৯৮ শতাংশ পাঠ্যবই পৌঁছে গেছে উপজেলায়

নতুন বছর শুরুর এক সপ্তাহ আগেই বিনামূল্যে বিতরণের ৯৮ শতাংশ পাঠ্যবই উপজেলা পর্যায়ে পৌঁছে গেছে বলে জানিয়েছে পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 Dec 2014, 03:57 PM
Updated : 1 Jan 2015, 11:51 AM

আগামী দুই এক-দিনের মধ্যে অবশিষ্ট বইও পৌঁছে যাবে বলে এনসিটিবি চেয়ারম্যান মো. আবুল কাশেম মিয়া বুধবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানিয়েছেন।

২০১৫ শিক্ষাবর্ষের প্রাথমিক, নিম্ন মাধ্যমিক এবং মাধ্যমিক শ্রেণির ৪ কোটি ৪৪ লাখ শিক্ষার্থীর হাতে ৩২ কোটি ৬৩ লাখ ৪৭ হাজার বই বিনামূল্যে তুলে দেবে সরকার।

গত সাত বছর ধরে প্রতিবারই ১ জানুয়ারি নতুন বই শিশুদের হাতে তুলে দেওয়া হয়। দিনটি বই উৎসব হিসেবে উদযাপন করা হচ্ছে।

এবারও বিতরণের আগেই সব বই সারাদেশে পৌঁছে যাওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ।

তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, আগামী ৩০ ডিসেম্বর বিভিন্ন স্তরের শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দিয়ে উৎসবের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

আর ১ ডিসেম্বর রাজধানীর মতিঝিল সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষা এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় যৌথভাবে বই উৎসব উদযাপন করবে বলে জানান শিক্ষামন্ত্রী।

এনসিটিবি চেয়ারম্যান জানান, ২৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত মাধ্যমিকের সব বই উপজেলায় পৌঁছে গেছে। প্রাথমিক ও নিম্ন মাধ্যমিকের ৯৮ শতাংশ বই পাঠানো হয়েছে। অবশিষ্ট বইগুলো ২৫-২৬ ডিসেম্বরের মধ্যে পৌঁছে যাবে।

থানা শিক্ষা কর্মকর্তারা বইগুলো গ্রহণ করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিতরণের কাজ তদারকি করেন। চাহিদা অনুযায়ী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে বই সরবারহ করা হয় উপজেলা প্রশাসনের সহায়তায়।

পাঠ্যবই পাঠানোর এই ছবি সম্প্রতি তোলা

ধাপে ধাপে বই ছাপানো শেষ হওয়ার পর গত জুন মাস থেকেই উপজেলা পর্যায়ে বই পাঠানো শুরু হয়।

কিছু বইয়ের কাগজের নিম্নমান এবং উপজেলা পর্যায়ে বই পাঠানোর সময় কিছু সংখ্যক বই নষ্ট হয়ে যায় স্বীকার করেন আবুল কাশেম।

“কোটি কোটি বই নিয়ে কাজ করা হয়। সবাই তো আর একভাবে কাজ করেন না। তবে চাহিদার থেকে পাঁচ শতাংশ বেশি বই বাফার স্টকে (অতিরিক্ত বরাদ্দ) থাকায় কিছু বই ছিড়ে গেলেও সমস্যা হবে না।”

প্রাথমিকের বইয়ের কাগজ এনসিটিবি সরবরাহ করে না বলে জানান আবুল কাশেম। মাধ্যমিকের সুনির্দিষ্ট কিছু বইয়ের কাগজ তারা সরবরাহ করি। অন্য বইয়ের কাগজ এনসিটিবির নির্দেশনামতো মুদ্রণকারী প্রতিষ্ঠানগুলোই সরবরাহ করে।

“তবে যে কাগজে বই ছাপানো হয় তার মান, ছাপার মান, বাঁধাই, কাটিংসহ বইয়ের ভেতরের বিভিন্ন গেটআপ-মেইকআপ ঠিক আছে কি না এনসিটিবির ১০টি দল তা তদারকি করে,” বলেন আবুল কাশেম।

তদারকি দলের চোখে ভুল ধরা পড়লে ওই সব বই বাতিল করা হয় জানিয়ে তিনি বলেন, দুই শতাংশ বইয়ের বিভিন্ন ধরনের ভুল পাওয়া যায়, যা আবার নতুন করে ছাপতে হয়।

এছাড়া সরকারের এজেন্টের মাধ্যমেও বই ছাপানোর পুরো কাজ তদারকি করা হয় জানিয়ে এনসিটিবি চেয়ারম্যান বলেন, এই সংস্থা ও এনসিটিবির ছাড়পত্র পাওয়ার পরই বইগুলো উপজেলা পর্যায়ে বিতরণের অনুমতি দেওয়া হয়।

একটি ভারতীয় একটি প্রতিষ্ঠানসহ এবার বিনামূল্যের পাঠ্যবই মুদ্রণের কাজ পেয়েছে ২৩৮টি প্রতিষ্ঠান।

এর মধ্যে উন্মুক্ত দরপত্রে অংশ নিয়ে বাংলাদেশের সরকার গ্রুপ, প্রমা ও ব্রাইট প্রিন্টিং প্রেস (একই মালিকানাধীন) এবং আনন্দ ও এপ্রেক্স প্রিন্টার্স ১৩ কোটি বই ছাপা, বাঁধাই ও সরবরাহের কাজ পায়।

ভারতের প্রতিষ্ঠান থেকে ছাপানো হয় ১ কোটি ১৯ লাখ বই, যা ইতোমধ্যে বাংলাদেশে চলে এসেছে বলে জানান আবুল কাশেম।