এছাড়া অবৈধ রিকশার বিরুদ্ধেও অভিযান চালানো হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। জাতীয় সড়ক নিরাপত্তা কাউন্সিলের ২২তম সভাশেষে সভাপতির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, “ঢাকা শহরে পর্যায়ক্রমে ফুটপাত দখলমুক্ত করা হবে। এজন্য প্রথমে বিভিন্ন এলাকা চিহ্নিত করা হবে এবং পর্যায়ক্রমে সেগুলো দখলমুক্ত করা হবে।”
সিটি করপোরেশনের সঙ্গে সমন্বয় করে এ কাজ করা হবে বলে জানান মন্ত্রী।
রাজধানীর রমনা রেস্তোরাঁয় জাতীয় সড়ক নিরাপত্তা কাউন্সিলের ওই সভা অনুষ্ঠিত হয়।
ওবায়দুল কাদের বলেন, অবৈধ রিকশা প্রতিরোধে এক মাস সময় দিয়ে অভিযান চালানো হবে। এছাড়া সড়ক পরিবহন আইন যুগোপযোগী করার জন্য পরিবহন মালিক সমিতির সঙ্গে বসে আইন সংশোধন করা হবে।
ঢাকা মহানগর পুলিশ ও সিটি করপোরেশনের তথ্য অনুযায়ী, ঢাকায় প্রায় সোয়া দুই লাখ রিকশা চলাচল করছে, যার পৌনে দুই লাখেরই বৈধ নিবন্ধন নেই।
ঢাকা সিটি কর্পোরেশন কর্তৃপক্ষ সেই ঊনিশশ আশির দশক থেকে নতুন লাইসেন্স দেওয়া বন্ধ রেখেছে।
বাসযাত্রীদের সুবিধার্থে এবং যানজট কমাতে রাজধানীতে ২০টি বাস ‘বে’ নির্মাণ করার পরিকল্পনার কথাও জানান তিনি।
সভায় নৌমন্ত্রী শাজাহান খান বলেন, "দুর্ঘটনায় শুধু চালকদের দোষারোপ করলে হবে না। দুর্ঘটনা কমানোর জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে।
স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেন, "হাইওয়েতে আরও ৫০ হাজার পুলিশ নিয়োগ দেয়ার চিন্তা-ভাবনা রয়েছে সরকারের। এই সংখ্যক পুলিশ নিয়োগ দেয়া হলে হাইওয়ে ট্রাফিকিং-এ অনেক সুবিধা হবে।"
এলজিআরডি প্রতিমন্ত্রী মশিউর রহমান রাঙা বলেন, "সারা দেশে রোড ডি-ভাইডার দিলে দুর্ঘটনা অনেকাংশে কমে যাবে।"
বাংলাদেশের আরিচা সড়কে 'ডি-ভাইডার'-এর কারণে সড়ক দুর্ঘটনা অনেক কমে গেছে বলে দাবি করেন তিনি।
তিনি বলেন, "স্থানীয় সংসদ সদস্য ও উপজেলার চেয়ারম্যানদের সহযোগিতা পাওয়া না গেলে মহাসড়কে নসিমন ও করিমন বন্ধ করা সম্ভব নয়।"
সংসদ সদস্য তারানা হালিম বলেন, "মহাসড়কে হাইওয়ে পুলিশ আছে তা আমার জানা ছিল না। এখানে এসে জানতে পারলাম। তবে হাইওয়ে পুলিশকে আধুনিক যন্ত্রপাতি ও দ্রুতগতি সম্পন্ন গাড়ি দেওয়া উচিত।
"এ পর্যন্ত গঠিত দুর্ঘটনার তদন্ত প্রতিবেদনগুলো হাতে পেলে আমাদের জন্য সুবিধা হত। দুর্ঘটনার অনেক কারণ আমরা বের করতে পারতাম।"
কলামনিস্ট সৈয়দ আবুল মকসুদ বলেন, "বিভিন্ন সংস্থার লোকজন একে অপরের উপর দোষ চাপিয়ে দিচ্ছেন। মনে হয় একটি লড়াই। তবে আমি বলবো এ ধরনের সভা একটি ভাল উদ্যোগ। নাটোরের দুর্ঘটনার পর মন্ত্রী ঘটনাস্থলে গেছেন এটিও প্রশংসার দাবি রাখে।"
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার বেনজীর আহমেদ বলেন, "রাস্তা পারাপার হতে গিয়ে বেশি দুর্ঘটনা ঘটে।"
সিটি করপোরেশনের সহায়তা চেয়ে তিনি বলেন, "ফুটওভার ব্রিজগুলো কি ঠিক জায়গায আছে? এটা কাদের কাজ পুলিশের না সিটি করপোরেশনের? রাস্তার মধ্যে কোন 'রোড মার্কিং' নাই। সব জায়গায় 'নো পার্কিং', 'নো পার্কিং', তাহলে 'ইয়েস' পার্কিং কোথায়?
“ফুটপাত কোথাও তিন ফুট, আবার কোথাও এক ফুট। তাহলে মানুষ হাঁটবে কোথায়। সেখানে এক ফুট সেখানে তো মানুষ রাস্তা দিয়েই হাঁটবে।”
ফুটপাত দখলমুক্ত করার জন্য হলিডে মার্কেট বা নাইট মার্কেটের প্রস্তাব দেন কমিশনার।
মগবাজারের ফ্লাইওভারের কাজ কবে শেষ হবে প্রশ্ন রেখে বেনজীর বলেন, "নিচের সড়কটি ভাল হলেও যানজট অনেকাংশে কমে যেতো। বিছিন্নভাবে কাজ করে শুধু ট্রাফিক পুলিশকে গালিগালাজ দিয়ে লাভ হবে না।
"প্রত্যেক সংস্থার মধ্যে সমন্বয় করে কাজ করলে ট্রাফিক সমস্যা অনেকাংশে কমে যাবে।”