গোবিন্দ হালদারের পাশে রাষ্ট্রপতি

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে প্রেরণাদায়ী অনেক গানের স্রষ্টা গোবিন্দ হালদারকে হাসপাতালে দেখে এসেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।

সাজিদুল হক কলকাতা থেকেবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 Dec 2014, 06:42 PM
Updated : 22 Dec 2014, 06:42 PM

সোমবার রাত ১০টার দিকে কলকাতার মানিকতলায় জেএন রায় সেবা ভবনে যান রাষ্ট্রপতি। গীতিকার ও সুরকার গোবিন্দ হালদার এই হাসপাতালেই রয়েছেন এক মাসের বেশি সময় ধরে।

রাষ্ট্রপতি আইসিইউতে থাকা গোবিন্দ হালদারকে বলেন, “আপনি বাংলাদেশের অকৃত্রিম বন্ধু। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে আপনার বড় ভূমিকা ছিল। আপনার অনেক গান মুক্তিযোদ্ধাদের অনুপ্রাণিত করেছে।”

হাসপাতালে থাকা গোবিন্দ হালদারকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার টেলিফোন করা এবং তার চিকিৎসার দায়িত্ব নেওয়ার কথাও বলেন আবদুল হামিদ।

“আপনি মনোবল হারাবেন না। ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করি আপনি তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে উঠুন,” অসুস্থ শিল্পীকে বলেন রাষ্ট্রপতি।

ভারতে বাংলাদেশের হাইকমিশনার সৈয়দ মোয়াজ্জেম আলী, রাষ্ট্রপতির সামরিক সচিব মেজর জেনারেল আবুল হোসেন এবং গোবিন্দ হালদারের পরিবারের সদস্যরা এসময় উপস্থিত ছিলেন।

স্বাধীন বাংলা বেতারের গীতিকার ও সুরকার গোবিন্দ হালদার বার্ধক্যজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে গত ১৩ নভেম্বর হাসপাতালে ভর্তি হন বলে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানিয়েছেন তার মেয়ে গোপা হালদার।

গত শনিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ফোনে গোবিন্দ হালদারের চিকিৎসার খোঁজ খবর নিয়ে তার চিকিৎসাসহ সব ব্যয় বহনের কথা জানান।

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে স্বাধীন বাংলা বেতারে সম্প্রচারিত গোবিন্দ হালদারের অনেক গান মুক্তিযোদ্ধাদের অনুপ্রাণিত করত।

‘মোরা একটি ফুলকে বাঁচাবো বলে যুদ্ধ করি’-কালজয়ী এই গানের  স্রষ্টা গোবিন্দ হালদার। ‘এক সাগর রক্তের বিনিময়ে বাংলার স্বাধীনতা আনলে যারা’, ‘পূর্ব দিগন্তে সূর্য উঠেছে’, ‘পদ্মা মেঘনা যমুনা, তোমার আমার ঠিকানা’র মতো সাড়া জাগানো গানেরও রচয়িতা তিনি।    

গোবিন্দ হালদারকে দেখতে যাওয়ার আগে রাষ্ট্রপতি কলকাতার রাজভবনে পশ্চিমবাংলার রাজ্যপাল কেশরী নাথ ত্রিপাঠীর দেওয়া এক নৈশভোজে অংশ নেন।

রাষ্ট্রপতি রাজভবনে পৌঁছালে রাজ্যপাল তাকে স্বাগত জানান। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জিও নৈশভোজে ছিলেন।

রাষ্ট্রপতির প্রেসসচিব ইহসানুল করিম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, নৈশভোজে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে মমতা শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।

পশ্চিমবঙ্গের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, ব্রাত্য বসু, সুব্রত মুখার্জির পাশাপাশি ঢাকায় ভারতের হাইকমিশনার পঙ্কজ শরণও নৈশভোজে ছিলেন।

বাংলাদেশের হাইকমিশনার সৈয়দ মোয়াজ্জেম আলী, রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব শেখ আলতাফ আলীও নৈশভোজে অংশ নেন।

এর আগে দুপুরে রাষ্ট্রপতি এয়ার ইন্ডিয়ার একটি বিশেষ ফ্লাইটে জয়পুর থেকে কলকাতা পৌঁছান। মঙ্গলবার তার দেশে ফেরার কথা রয়েছে।

ভারতের রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জির আমন্ত্রণে ছয় দিনের সফরে গত ১৮ ডিসেম্বর নয়দিল্লি যান রাষ্ট্রপতি। সফরে ভারতের রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পাশাপাশি আজমির শরীফ জিয়ারত ও তাজমহল পরিদর্শন করেন আবদুল হামিদ।