পেট্রোলবোমায় বাবা হারালেন বিএনপি নেতা

বিএনপির ডাকা অবরোধে পেট্রোল বোমা হামলায় মারা গেছেন এক বিএনপি নেতার বাবা।

বিজয় চক্রবর্তী কাজলনীলফামারী প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 Jan 2015, 03:30 PM
Updated : 27 Jan 2015, 03:30 PM

বাবাকে হারিয়ে নিজের দলীয় কর্মসূচির উপর বীতশ্রদ্ধ হয়ে পড়েছেন নীলফামারী সদরের লক্ষ্মীচাপ ইউনিয়নের জাতীয়তাবাদী মৎস্যজীবী দলের সভাপতি আব্দুল মতিন।

মতিন পেট্রোল বোমা হামলায় নিহত নীলফামারী জেলা সদরের লক্ষ্মীচাপ ইউনিয়নের সহদেব বড়গাছা বানিয়াপাড়া গ্রামের আব্দুল মালেকের (৫৫) মেজ ছেলে।

গত ২১ জানুয়ারি বিশ্ব ইজতেমা শেষে একটি ট্রাকে বাড়ি ফেরার পথে সন্ধ্যায় দিনাজপুরের কাহরোল উপজেলায় অবরোধকারীদের ছোড়া পেট্রোল বোমায় দগ্ধ হন আব্দুল মালেক।

ছয় দিন রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন থেকে গত সোমবার বেলা আড়াইটায় মারা যান তিনি।

গত ৫ জানুয়ারি অনির্দিষ্টকালের অবরোধ শুরু ঘোষণা দেন বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া।

এরপর বিএনপি-জামায়াত জোটের টানা অবরোধের সহিংসতায় অন্তত ৩৬ জনের মৃত্যু হয়েছে; এদের মধ্যে বেশিরভাগই গাড়িতে পেট্রোল বোমা হামলার কারণে অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা যান। পেট্রোল বোমায় পুড়ে আহত হয়েছেন আরো প্রায় দু’শতাধিক মানুষ।

বাবাকে হারানোর পর আব্দুল মতিন বলেন, “আমি আর বিএনপির রাজনীতি করব না, যে দল করি সেই দলের ডাকা অবরোধ আমার বাবার প্রাণ কেড়ে নিয়েছে।

এমন সহিংসতার রাজনীতি আমি চাই না। যারা এমন সহিংসতা করে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।”

নিহতের বড় মেয়ে মাজেদা খাতুন (২৮) বলেন, “আমার বাবাকে হারিয়েছি। আরও অনেকে বাবা, ভাই, বোন, সন্তান হারাচ্ছে, হারাবে। আমরা এমন রাজনীতি দেখতে চাই না।”

নিহত আব্দুল মালেকের স্ত্রী মমতা বেগম বলেন, “তিন ছেলে দুই মেয়ে নিয়ে সুখের সংসার ছিল আমাদের। হঠাৎ এমন মৃতুতে ভেঙে চুরমার হয়েছে সকল স্বপ্ন।”

তিনি জানান, সামান্য স্বর্ণকারের ব্যবসা আর আর তিন বিঘা জমি চাষাবাদ করে চলত তাদের সংসার।

বড় ছেলে মোত্তলেব ভাঙারি ব্যবসা করেন, ছোট ছেলে আব্দুল হাকিম (২০) নানা ধরনের মালের ব্যবসা করেন।

বিয়ে দিয়েছেন বড় মেয়ে মাজেদা খাতুনের। ছোট মেয়ে লিপি আক্তার গ্রামের একটি বেসরকারি স্কুলের সপ্তম শ্রেণিতে পড়ে।