দীর্ঘদিনের কর্মস্থলে সমাহিত বিজ্ঞানী মাকসুদুল

পাটের জিনোম সিকোয়েন্স উন্মোচনে নেতৃত্ব দেওয়া বাংলাদেশি বিজ্ঞানী মাকসুদুল আলম চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন তার দীর্ঘদিনের কর্মস্থল হাওয়াইয়ের হনলুলুর মাটিতে।

নিউইয়র্ক প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 Dec 2014, 10:57 AM
Updated : 24 Dec 2014, 10:57 AM

যুক্তরাষ্ট্রের এ দ্বীপ শহরের ম্যানোয়ায় ইউনিভার্সিটি অব হাওয়াইয়ে জানাজা শেষে স্থানীয় সময় সোমবার দুপুরে ক্যানেওহে মুসলিম গোরস্তানে তাকে দাফন করা হয়।

বাংলাদেশ সময় রোববার ভোরে যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়াইয়ের কুইন্স হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মাকসুদুলের মৃত্যু হয়। তার বয়স হয়েছিল ৬০ বছর।

মাকসুদুল লিভার সিরোসিসে ভুগছিলেন। শেষ দিকে লিভারের সঙ্গে তার ফুসফুসও ঠিকমতো কাজ করছিল না।

ইউনিভার্সিটি অব হাওয়াইয়ে মাকসুদুলের সহকর্মী ও প্রবাসী বাংলাদেশিরা তার জানাজায় অংশ নেন বলে হাওয়াইয়ে বাংলাদেশের অনরারি কনসাল জেনারেল জান রুমি জানান।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “হাওয়াই রাজ্যের রাজনীতিবিদ ও নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা বিজ্ঞানী মাকসুদুলের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। মরহুমের আত্মার শান্তি কামনায় তারাও এসেছিলেন।"

বাংলাদেশের ফরিদপুরের সন্তান মাকসুদুল আলম ইউনিভার্সিটি অব হাওয়াইয়ে ২০ বছর শিক্ষকতা করেছেন। শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী সেখানেই তাকে দাফন করা হয়েছে বলে জানান রুমি।

ইউনিভার্সিটি অব হাওয়াইয়ের অধীনে কলেজ অব ন্যাচারাল সায়েন্সেসে জিনোমিক্স, প্রোটিওমিক্স ও বায়োইনফরমেটিকস বিভাগের পরিচালক পদে কাজ করে আসছিলেন মাকসুদুল।

ক্ষতিকর ছত্রাকের ‘জীবনরহস্য’ উন্মোচন

বাংলাদেশের কৃষি মন্ত্রণালয়ের আর্থিক সহায়তায় ২০১০ সালে তরুণ একদল বিজ্ঞানীকে নিয়ে তোষা পাটের জিন নকশা উন্মোচন করে আলোচনায় আসেন এই প্রবাসী গবেষক। ওই বছর ১৬ জুন জাতীয় সংসদে দাঁড়িয়ে দেশবাসীকে সেই সুখবর জানান প্রধানমন্ত্রী। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমেও খবরটি গুরুত্ব পায়।

২০১২ সালে তারা মাকসুদুল ম্যাক্রোফমিনা ফাসিওলিনা নামের এক ছত্রাকের জিন-নকশা উন্মোচন করেন, যা পাটসহ প্রায় ৫০০ উদ্ভিদের স্বাভাবিক বিকাশে বাধা দেয়।

গত বছর ১৮ অগাস্ট মাকসুদুলকে পাশে নিয়ে বাংলাদেশের বিজ্ঞানীদের আরেকটি বড় সাফল্যের খর জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এবার আসে দেশি পাটের জিনোম সিকোয়েন্স উন্মোচনের খবর।

এর আগে ২০০৮ সালে হাওয়াই বিশ্ববিদ্যালয়ের হয়ে পেঁপে এবং মালয়েশিয়া সরকারের হয়ে রবার গাছের জিন-নকশা উন্মোচনেও নেতৃত্ব দেন বাংলাদেশের এই গবেষক।

পেঁপে নিয়ে তার কাজের খবর বিজ্ঞান সাময়িকী নেচারের প্রচ্ছদ প্রতিবেদন হয়। ওই প্রতিবেদনে মাকসুদুলকে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয় ‘বিশ্বের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উদ্ভাবক’ হিসাবে।