রাজশাহীতে পুলিশকে লক্ষ্য করে বোমা, গাড়ি ভাংচুর

বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনার মধ্যে সারাদেশে ২০ দলীয় জোটের ডাকা হরতাল পালিত হলেও রাজশাহীতে হরতাল সমর্থকদের সামলাতে ব্যস্ত থাকতে হয়েছে পুলিশকে।

রাজশাহী প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 Dec 2014, 08:50 AM
Updated : 29 Dec 2014, 08:52 AM

পুলিশের গাড়িতে হরতাল সমর্থকদের হামলা, ভাংচুর করা ছাড়াও ইসলামী ছাত্রশিবিরের কর্মীরা পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়েছে। পুলিশকে লক্ষ্য করে বোমা ছোড়া ঘটনাও ঘটেছে।

এছাড়া নগরীর রেলগেট, দড়িখড়না ও হোসনেগঞ্জ মোড়ে অটোরিকশা ভাংচুর করেছে হরতাল সমর্থকরা। রেলগেট মোড়ে একটি হাতবোমার বিস্ফোরণও ঘটে।

বোয়ালিয়া থানার ওসি খন্দকার নুর হোসেন জানান, সকাল সাড়ে ৯টার দিকে শালবাগান পেট্রোল পাম্পের সামনে রাখা নগর পুলিশের সহকারী কমিশনারের (এসি) গাড়ি ভাংচুর হয়।

“হঠাৎ করেই হরতাল সমর্থকরা পেট্রোল পাম্পের পাশের গলি থেকে বেরিয়ে ঢিল ছুড়ে গাড়িটির কাঁচ ভেঙে পালিয়ে যায়।” ওসি বলেন, বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ছাত্রশিবির কর্মীরা নগরীর ফায়ার সার্ভিস মোড়ে রাস্তায় পেট্রোল ঢেলে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করে। সেখান থেকে তারা মিছিল নিয়ে বরেন্দ্র জাদুঘর মোড়ে যাওয়ার সময় মিছিলের পেছনে থাকা পুলিশের গাড়ি লক্ষ্য করে ঢিল ছোড়ে।

এসময় পুলিশের সঙ্গে শিবিরকর্মীদের সংঘর্ষ ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়। শিবিরকর্মীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে একটি হাতবোমার বিস্ফোরণ ঘটায়। পুলিশ রাউন্ড রবার বুলেট ছোড়ে শিবিরকর্মীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।

রাজশাহী র‌্যাবের সহকারী পরিচালক এএসপি মীর্জা গোলাম সারোয়ার জানান, হরতাল শুরুর প্রথম প্রহরে নগরীর মিজানের মোড় থেকে সাতটি পেট্রোল বোমাসহ দুই যুবককে গ্রেপ্তার করেন তারা।

হরতালে নাশকতা চালানোর জন্য পেট্রোল বোমাগুলো নেওয়া হচ্ছিল বলে দাবি করেন তিনি।

এর আগে মেহেরচণ্ডি থেকে একটি ওয়ান শুটারগান ও ৯টি ধারালো অস্ত্র পরিত্যক্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানান র‌্যাব কর্মকর্তা সারোয়ার।

বিএনপি জোটের হরতালে সোমবার রাজশাহীর বরেন্দ্র জাদুঘর মোড়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে লক্ষ্য করে ছোড়া পিকেটারদের ইট।

এছাড়া রোববার রাত থেকে সকাল পর্যন্ত নগরীর বিভিন্ন স্থান থেকে বিএনপি ও জামায়াত-শিবিরের ৩৪ কর্মীকে আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের সহকারী কমিশনার (এসি) ইফতেখার আলম।

এদিকে সকাল ৭টার দিকে হরতালের সমর্থনে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও মহানগর সভাপতি মিজানুর রহমান মিনুর নেতৃত্বে কাদিরগঞ্জ মোড় থেকে মিছিল বের করা হয়। মিছিলে সিটি মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল ও মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শফিকুল হক মিলনও ছিলেন। পরে বিএনপির নেতারা দলীয় কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেন।

এছাড়া জামায়াতে ইসলামীও হরতালের সমর্থনে কোর্ট স্টেশন এলাকায় মিছিল বের করলেও পুলিশ ধাওয়া করে তাদের সরিয়ে দেয়।

হরতাল সমর্থকদের পাশাপাশি রাজশাহীতে আওয়ামী লীগের হরতাল বিরোধিতা তৎপরতাও চোখে পড়েছে।

নগরীর রেলগেট মোড় থেকে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা ও মহানগর সভাপতি এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের নেতৃত্বে হরতালবিরোধী মিছিল বের করা হয়।

দলীয় কার্যালয়মুখী এই মিছিলে মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার, আওয়ামী লীগ নেতা মাহফুজুল আলম লোটন, মহানগর যুবলীগ সভাপতি রমজান আলীও ছিলেন।