির্ধারিত সময়েই শুরু হবে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 Jan 2015, 06:40 AM
Updated : 28 Jan 2015, 05:51 PM

এসএসসি পরীক্ষা ‘সুষ্ঠু, নকলমুক্ত ও ইতিবাচক’ পরিবেশে সম্পন্ন করতে বুধবার সচিবালয়ে এক বৈঠকের পর সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, “হ্যাঁ, নির্ধারিত সময়েই পরীক্ষা হবে।”

আগামী ২ ফেব্রুয়ারি সারা দেশে একযোগে শুরু হচ্ছে এবারের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা, যাতে ১৪ লাখের বেশি শিক্ষার্থী অংশ নেবে।

গত ৫ জানুয়ারি থেকে সারা দেশে বিএনপি জোটের লাগাতার অবরোধে নাশকতা ও সহিংসতায় অন্তত ৩৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। এই রাজনৈতিক অস্থিরতা থামার কোনো আশা না দেখে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা পড়েছেন উৎকণ্ঠায়।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, “আমরা অনুরোধ জানাচ্ছি, আল্লাহর দোহাই, খোদার দোহাই, মানবতার দোহাই, তারা (বিএনপি) দয়া করে আমাদের ছেলে-মেয়েদের পরীক্ষা নিশ্চিন্তে দেওয়ার ব্যবস্থা করে দিন।”

বিএনপি-জামায়াতের হরতালের কারণে ২০১৩ সালে এসএসসির ৩৭টি বিষয় এবং এইচএসসির ৪১টি বিষয়ের পরীক্ষা পেছাতে বাধ্য হয়েছিল কর্তৃপক্ষ।

ওই বছরের জেএসসি-জেডিসির ১৭টি বিষয় এবং প্রাথমিক ও ইবতেদায়ী শিক্ষা সমাপনীর দুটি বিষয়ের পরীক্ষা হরতালের কারণে পিছিয়ে দেওয়া হয়।

এছাড়া গত বছরের শেষ দিকে জেএসসি-জেডিসি এবং প্রাথমিক ও ইবতেদায়ী পরীক্ষাও বিএনপির হরতালের কবলে পড়লে বেশ কয়েকটি পরীক্ষা পিছিয়ে যায়।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, অবরোধের মধ্যে এবারের পরীক্ষা নিয়ে পরীক্ষার্থী-অভিভাবকদের মতো তিনিও উদ্বিগ্ন।

“বাস্তবে অবরোধ-হরতাল হচ্ছে না, হরতাল-অবরোধের নামে মানুষ পোড়ান হচ্ছে।”

বিএনপির উদ্দেশে মন্ত্রী বলেন, “সকল দল-মত, সবার কাছে আহ্বান, দয়া করে পরীক্ষার আগে কর্মসূচি প্রত্যাহারের ঘোষণা দিন। ভীতি সৃষ্টিকারী, মানুষ হত্যাকারী কর্মসূচি বন্ধ করেন।”

এর কোনো বিকল্প ‘এই মুহূর্তে’ নেই জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, “একটাও বিকল্প নাই, কর্মসূচি বন্ধ করতেই হবে।

“তাদের মধ্যে ন্যূনতম মানবিক মূল্যবোধ চাপা পড়ে আছে, আশা করি তা জাগ্রত হবে এবং আমাদের ছেলে-মেয়েদের পরীক্ষা নিশ্চিন্তে দেওয়ার জন্য ব্যবস্থা করবেন।”

এবারের পরীক্ষার আগে সন্দেহভাজন ‘প্রশ্ন ফাঁসকারীদের’ নজরদারিতে রাখা হয়েছে বলেও শিক্ষামন্ত্রী জানান।

সেই সঙ্গে পরীক্ষার আগে ‘ফেইসবুকমুখী’ না হওয়ার জন্য শিক্ষার্থী-অভিভাবকের প্রতি আহ্বান জানান মন্ত্রী।

প্রশ্ন ফাঁসের কারণে গত বছর ঢাকা বোর্ডের এইচএসসির ইংরেজি দ্বিতীয় পত্রের পরীক্ষা স্থগিত করা হয়।

বিরোধী রাজনৈতিক দল ও শিক্ষাবিদরা প্রশ্নফাঁসের সমালোচনায় মুখর হলেও সে সময় সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়, প্রশ্ন ফাঁস নয়, সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে তুলে ধরা ‘সাজেশন’ কমন পড়ছে।

ফেইসবুকের যেসব পেইজে পরীক্ষার আগে এই ‘সাজেশন’ বা প্রশ্ন তুলে দেওয়া হয়, সেসব পৃষ্ঠা বন্ধে বিটিআরসিকে আরো সক্রিয় হতেও এর আগে আহ্বান জোনানো হয়েছিল।

বুধবারের সভায় পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ফেইসবুক, বিজি প্রেস এবং কোচিং সেন্টারগুলোকেও নজরদারি মধ্যে রাখা হয়েছে।

বিজি প্রেস যথা সময়ে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র সরবরাহ করতে পারেনি বলে কুমিল্লা বোর্ডের চেয়ারম্যান জানালে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, “আজ-কালের মধ্যে প্রশ্ন পৌঁছে যাবে।”

অন্যদের মধ্যে শিক্ষা সচিব নজরুল ইসলাম খান, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ফাহিমা খাতুন, বিভিন্ন শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান এবং আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতিনিধিরা এ সভায় উপস্থিত ছিলেন।