মেট্রোরেল বিল পাস, বীমার আওতায় যাত্রীরা

মেট্রোরেল ও যাত্রীর বীমা বাধ্যতামূলক করে ‘মেট্রোরেল বিল-২০১৫’ সংসদে পাস হয়েছে। এ আইন ভাঙলে সর্বোচ্চ সাজা ১০ বছর এবং জরিমানা গুণতে হবে ১০ কোটি টাকা।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 Jan 2015, 02:27 PM
Updated : 29 Oct 2015, 09:57 AM

সোমবার বিলটি সংসদে পাসের প্রস্তাব করেন সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। পরে সেটি কণ্ঠভোটে পাস হয়।

গত ৩০ নভেম্বর বিলটি সংসদে আসে। পরে এটি পরীক্ষা করে সংসদে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়।

গত ১০ নভেম্বর বিলটি মন্ত্রিসভার অনুমোদন পায়।

বিলে বলা হয়, ঢাকা পিরবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ একটি কমিটির মাধ্যমে মেট্রোরেলের ভাড়া নির্ধারণ করবে। রেলের পরিদর্শকও তারা নিয়োগ দেবে।

বিনা টিকেটে চড়লে ভাড়ার ১০ গুণ জরিমানা, অনাদায়ে ছয় মাসের সাজার বিধান রাখা হয়েছে বিলে।

এছাড়া অনুমতি ছাড়া লাইসেন্স হস্তান্তর করলে ১০ বছর কারাদণ্ড ও এক কোটি টাকা জরিমানা, পরিচালনায় বাধা সৃষ্টি করলে দুই বছর জেল ও ২ লাখ টাকা জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে।

ভারতের মুম্বাইয়ে গত বছর যাত্রা শুরু করা মেট্রোরেল, ঢাকায়ও একই আদলেই তা হচ্ছে।

মেট্রোরেল নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করলে এক বছরের কারাদণ্ড ও ৫ লাখ টাকা জরিমানা, সংরক্ষিত স্থানে কেউ বিনা অনুমতিতে প্রবেশ করলে এক বছরের কারাদণ্ড ও ৫ লাখ টাকা জরিমানা, মেট্রোরেলের নিরাপত্তা বিঘ্নিত করলে ৫ বছরের কারাদণ্ড ও ৫০ লাখ টাকা জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে।

মেট্রোরেলের টিকেট জাল করলে ১০ বছর কারাদণ্ড এবং এক কোটি টাকা জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে।

কারিগরি মান অনুসরণ না করে মেট্রোরেল নির্মাণ ও রোলিং স্টক স্থাপন, পরিচালনা, রক্ষাবেক্ষণ এবং নিরাপত্তার ব্যবস্থাপনা সম্পাদনা করলে পাঁচ বছরের বা অনধিক ৫০ লাখ টাকা অর্থদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে।

এ প্রকল্পের আওতায় ভূমি অধিগ্রহণের জন্য বিলে ‘বিশেষ বিধান’ রাখা হয়েছে।

বিলে বলা হয়েছে, মেট্রোরেল নির্মাণ বা পরিচালনা বা রক্ষণাবেক্ষণ ও নিয়ন্ত্রণ বা এ সংশ্লিষ্ট কাজে অধিগ্রহণ করা বা অধিগ্রহণ হতে পারে এমন জমির ওপর ‘জনস্বার্থ বিরোধী’ উদ্দেশ্যে নির্মিত বা নির্মাণাধীন ঘর-বাড়ি বা অন্য কোনও প্রকার স্থাপনার জন্য কোনও ব্যক্তি ক্ষতিপূরণ পাবে না।

বিলে উল্লেখ করা অপরাধগুলো মোবাইল কোর্টের আওতায় বিচার করা বিধান রাখা হয়েছে।

২০১২ সালে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটিতে (একনেক) মেট্রোরেল প্রকল্প অনুমোদন হয়।

বাস্তবায়নাধীন মেট্রোরেল লাইন-৬ এর আওতায় উত্তরা থেকে শুরু হয়ে মিরপুর-ফার্মগেইট হয়ে মতিঝিল পর্যন্ত যাবে এই মেট্রো রেল। সময় লাগবে ৪০ মিনিটেরও কম।

এ প্রকল্পের ১৬টি স্টেশন থাকবে উত্তরা (উত্তর), উত্তরা (সেন্টার), উত্তরা (দক্ষিণ), পল্লবী,মিরপুর-১১, মিরপুর-১০ নম্বর, কাজীপাড়া, তালতলা, আগারগাঁও, বিজয় সরণি. ফার্মগেট, সোনারগাঁও, জাতীয় জাদুঘর, দোয়েল চত্বর, জাতীয় স্টেডিয়াম ও বাংলাদেশ ব্যাংক মোড়ে।

সরকার বলছে, প্রতি চার মিনিট পরপর ১ হাজার ৮০০ যাত্রী নিয়ে ছুটে চলবে মেট্রোরেল, ঘণ্টায় চলাচল করবে প্রায় ৬০ হাজার যাত্রী।

মেট্রোরেল প্রকল্প বাস্তবায়নে প্রায় ২২ হাজার কোটি টাকা লাগবে, যার ১৬ হাজার ৫৯৫ কোটি টাকা দিচ্ছে জাইকা। বাকি ৫ হাজার ৩৯০ কোটি টাকার যোগান দেবে সরকার।

আগামী ২০১৯ সালের মধ্যে উত্তরা তৃতীয় প্রকল্প থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত বাণিজ্যিকভাবে মেট্রোরেল চালুর পরিকল্পনার কথা ইতোমধ্যে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। সরকার আশা করছে, রাজধানীর যানজট নিরসন ও পরিবহন সমস্যার সমাধানে এ প্রকল্প বড় ভূমিকা রাখবে।