পল্টনে এক বাড়িতে ৫ বস্তা টাকা, দেড় মন সোনা

রাজধানীর পুরানা পল্টনের একটি বাড়িতে দেশি-বিদেশি পাঁচ বস্তা টাকা এবং দেড় মন সোনা পাওয়া গেছে।

নিজস্ব প্রতিবেদকও সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 Dec 2014, 01:54 PM
Updated : 25 Dec 2014, 08:58 PM

বৃহস্পতিবার রাতে ২৯/১ পুরানা পল্টনের ওই বাড়ির সপ্তম তলায় মোহাম্মদ আলীর বাসায় অভিযান চালিয়ে তা জব্দ করে শুল্ক বিভাগ ও পুলিশের গোয়েন্দারা।

আলী সুইটসের মালিক মোহাম্মদ আলীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এই অর্থ ও সোনার উৎস সম্পর্কে তার কাছ থেকে সুস্পষ্ট তথ্য পাওয়া যায়নি।

আলীর বাড়িতে বিকাল ৫টা থেকে অভিযান চালিয়ে রাত সাড়ে ১০টায় মগবাজারে শুল্ক গোয়েন্দা সদর দপ্তরে এক সংবাদ সম্মেলনে শুল্ক গোয়েন্দার মহাপরিচালক মইনুল খান বলেন, পাঁচ বস্তা দেশি-বিদেশি মুদ্রা এবং প্রতিটি ১০ তোলা ওজনের ৫২৮টি সোনার বার পাওয়া যায়।

৫২৮টি সোনার বারের ওজন দেড় মন, যার আনুমানিক বাজার মূল্য ৩০ কোটি টাকা। আর মুদ্রার মধ্যে অধিকাংশই বাংলাদেশি টাকা, এছাড়া রয়েছে সৌদি রিয়াল।

ওই বাসা থেকে জব্দ মুদ্রা রাতেই বিমানবন্দনে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরার (সিসি ক্যামেরায়) মধ্যে থেকে তা গণনা করা হবে বলে সাংবাদিকদের জানানো হয়েছে।

বস্তা থেকে টাকা বের করা হচ্ছে

আলীর ঘরের বিভিন্ন স্থানে তল্লাশি

“সেখানে শুল্ক গোয়েন্দা কর্মকর্তা ছাড়াও বিভিন্ন সংস্থার লোকজন উপস্থিত থাকবেন। প্রয়োজন মনে করলে আপনারাও (সাংবাদিক) যেতে পারেন,” বলেন মইনুল খান।

বিপুল পরিমাণ এই অর্থ ও সোনা মোহাম্মদ আলীর ঘরে খাটের নিচে বস্তায় লুকানো ছিল। ঠিকানা নামের ওই ভবনের দ্বাদশ তলায় আলীর ছেলের ফ্ল্যাট থেকেও কিছু মুদ্রা উদ্ধার হয় বলে শুল্ক গোয়েন্দা বিভাগের উপপরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান অভিযানের সময় সাংবাদিকদের জানান।

তিনি বলেন,  “বস্তার ভেতরে পাওয়া মুদ্রাগুলোর মধ্যে বেশির ভাগই বাংলাদেশি টাকা, আর বাকিগুলো সৌদি রিয়াল।”

আলীকে গ্রেপ্তার করা হলেও তার স্ত্রী ও ছেলেকে গ্রেপ্তার না করার বিষয়ে মোস্তাফিজ বলেন, “আলী টাকা ও মুদ্রাগুলো নিজের বলে দাবি করছেন। তবে জিজ্ঞাসাবাদে স্ত্রী ও সন্তান জড়িত প্রমাণ পাওয়া গেলে তাদেরকেও আইনের আওতায় আনা হবে।” 

গ্রেপ্তার ফ্ল্যাট মালিক মোহাম্মদ আলী

এই অর্থ ও সোনার বারের বিষয়ে আলী একেক সময় একেক কথা বলছে বলে জানান শুল্ক গোয়েন্দা বিভাগের এই কর্মকর্তা।

সোনার বারের বিষয়ে আলী দাবি করেন, এগুলো তিন/চার মাস আগে তার বন্ধু সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলা চেয়ারম্যান মোহাম্মদ রিয়াজ উদ্দিন তাকে রাখতে দিয়েছেন।

এই বিষয়ে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকের পক্ষ থেকে রিয়াজ উদ্দিনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি তা অস্বীকার করেন।

“আমি ওই ব্যক্তিকে চিনিও না, জানিও না। তিনি আমার সম্পর্কে যা বলেছেন, তা সম্পূর্ণ মিথ্যা,” বলেন সিরাজগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রিয়াজ, যিনি এবারই প্রথম উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন।

সোনার বার

শুল্ক গোয়েন্দা কর্মকর্তা মোস্তাফিজ বলেন, বিদেশ থেকে পাচারের সময় বিমান বন্দরে সচরাচর যেরকম সোনার বার পাওয়া যায়, আলীর বাসারগুলোও সেই রকমই।

“সোনার বারগুলো কালো কাপড়ের কাঁথার মধ্যে সেলাই করা পকেটে ভরে পেচিয়ে রাখা হয়েছিল।”

শুল্ক গোয়েন্দাদের ধারণা, এই সোনার বারগুলোও বিদেশ থেকে পাচার করা হয়েছে এবং এগুলো আলীরই।

অর্থের বিষয়ে আলী দাবি করেন, অ্যাপার্টমেন্ট তৈরির জন্য জমি বিক্রি করে তিনি সাড়ে চার কোটি টাকা ঘরে রেখেছিলেন।

“তাকে আরও জিজ্ঞাসাবাদ করতে হবে,” বলেন শুল্ক গোয়েন্দা কর্মকর্তা মোস্তাফিজ।