‘জিহাদকে না পেলে বিপদ ছিল’

উদ্ধার তৎপরতার প্রায় ছয় ঘণ্টা পর্যন্ত সাড়া দিয়েছিল শিশু জিহাদ। কথা বলেছে বেশ কয়বার, চারবার টেনে ধরেছিল রশি।

অপরাধ বিষয়ক প্রধান প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 Dec 2014, 02:36 PM
Updated : 27 Dec 2014, 05:13 PM

তবে শুক্রবার রাতে যারা এসব তথ্য দিয়েছিলেন এক পর্যায়ে তারাই আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েন ‘নানামুখী’ প্রশ্নবানে। তেমনই একজন রেলওয়ে কর্মচারী জাহিদ মিয়া।

শনিবার বিকালে জাহিদ মিয়া বলেন, “জিহাদের সঙ্গে কথা বলার শুরুতে তাকে জিজ্ঞেস করেছিলাম- ‘আঙ্কেল তুমি কি ঠিক আছ? উত্তরে ‘হু’ জবাব দেয় সে।”

“এরপরেই রাত প্রায় ১০টা পর্যন্ত অনেক কথা হয় জিহাদের সঙ্গে”।

গাড়ি চালক মো. সোহেলের সঙ্গে কথা বলেও মিলল প্রায় একই তথ্য। শনিবার বিকালে শাহজাহানপুরের রেল কলোনির পরিত্যক্ত ওই কূপের পাশে দাঁড়িয়ে তার সঙ্গে কথা হয়।

সোহেলের সঙ্গে কথা বলার প্রায় এক ঘণ্টা আগে জিহাদকে সেখান থেকে উদ্ধার করা হয়। সেই সঙ্গে ইতি ঘটে ২৩ ঘণ্টার রুদ্ধশ্বাস উদ্ধার তৎপরতা।

সোহেল বলেন, “আজ এই শিশুটি উদ্ধার না হলে আমরা দুই জনই বিপদে পরতাম। ভোরে যখন খবর প্রচার হল ওই কূপে বাচ্চা পাওয়ার ঘটনা গুজব। তখন থেকেই বিভিন্ন গোয়েন্দা, মিডিয়ার লোকজন আমাদের খোঁজ নেওয়া শুরু করে।”

উদ্ধার তৎপরতার শুরুর দিকের কথা তুলে ধরে রেল কর্মচারী জাহিদ বলেন, “আমরা চিকন নাইলনের রশি ফেলে বলি আঙ্কেল রশি পাও? জবাব আসে ‘না’। এরপর রশিটি তুলে একটা টর্চ লাইট লাগিয়ে আবার ফেলা হয়। আঙ্কেল আলো পাও? জবাব আসে ‘পাই’। রশি পাওয়া কথাও স্বীকার করে জিহাদ।

বের করে আনা হচ্ছে জিহাদকে। ছবি: আসিফ মাহমুদ অভি /বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম

“এরপর তাকে আলোটাই ধরতে বলা হলে সে ধরে। কিন্তু প্রায় ১০ ফুট উঠানোর পর হালকা হয়ে যায়।”

তিনি জানান, এরপর আবার মোটা রশিতে টর্চ লাইট লাগিয়ে কূপে ফেলা হয়। এবারও সে ধরে এবং কিছুক্ষণ পরে আবার ছেড়ে দেয়। প্রায় চারবার এভাবে চেষ্টার পর আইনশৃঙ্খলা ও দমকল বাহিনীর সদস্যরা তাদের সরিয়ে দেয়।

শুক্রবার জিহাদ ওই কূপে পড়ে যাওয়ার ২৩ ঘণ্টা পরেও তার অবস্থান নিশ্চিত হতে না পেরে শনিবার দুপুরে আড়াইটার দিকে উদ্ধার অভিযান স্থগিত করে ফায়ার সার্ভিস।

অবশ্য তার কয়েক মিনিটের মধ্যে স্থানীয়দের চেষ্টায় পাইপের ভেতর থেকে তুলে আনা হয় জিহাদকে। তাকে হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন।